করোনাভাইরাস: জনসন সরকারের অবস্থান নিয়ে তদন্তের দাবি
যুক্তরাজ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণ মারাত্মক রূপ নেয়ায় মৃতুর মিছিলে যোগ হচ্ছে সারি সারি লাশ। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং চিকিৎসা নিতে তাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছিল। অবশ্য তিনি সুস্থ হয়ে সরকারি বাসভবনে ফিরে গেছেন। তবে তিনি সরকারি কাজে যোগ দিয়েছেন না সম্পূর্ণ বিশ্রামে আছেন সে ব্যাপারে কিছুই বলছে না ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট।
এদিকে জনসন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা দেশে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর প্রকৃত তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছে। যথেষ্ট টেস্টও করাতে পারেনি, এমনকি হাসপাতালগুলোতে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটেক্টিভ গিয়ার পর্যন্ত সরবরাহ করতে পারেনি।যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত দেশে চিকিৎসাকর্মীদের পলিথিন ব্যাগ পরে করোনা আক্রান্তদের সেবা দিতে হয়েছে। যে কারণে সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীদের সংক্রমিত হওয়ায় হারও অনেক বেশি। কয়েকজন মারাও গেছেন।
ইউরোপে বিশেষ করে ইতালি, স্পেন ও ফ্রান্সে যখন করোনাভাইরাস সংক্রমণ বিপজ্জনকভাবে ছড়িয়ে পড়ছিল এবং বিস্তার রোধে দেশগুলোর সরকার কড়াকড়ি আরোপ করছিল, তখনো জনসন দেশজুড়ে যাতায়াত ও জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিপক্ষে ছিলেন। পরে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯ এ যুক্তরাজ্যে তিন লাখের বেশি মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা প্রকাশ করলে জনসন লকডাউন ঘোষণা করেন।
সময়মত ‘ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ভেন্টিলেটর স্কিম’ এ যোগ দিতে এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য প্রয়েজনীয় সুরক্ষা যন্ত্রের যোগান দিতে ব্যর্থ হওয়ার দায় কাঁধে নিয়ে জনসন সরকার অবশ্য এর কারণ বোঝাতে জটিল একটি ব্যাখ্য দিয়েছে। তবে বিরোধী দলগুলো তাদের এই ব্যাখ্যা মানতে রাজি নয়।
বুধবার এক বিবৃতিতে লিবারেল ডেমোক্রেটিক দলের ভারপ্রাপ্ত নেতা ইডি ডেভি বলেন, বৈশ্বিক এই মহামারিতে সরকার যেভাবে সাড়া দিয়েছে অবশ্যই তার আনুষ্ঠানিক তদন্ত হওয়া উচিত।
কেন সরকার আশ্চর্যজনকভাবে স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা যন্ত্র দিতে ব্যর্থ হয়েছে এবং সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি, তার সত্যি কারণ জানাতে জনসন সরকারকে সুযোগ দেওয়া উচিত। দিন দিন সবার মনেই এই প্রশ্ন জাগছে।
বিরোধী লেবার পার্টির নেতা কির স্টারমারও মনে করেন, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সরকার পিছিয়ে ছিল এবং একই সঙ্গে যুক্তরাজ্যকে এই সংকটে পেছনের দিকে তাকিয়ে দেখতে হবে।