ভিয়েতনামে যে কৌশলে করোনায় মৃত্যু নেই!

0

উন্নয়নশীল দেশ ভিয়েতনামের বিশাল সীমান্তজুড়ে রয়েছে চীন। করোনার জন্মভূমি সেই চীন হলেও প্রায় দশকোটি জনসংখ্যা নিয়ে অনেকটাই নিরাপদে রয়েছে ভিয়েতনাম। দেশটিতে এ পর্যন্ত ২৬৮ জন করোনায় আক্রান্ত হলেও কোনো মৃত্যু নেই। এমনকি ইতিমধ্যে ১৪০ জন পুরোপুরি সুস্থও হয়ে উঠেছেন। করোনায় বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর সংখ্যা যখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, উন্নত দেশের হাসপাতালগুলো রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। তখন ভিয়েতনাম কিভাবে কোন মৃত্যু ছাড়াই এখনও সফল? এর কারণ খুঁজতে গিয়ে বিশ্লেষকরা পেয়েছেন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল।

কি সেই কৌশল? জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারি থেকে দেশটিতে দেহের তাপমাত্রা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে স্ক্রিনিং বা পরীক্ষা করা হচ্ছে। বিমানবন্দরে এ পরীক্ষা থেকে কাউকে বাদ দেয়া হয়নি। একইসঙ্গে তাদের কয়েকমাসের স্বাস্থ্যগত তথ্যও যাচাই করা হতো। কেউ মিথ্যা তথ্য দিলে সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা। আর তাপমাত্রা ৩৮ সেলসিয়াসের বেশি হলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হতো। এছাড়া তার করণীয় কি তা ঠিক করে দিতেন চিকিৎসকরা।

বর্তমানে দেশটির কোন বড় শহর বা প্রদেশ, একইসঙ্গে কোনো প্রতিষ্ঠান ভবনে ঢুকতে হলে স্ক্রিনিং ও প্রয়োজনীয় পরীক্ষা সেরেই ঢুকতে হয়। সব শহরেই করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। সবাইকে বাধ্যতামূলক এ পরীক্ষা করতে হচ্ছে। কারো করোনা ধরা পড়লে ওই এলাকা পুরোটাই লকডাউন করে দেয়া হচ্ছে। ফেব্রুয়ারি থেকেই ভিয়েতনামে কোয়ারেন্টিন ও লকডাউন মেনে চলা হচ্ছে। দেশটিতে গত ৫ মার্চ থেকে নিজেদের উদ্ভাবিত তিন ধরনের করোনার কিট পাওয়া যাচ্ছে। এগুলো জনসাধারণ যে কোনে স্থান থেকে ২৫ ডলারে কিনে নিয়ে নিজেরাই পরীক্ষা করতে পারে। এতে ফলাফল পাওয়া যায় মাত্র ৯০ মিনিটে। এর ফলে দেশটিতে ব্যাপকভাবে করোনা পরীক্ষা সম্ভব হয় এবং সরকারও সে হিসেবে ব্যবস্থা নিতে পেরেছে।

সফলতার ক্ষেত্রে আরেকটি বড় ভূমিকা রেখেছে জনগণের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ। জানুয়ারি থেকেই ভিয়েতনাম সরকার জনগণের মাঝে করোনা নিয়ে প্রচারণা শুরু করে। জানিয়ে দেয়া হয়, কিভাবে সচেতন থাকতে হবে, করোনা হলে কি করতে হবে, এবং কিভাবে মোকাবেলা করতে হবে। সেই সঙ্গে কিভাবে একে অন্যের ক্ষতি না করে থাকা যায় সেটিও জনগণকে নিশ্চিত করতে বলা হয়। দেশটির প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রাদেশিক গভর্নররাও মোবাইল ফোন ও প্রযুক্তির বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে এ প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। 

কারো করোনা ধরা পড়লে তা প্রচার করে দেয়া হচ্ছে, যাতে অন্যরা সচেতন হতে পারে। একইসঙ্গে কেউ তথ্য গোপন করলে বা আইন লংঘন করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। দেশটির হাসপাতালগুলোতেও করোনা চিকিৎসার যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। কোন রোগী আসলে তার চিকিৎসায় দ্রুত  ব্যবস্থা নেয়া হয়। মোটা দাগে তিনটি কৌশল অবলম্বন করেই করোনায় মৃত্যু শূন্য রাখতে পেরেছে দেশটি। 

সূত্র: দ্যা কনভারসেশন

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com