দেশে করোনা শনাক্ত আরও ২১৯ জন, মৃত ৪ জন

0

১৫ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়।

বাংলাদেশে আজও নতুন করে ২১৯ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১২৩১ জনে। করোনা ভাইরাস নিয়ে নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে বুধবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।


গেল ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর মাসের শেষ দিক থেকে দেশে অঘোষিত লকডাউন চলছে। এই সিদ্ধান্তের পরও করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছেই। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার এরইমধ্যে নানা পদক্ষেপও নিয়েছে।

এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সারা বিশ্বেই টালমাটাল অবস্থা। সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ছয় লাখ। অন্যদিকে ভাইরাসটিতে মারা গেছেন ২৬ হাজারেরও বেশি মানুষ।

বুধবার বিশ্বব্যাপী এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২০ লাখ। এছাড়া এতে প্রাণ হারিয়েছেন ১ লাখ ২৬ হাজার ৭৫৪ জন। অন্যদিকে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে ফিরেছেন ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৫৯৭ জন।

বাংলাদেশে ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর ধাপে ধাপে বাড়তে থাকে শনাক্ত রোগী।

গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে বৈশ্বিক মহামারিতে পরিণত করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ১৮ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মারা গেছেন এক লাখ ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। তবে সোয়া চার লাখের মতো রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও গত ক’দিনে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা।

প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে; যার মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। মানুষকে ঘরে রাখতে রাজপথের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ।

“ডা: মঈনের মৃত্যুতে আমরা শোকাহত কিন্তু সংক্ষুব্ধ”

আজ সকালেই প্রথম খবরটা পাই আমার এক ছাত্রের মাধ্যমে। ডা: মঈন আর নাই। কোভিড ১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার পর অনেক ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর সাথে পান্জা লড়েও হেরে গেলো। মহান আল্লাহতা’য়ালা ওকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসীব করুন এবং ওর শোক সন্তপ্ত পরিবারকে এই শোক সইবার ক্ষমতা দান করুন।
আমি শোকাহত, বাকরুদ্ধ। ডা: মঈনের বয়স বড়জোর ৪৬ বৎসর হবে। সে ঢামেক এর কে৪৮ ব্যাচের আর আমি কে৩০ ব্যাচের। এই টগবগে তরুন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের বাংলাদেশে আরো অনেক কিছু দেয়ার ছিলো। অথচ সে আজ নেই। আমরা জানি জন্ম, মৃত্যুর উপরে মহান আল্লাহ্ ছাড়া কারো হাত নেই। তারপরও কি আমরা আমাদের কিছু দায় এড়াতে পারি?

১। নিজের কর্মস্থল সিলেট মেডিক্যাল কলেজে উনি আইসিইউ পেলো না।
২। ঢাকায় আসার জন্য এয়ার এম্বু্লেন্স পেলো না। শেষ পর্যন্ত নিজের চেষ্টায় একটি সাধারন এম্বুলেন্সে করে ঢাকায় আসতে হলো। এই অবহেলা, তাচ্ছিল্যের জন্য আমি ধিক্কার জানাই দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাব্যক্তিদের। মনুষ্যত্ব আজ পদদলিত। সামান্য মানবিকতাও আর অবশিষ্ট নেই কিছু মানুষের। ডা: মঈনের কষ্ট, তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের বেদনার জন্য আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারছি না। এই অবহেলার দায় কার?



১। কেন ডাক্তাররা পিপিএ পাবে না? এটা তাদের অধিকার।
২। কেন সিলেটে আইসিইউ সাপোর্ট পেলো না? কেন সিলেটে করোনা রোগীর জন্য কোন আইসিইউ নাই?
৩। কেন সকাল থেকে বিকেল অব্দি সম্ভব সব রকম চেষ্টা করেও একজন ডাক্তার নিজেকে আইসিইউ সাপোর্ট দেওয়ার জন্য ঢাকায় আনার কোনরকম সহায়তা পাবে না? ডাক্তার যদি নিজেকেই সাহায্য করতে না পারে তাহলে কিভাবে রোগীকে সাহায্য করবে যেখানে কর্তৃপক্ষ কোন রকম সহায়তাই করে নাই?

৪। কেন ডেজিগনেটেড কোভিড হাসপাতালগুলোতে মাল্টি ডিসিপ্লিনারী এক্সপার্ট গ্রুপ দেয়া হয় নাই?
৫। অক্সিজেন পাইপ লাইন, এক্সরে মেশিন কেন কোভিড হাসপাতালগুলোতে সংস্থাপন করা হয়নি?

এখনও কি আমাদের শুনতে হবে, ‘আমরা প্রস্তুত’, ‘সবঠিক সবঠিক’! আর কতো তাজা প্রাণ ঝরে গেলে তারপর আমাদের বোধোদয় হবে?
ডা: মঈন তোমাকে স্যালুট। তোমার আত্নার মাগফেরাত কামনা করছি।



অধ্যাপক (ডা:) মনজুর হোসেন

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com