বিশ্বজুড়ে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা জাতিসঙ্ঘের
বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত অনেক দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা। নজিরবিহীন চাপের মুখে জনস্বাস্থ্যের কঙ্কালসার চেহারাটা উন্মোচিত হয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী। ইন্স্যুরেন্সভিত্তিক চিকিৎসাব্যবস্থায় জনসংখ্যার বড় অংশই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সুফল থেকে বঞ্চিত। উন্নত দেশগুলোর জনস্বাস্থ্যও কতটা ভঙ্গুর, কতটা বিশৃঙ্খল, নতুন নতুন সমস্যা মোকাবেলায় কতটা অক্ষম তা প্রমাণিত হয়েছে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হওয়ায়।
বেসরকারি পুঁজি স্বাস্থ্যকে যতটা বিনোদন পণ্য বানিয়েছে, মানুষের মানসম্মত চিকিৎসা ততটা নিশ্চিত করেনি। দেশে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৌলিক চিকিৎসাসেবার অভাবে রাস্তায় রাস্তায় মানুষ মরে পড়ে থাকছে। স্বাভাবিক অবস্থায়ই যে বিশ্বে প্রায় ১০০ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত থাকে এবং প্রায় ১০ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় মেটাতে গিয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়ে সেখানে করোনা জনগণের অসহায়ত্ব ও আর্তনাদ বাড়িয়েছে।
যেসব স্বল্পোন্নত, কম উন্নত ও দরিদ্র দেশগুলোর শীর্ষনেতা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ জনস্বাস্থ্য নিয়ে অজ্ঞ, নানা রকম কুসংস্কার ও বিচিত্র নারকীয় চিকিৎসা পদ্ধতিতে বিশ্ববাসী তাদের অবস্থা আরো খারাপ। যেসব দেশের কর্তাদের জাতীয় কর্তব্য নিয়ে মাথাব্যথা নেই, সুস্পষ্ট স্বাস্থ্যনীতির অভাব, প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রীর অভাব, জনস্বাস্থ্যব্যবস্থা দুর্বল, বেশির ভাগ মানুষ গরীব, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা অনুপস্থিত, পুষ্টিহীনতা প্রবল, স্বাস্থ্য সচেনতার অভাব, সঠিক স্বাস্থ্যাভ্যাস গড়ে ওঠেনি, তীব্র সমন্বয়হীনতায় স্বাস্থ্যব্যবস্থারই স্বাস্থ্য সঙ্কট রয়েছে, সেখানে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ। খবর বিবিসি, সিএনএন, ইয়াহুনিউজ, ফক্স নিউজ, নিউ ইয়র্ক টাইমস, রয়টার্স, দ্য টেলিগ্রাফ ও ওয়ার্ল্ডওমিটারসের।
বিশ্বজুড়ে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা জাতিসঙ্ঘের : বিশ্বজুড়ে লকডাউনে অনভিপ্রেত খাদ্য সঙ্কটের কারণে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসঙ্ঘ। সংস্থাটি বলছে, খাবারের অভাব এখনই তৈরি হয়নি। কিন্তু লকডাউনের জেরে বন্ধ আন্তর্জাতিক সীমান্ত। ব্যবসা-বাণিজ্য, উৎপাদন ও পরিবহন বন্ধ হয়ে পড়েছে। আকাশপথ পুরোপুরি বন্ধ, ব্যবসা বাণিজ্যেও হাড়ির হাল। বিশ্বজুড়ে খাদ্য সরবরাহ বিঘ্নিত হয়ে সঙ্কট সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। যেসব দেশে উপযুক্ত পরিমাণ খাদ্য উৎপাদন হয় না, যাদের খাদ্যের জন্য অন্য দেশের ওপর নির্ভর করতে হয়, সেসব দেশ চরম সমস্যায় পড়তে পারে। যেসব দেশ উপযুক্ত পরিমাণ খাদ্য তৈরি করতে পারে, তাদেরও সমস্যায় পড়তে হতে পারে। আন্তঃরাজ্য সীমান্ত সিল করার দরুন সেই দেশগুলোতেও খাদ্য সরবরাহের শৃঙ্খল নষ্ট হতে পারে। এই দেশগুলোর কাছে আসল চ্যালেঞ্জ হলো, মজুদ খাদ্য অভুক্তদের কাছে পৌঁছে দেয়া।
জাতিসঙ্ঘের সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে, বিশ্বব্যপী প্রায় ৮০ কোটি মানুষ এরই মধ্যে খাদ্য সঙ্কটে ভুগছেন। আগামী দিনে এ সংখ্যাটা আরো বাড়তে পারে। জাতিসঙ্ঘের খাদ্য সুরক্ষাসংক্রান্ত কমিটির আশঙ্কা, খাদ্যের এ সঙ্কটে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হবে গরিব ও প্রান্তিক শ্রেণীর মানুষ। উদ্ভূত এ সঙ্কট থেকে রক্ষা পেতে দ্রæত বিশ্বজুড়ে খাদ্য পরিবহনের ব্যবস্থা করা উচিত।
যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত : করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে বিপর্যস্ত খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা। সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রও এর ভয়াল থাবা থেকে রক্ষা পায়নি। যুক্তরাষ্ট্রে হোটেল, রেস্তোরাঁ, স্কুল ও অন্যান্য অনেক খাদ্যপণ্যের দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক কৃষক নিজেদের উৎপাদিত দুধ, ডিম ও সবজি সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে বাধ্য হয়ে তারা এসব ফেলে দিচ্ছেন। ডেইরি ফার্মার্স অব আমেরিকার তথ্য অনুযায়ী, দেশটির কৃষকরা প্রতিদিন ৩৭ লাখ গ্যালন দুধ ফেলে দিতে বাধ্য হচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে চিকেন প্রসেসরে গুঁড়িয়ে দেয়া হচ্ছে ৭ লাখ ৫০ হাজার ডিম। আর মাঠের ফসল মাঠেই রেখে আসছেন কৃষকরা। অনেকে তাজা শাকসবজি মাটি চাপা দিচ্ছেন। আর যারা পারছেন তারা বিভিন্ন সংস্থাকে দান করে দিচ্ছে, যারা দরিদ্রদের সহায়তা দেয়।
ঝুঁকিতে ব্রিটেনের স্বাস্থ্যকর্মীদের জীবন : কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) পাচ্ছেন না যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকরা। ব্রিটিশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) প্রধান ড. চান্দ নাগপাল বলেন, ‘অতি জরুরি সুরক্ষা নিশ্চিত না হওয়া সত্তে¡ও চিকিৎসকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে চলেছেন। লন্ডন ও ইয়র্কশায়ারে পিপিইর ঘাটতি ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। চিকিৎসকরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। যথেষ্ট সুরক্ষা ছাড়া সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন কি রাখবেন না, এমন হৃদয়বিদারক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছেন। এ ধরনের পরিস্থিতি চিকিৎসাসেবায় সংশ্লিষ্টদের জন্য খুবই মর্মান্তিক। মূলত যথাযথ সরঞ্জাম সরবরাহের ক্ষেত্রে সরকারের ব্যর্থতাই দায়ী। যারা কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিচ্ছেন, তাদের অন্তত একটি সার্জিক্যাল ফেস মাস্ক, ডিসপোজেবল অ্যাপ্রোন, গøাভস ও চোখের সুরক্ষা সরঞ্জাম প্রয়োজন। বহু চিকিৎসা কর্মীই সেবা দিতে গিয়ে এসব সরঞ্জাম পাচ্ছেন না। অর্ধেকেরও বেশি চিকিৎসক অতি ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন।’ ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল বলেছেন, ‘জনগণ ও স্বাস্থ্যকর্মীরা যদি মনে করেন করোনা মোকাবেলায় পিপিই সরবরাহে সরকারের ব্যর্থতা রয়েছে, তবে তার জন্য তিনি দুঃখিত।’
ত্রাণের জন্য মার্কিনিদের হাহাকার : যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কর্মহীন হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে পরিবারগুলোতে। ত্রাণ বিতরণের লাইনেও উপচে পড়া ভিড়। সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়াতে খাদ্যসামগ্রীর জন্য এত বেশি মানুষ ভিড় জমিয়েছিল যে অপেক্ষমাণ গাড়ির লাইন প্রায় ১.৬ কিলোমিটার দীর্ঘ হতে দেখা গেছে। ক্যালিফোর্নিয়ার হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষ নতুন করে সরকারি খাদ্য সহায়তা চেয়ে আবেদন করছেন। বিনামূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী বিতরণের সময় উপচে পড়ছে মানুষ। দীর্ঘক্ষণ ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহ করছেন। লস অ্যাঞ্জেলসের মধ্য স্যান ফার্নান্দো ভ্যালি অঞ্চলের ভ্যান নুইস এলাকায় বৃষ্টির মধ্যে আবর্জনা ফেলার ব্যাগ গায়ে জড়িয়ে খাদ্যসামগ্রী সংগ্রহ করছে মানুষ। বেকায়দায় পড়েছে লস অ্যাঞ্জলেসের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অংশের শ্রমজীবী দরিদ্র ল্যাটিনো পরিবারগুলো। লস অ্যাঞ্জেলস রিজিওনাল ফুড ব্যাংক বিনামূল্যে প্রতিদিন এক-দু’বার খাদ্য বিতরণের কাজ করছে। গণমাধ্যমগুলোর জন্য ত্রাণ সরবরাহ করতে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম মিডিয়া ট্রেড গ্রুপ, প্রকাশক ও ব্রডকাস্টার সংগঠন। নিউজ মিডিয়া অ্যালায়েন্স, ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ব্রডকাস্টার (এনএবি), ন্যাশনাল নিউজ পেপার অ্যাসোসিয়েশন (এনএনএ) এবং আমেরিকার নিউজপেপারের এক বিবৃতিতে কংগ্রেসকে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর জন্য নতুন বিলে প্রণোদনা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
চীনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ : ইউরোপের দেশগুলো থেকে অভিযোগ করা হয়- চীন থেকে পাঠানো চিকিৎসা সরঞ্জাম ত্রুটিপূর্ণ। চীনের তৈরি চিকিৎসা সরঞ্জামের মান খুবই নিম্ন। করোনা মোকাবেলায় হাসপাতালে ব্যবহারের জন্য এসব সামগ্রী নেয়া হলেও চীন সেই মানের পণ্য সরবরাহ করেনি। নিউ ইউরোপ জার্নালে লেখা এক নিবন্ধে করোনাভাইরাসের মহামারীর জন্য সরাসরি চীনকে দায়ী করেছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টে নিয়োজিত স্প্যানিশ সাংসদ হারমান টার্টচ।
তিনি লিখেছেন, ‘চীন এই ভাইরাসের ব্যাপারে গত বছরের নভেম্বরেই জানতে পায়। তখন তারা নীরব থাকে এবং বিশ্বকে ভুল বার্তা দিতে থাকে। এই ভাইরাসের ভয়াবহ ক্ষতি এখনো অপেক্ষা করছে। চীনের তথ্য আড়াল করার কারণেই এ মহামারী। বিশ্বের লাখো মানুষের মৃত্যু এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের জন্যও চীন কখনোই দায়মুক্তি পেতে পারে না। করোনার ব্যাপারে সতর্ককারী চিকিৎসকরা হয় মারা গেছেন, নতুবা তাদের গুম করা হয়। এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কাজে সহায়তা করার জন্য প্রতিনিধিদল পাঠাতে চাইলে চীন তা প্রত্যাখ্যান করে। পরিস্থিতি পুরো নিয়ন্ত্রণে আছে বলে জানায়। কিন্তু সেই সময় এই ভাইরাস চীনের সীমানা পেরিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিস্তার ঘটায়। রেডিও ফ্রি এশিয়ার অনুসন্ধানে চীনে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে বলে বেরিয়ে এসেছে। চীনের পাঠানো মেডিক্যাল সহায়তা যথাযথ মানসম্মত না হওয়ায় নেদারল্যান্ডস সরকার চীনের দেয়া ৬ লাখ মাস্ক ফেরত পাঠিয়ে দেয়। একই অভিযোগে স্পেন ও ক্রোয়েশিয়াও চীনা সহায়তা ফেরত দেয়।’
সৌদিতে তারাবির জামাত স্থগিত : কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের পরিবর্তন না হলে ২০২০ সালের রমজানের সময় সৌদি আরবের মসজিদগুলোতে তারাবিহর নামাজ হবে না। এ ভাইরাসমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সব মসজিদে তারাবিহর নামাজ স্থগিত থাকবে বলে জানিয়েছেন দেশটির ইসলামিক বিষয়ক মন্ত্রী ড. আবদুল লতিফ আল-শেখ। মন্ত্রী জানান, ‘করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে মসজিদে তারাবিহ নামাজ স্থগিত থাকবে। তবে ঘরে বসে তারাবিহ আদায় করতে পারবে। মহামারী করোনাভাইরাস যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে জন্য দেশটির মসজিদে মসজিদে সাময়িক নামাজ স্থগিতের নির্দেশ দিয়ে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। করোনার এ প্রাদুর্ভাবের সময় এ ভাইরাস কিংবা স্বাভাবিক মৃত্যুবরণকারীর জানাজা সর্বোচ্চ ৫-৬ ব্যক্তি সম্পন্ন করবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের অসহায়ত্বের সুযোগ নিচ্ছে রাশিয়া : করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ও ধ্বংসযজ্ঞে দিশেহারা-অসহায় হয়ে পড়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রটি। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে আমেরিকা সরকার যখন বিপর্যস্ত তখন সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দেশটির বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি ও গোপন তথ্য হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা বাড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া- এমন অভিযোগ করেছে করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে আমেরিকা কী কী পরিকল্পনা গ্রহণ করছে, তা জানার জন্য রাশিয়া গুপ্তচরবৃত্তি চালাচ্ছে। গত জানুয়ারি মাস থেকে রাশিয়া ব্যাপকভাবে মিথ্যা ও বানোয়াট খবর প্রচার করতে শুরু করেছে।
ফ্রান্সে ওভারটাইম করতে হচ্ছে কফিন তৈরির কারিগরদের : ইউরোপের সব থেকে বড় কফিন তৈরির সংস্থা পূর্ব ফ্রান্সের ওজিএফ। কফিন তৈরি করতে গিয়ে এ সংস্থার কর্মীদের ওভারটাইম করতে হচ্ছে। ফ্যাক্টরির ডিরেক্টর ইম্যানুয়েল গ্যারেট জানিয়েছেন, সাধারণভাবে ৩৭০ টি কফিন তৈরি করা হলেও, এখন ৪১০টি করে কফিন তৈরি করা হচ্ছে। কর্মীরা প্রতিদিন প্রায় এক ঘণ্টা করে বেশি কাজ করছেন। শনিবারেও কাজ হচ্ছে সেখানে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানের পদত্যাগ চেয়ে ১০ লাখ স্বাক্ষর : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিøউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুসের পদত্যাগ দাবি করে অনলাইন পিটিশনে স্বাক্ষর করেছে প্রায় ১০ লাখ মানুষ। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘ব্যর্থ’- এমন দাবি করা হয়েছে পিটিশনটিতে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডব্লিউএইচওর ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। জাতিসঙ্ঘের এ সংস্থাকে তিনি চীনপন্থী বলে আখ্যা দেন। ডব্লিউএইচওর তহবিলে যুক্তরাষ্ট্র যে অনুদান দেয় তাও বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেন ট্রাম্প। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় আধানম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সঙ্কটময় এ মুহূর্তে রাজনীতিকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে।
করোনা প্রসঙ্গে বিল গেটসের চিন্তা : করোনাভাইরাস নিয়ে বিশ্বের অন্যতম সেরা ধনী বিল গেটস বলেন, এ ভাইরাস বেশ কিছু ক্ষেত্রে বৈষম্য করে। এটি তরুণদের চেয়ে বুড়োদের বেশি মারছে। নারীর চেয়ে পুরুষ বেশি মারা যাচ্ছেন। গরিবরা সামঞ্জস্যহীনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কোভিড-১৯ জাতীয়তার ভিত্তিতে বৈষম্য করে না। এই ভাইরাস সীমান্ত চেনে না।
নিউ ইয়র্ক শহর কোভিড-১৯-এ বিপর্যস্ত হয়েছে। কিন্তু সেখানকার একটি হাসপাতালে যে পরিমাণ আইসিইউ শয্যা আছে, আফ্রিকার বেশির ভাগ দেশেই তা নেই। তাই আফ্রিকার ওই সব দেশে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়লে লাখো মানুষের মৃত্যু হতে পারে। সে জন্য এই রোগের সাথে লড়াই করতে গেলে শুধু জাতীয় পরিসরে কাজ করলে চলবে না, দরকার বৈশ্বিক মনোভঙ্গি। কোভিড-১৯-এর মোকাবেলায় বিশ্বনেতারা তিনটি পদক্ষেপ নিতে পারেন। সব সম্পদ (মাস্ক, গøাভস ও পরীক্ষার কিট) যথাযথভাবে বণ্টন করা নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রথমে পরীক্ষা করতে হবে এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক উপাদান প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার দিতে হবে। সব দেশকে প্রতিষেধক আবিষ্কারে তহবিল জোগান দিতে হবে। টিকা উৎপাদন ও সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় টাকা দিতে জি-২০ নেতাদের এখন থেকেই ভাবতে হবে।