প্রতিটি পরিবারে করোনা সতর্ক বার্তা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর

0

যুক্তরাজ্যে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারী আকারে দেখা দিয়েছে। এ পর্যন্ত দেশটিতে ১৯ হাজার ৫২২ জন আক্রান্ত এবং ১২২৮ জন মারা গেছেন। রোববার ১২টা পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ২০৯ জন মারা গেছেন। এমন পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাস সংকট দূর হওয়ার আগেই পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে সতর্ক করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। শনিবার দেশের প্রতিটি পরিবারকে চিঠি দিয়ে তিনি সতর্ক করেছেন। ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে প্রয়োজনে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে বলেও চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন। খবর বিবিসি, রয়টার্স ও ওয়ার্ল্ডওমিটারসের।

ডট ইনফোর হিসাব অনুযায়ী- রোববার রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত করোনাভাইরাসে ব্রিটেনে আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ হাজার ৫২২ ও মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ২২৮ জন। রোববার একদিনে ২০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনায় যুক্তরাজ্যে আক্রান্তদের মধ্যে প্রিন্স চার্লস, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হানকক রয়েছেন। এছাড়া স্কটল্যান্ড বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী অ্যালিস্টার জ্যাকের শরীরেও করোনাভাইরাসের মৃদু উপসর্গ বা লক্ষণ ধরা পড়েছে। ভাইরাসটির লক্ষণ ধরা পড়ার পর বর্তমানে তিনি স্বেচ্ছা আইসোলেশনে রয়েছেন।

করোনা আক্রান্ত প্রধানমন্ত্রী জনসন হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। বাড়ি থেকে তিনি ভিডিও কনফারেন্সে সরকারি কাজকর্ম করছেন। সরকারি পরামর্শের স্পষ্টতা নিয়ে সমালোচনার মুখে শনিবার হোম কোয়ারেন্টিনে থেকে তিনি পরিবারকে চিঠি দেয়ার পদক্ষেপ নেন। বাড়ি থেকে নাগরিকদের বের না হওয়ার বিষয়ে চিঠিতে তিনি বিস্তারিত সরকারি নিয়মকানুন এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য সংবলিত লিফলেটও দিয়েছেন। ব্রিটেনের প্রায় ৩ কোটি পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর চিঠি পাঠাতে প্রায় ৫৮ লাখ পাউন্ড খরচ হয়েছে।

চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী জনসন লিখেছেন- ‘শুরু থেকেই আমরা সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করেছি। বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা যে পরামর্শ দেবে আমরা তা অবশ্যই করব। আমরা জানি পরিস্থিতি ভালো হওয়ার আগে আরও খারাপের দিকে যাবে। তবে আমরা সঠিক প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং আমরা নিয়ম যত বেশি মেনে চলব, তত কম জীবন হারাব এবং তত তাড়াতাড়ি জীবন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারবে।’

করোনা মহামারীকে জাতীয় জরুরি পরিস্থিতি হিসেবে উল্লেখ করে চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী জনসন জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা রক্ষা করতে এবং জীবন বাঁচাতে সবাইকে বাড়িতে থাকতে অনুরোধ করেন। চিকিৎসক, নার্স ও অন্যসব সেবাদানকারীর পাশাপাশি লাখ লাখ অসহায় মানুষকে সহায়তা করতে যারা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছেন তাদের কাজের প্রশংসা করেন তিনি। চিঠির সঙ্গে পাঠানো লিফলেটটিতে হাত ধোয়া সম্পর্কিত দিকনির্দেশনা, করোনাভাইরাসের লক্ষণগুলোর ব্যাখ্যা, বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার সরকারি নিয়ম এবং অসহায় মানুষদের সহায়তা করা সংক্রান্ত নানা পরামর্শ রয়েছে।

ইংল্যান্ডের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবার মেডিকেল পরিচালক বলেছেন, ভাইরাসটি নিয়ে এখনও দুশ্চিন্তামুক্ত হওয়ার সময় আসেনি। শনিবার সরকারের নিয়মিত করোনাভাইরাস ব্রিফিংয়ে প্রফেসর স্টিফেন পওইস বলেন, যুক্তরাজ্যে মৃতের সংখ্যা ২০ হাজারের নিচে রাখতে ‘আমাদের প্রত্যেককেই’ ভূমিকা পালন করতে হবে।

ইংল্যান্ডের হাসপাতালের কর্মীদের করোনাভাইরাস রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করা শুরু হয়েছে। ওয়েলস এবং স্কটল্যান্ডে, স্বাস্থ্য কর্মীদের ইতোমধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে। সোমবার থেকে উত্তর আয়ারল্যান্ডে এ পরীক্ষা শুরু হবে। স্কটল্যান্ডের নেতা অ্যালিস্টার জ্যাকের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় করোনাভাইরাস ধরা পড়ায় তিনি নিজেকে আলাদা করে রেখেছেন। তার শরীরে করোনার মৃদু লক্ষণগুলো দেখা গেছে।

যুক্তরাজ্যে লকডাউন জুন পর্যন্ত হতে পারে : করোনাভাইরাসের কারণে যুক্তরাজ্যে লকডাউন উল্লেখযোগ্য সময় বাড়ানো হতে পারে। রোববার কেবিনেট মিনিস্টার মাইকেল গোভ বলেন, আমি সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারব না। তবে সবাইকে উল্লেখযোগ্য সময়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলব।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com