করোনা রোধে যে পরামর্শগুলো সঠিক নয়
করোনাভাইরাস সারাবিশ্বে মহামারী আকারে দ্রুতবেগে ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত এর কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরামর্শ দেখা যাচ্ছে। যেগুলো প্রায়ই অপ্রয়োজনীয় এবং বিপজ্জনক। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া এসব পরামর্শকে ভুয়া বলে অভিহিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। আসুন জেনে নেই সেসব ভুয়া পরামর্শ সম্পর্কে-
থানকুনি পাতা: সম্প্রতি মাঝরাতে থানকুনি পাতা সংগ্রহের হিড়িক পড়ে। জানা যায়, কে বা কারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ায় যে, থানকুনি পাতা খেলে করোনাভাইরাস আক্রমণ করতে পারে না। এ কথা ছড়িয়ে পড়ার পর গ্রামাঞ্চলের মানুষ মাঝরাতেই ঝাপিয়ে পড়ে মাঠে-ময়দানে, ঝোপ-ঝাড়ে। আসলে এর কোনো ভিত্তি নেই। থানকুনি পাতা খেলে করোনামুক্ত থাকা যায় এমন নিশ্চয়তা দিতে পারেননি চিকিৎসকরা।
রসুন: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এমন অসংখ্য পোস্ট দেখা গেছে যেখানে লেখা, ‘যদি রসুন খাওয়া যায় তাহলে সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব।’ অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ‘রসুন একটি স্বাস্থ্যকর খাবার। এতে এন্টিমাইক্রোবিয়াল আছে। কিন্তু এমন কোনো তথ্য-প্রমাণ নেই যে, রসুন করোনাভাইরাস থেকে মানুষকে রক্ষা করতে পারে।’ তবে রসুন ক্ষতিকারক না হলেও পরিমাণে বেশি কাঁচা রসুন খেয়ে ফেলা অবশ্যই ক্ষতিকারক।
কালিজিরা: অনেকেই ফোনে বা ফেসবুকে এসএমএস করেন যে, কালিজিরা খেলে করোনাভাইরাস আক্রমণ করতে পারবে না। আসলে করোনাভাইরাস রোধ করার ক্ষেত্রে কালিজিরার কোনো ভূমিকা নেই। তবে কালিজিরা খেলে ক্ষতি হওয়ারও সম্ভাবনা নেই। কিন্তু সেটা পরিমাণের চেয়ে বেশি হলে ক্ষতি হওয়াই স্বাভাবিক।
১৫ মিনিট পরপর পানি পান: ফেসবুকের এক পোস্টে একজন ‘জাপানি ডাক্তার’র উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘করোনাভাইরাসের জীবাণু মুখের মধ্যে ঢুকে পড়লেও প্রতি ১৫ মিনিট পরপর পানি খেলে, তা দেহ থেকে বের হয়ে যায়। কিন্তু লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক স্যালি ব্লুমফিল্ড বলেন, ‘এ দাবির পক্ষে সত্যিই কোনো প্রমাণ নেই।’ তবে পানি পান করা অবশ্যই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
গরমে ভাইরাস মরে: গরমে এ ভাইরাস মারা যায় বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তাতে গরম পানি পান করা, গরম পানিতে গোসল করা, এমনকি হেয়ারড্রায়ার ব্যবহারেরও সুপারিশ করা হচ্ছে। পাশাপাশি আইসক্রিম খেতেও বারণ করা হয়েছে। ইউনিসেফের উদ্ধৃতি দিয়ে এমন একটি পোস্ট নানা দেশে শেয়ার করা হচ্ছে। অথচ ইউনিসেফ বলছে, এটা স্রেফ ভুয়া খবর।