‘ফিঙ্গার নিয়ে পাঠিয়ে দিবি, তারপর তুই টিপ দিবি’
ঢাকা- ১০ আসনের উপ-নির্বাচনে কেন্দ্রের কক্ষে কক্ষে ক্ষমতাসীন দলের নৌকার প্রার্থীর এজেন্টদের সরব উপস্থিতি দেখা গেলেও বিএনপির প্রার্থীর কোনো এজেন্ট চোখে পড়েনি।
শনিবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে রাজধানীর ধানমন্ডির প্রগতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ চিত্র দেখা গেছে।
এই কেন্দ্রের ভেতরে ৯টি কক্ষের প্রতিটি কক্ষের ভেতর নৌকা প্রার্থীর এজেন্ট ও সমর্থকদের ব্যস্ততা লক্ষ্য করা গেছে।
এই প্রতিবেদকের সামনেই এক সমর্থক বলে ওঠেন, ‘ফিঙ্গার নিয়ে পাঠিয়ে দিবি তারপর তুই টিপ দিবি। ক্যামেরা দেখলে সরে আসবি।’
এসব বিষয়ে প্রিসাইডিং অফিসার হাছান বলেন, এ রকম তো হওয়ার কথা না।
পরে তিনি নিজে কক্ষে কক্ষে গিয়ে তাদের বেরিয়ে আসতে বললেও প্রথমে তারা অস্বীকার করেন। কিছুক্ষণ পর বলে ওঠেন ‘আমরা তো ভোটার ভোট দিতে আসছি। ক্ষণিক বাকবিতণ্ডার পর তারা বেরিয়ে যান।
তবে অন্যান্য কেন্দ্রে ভোটার না থাকলেও এই কেন্দ্রে কয়েকটি কক্ষে ভোটাররা ভোট দিয়েছেন।
ঢাকা-১০ আসনসহ গাইবান্ধা-৩ ও বাগেরহাট-৪ আসনে ভোটগ্রহণ করছে নির্বাচন কমিশন। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। ঢাকা-১০ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হচ্ছে।
মেয়র নির্বাচন এবং সংশ্লিষ্ট আসনের সংসদ সদস্যের মৃত্যুর কারণে এসব আসন শূন্য হয়।
শুক্রবার করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘ইভিএম সিস্টেম যদি ব্যবহার করা হয়, একই জায়গায় অনেক ব্যক্তি টাচ করলে এটাতে অবশ্যই ঝুঁকি আছে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নির্বাচন স্বেচ্ছাচারিতা ও একগুঁয়েমির নির্বাচন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, ‘এই ইলেকশন করা অন্যায়। সরকার যদি চায় তাহলেই তো ভোট হয়। এত সিদ্ধান্ত নিল। কিন্তু এই অর্থশূন্য নির্বাচন করতে হবে। সিটি করপোরেশন নির্বাচন করে তাদের বসাইয়া রাখছে। এখন কেউ কাজ করতে পারছে না।’ এ ভোটের মাধ্যমে যদি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয় এর দায় ইসিকে নিতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এটা বাড়াবাড়ি ও একগুঁয়েমির নির্বাচন।’
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ বদিউল আলম মজুমদার ‘আমার তো মনে হয় স্বেচ্ছাচারিতা; চরম স্বেচ্ছাচারিতা। মানুষের নিরাপত্তায় শুধু উদাসীনতা। এই কমিশন শুধু ভোটাধিকার হরণ নয়, নাগরিকদের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলছে।’ এটা অবিশ্বাসযোগ্যে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘জনগণ কোনো ভোট মেনে নেয়নি। জনগণের কিছু করার নেই।’