ডিসি সুলতানার পরিবারের কাছ থেকে ১১ বিঘা জমি দখলমুক্ত

0

কুড়িগ্রাম থেকে প্রত্যাহার করা জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনের পরিবারের অবৈধ দখলে থাকা ১১ বিঘা জমি উদ্ধার করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে পঞ্চগড় সদর উপজেলার জিয়াবাড়ি এলাকার ওই জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে আমিরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি ও তার স্বজনদের। গত বুধবার পঞ্চগড়ের সহকারী জজ আদালতের নির্দেশে পুলিশ ও আদালতের সেরেস্তাদার ঢাকঢোল পিটিয়ে জমির দখল বুঝিয়ে দেয় প্রকৃত মালিক আমিরুল ও তার ভাইবোনদের।

ওই জমি এতদিন সুলতানা পারভীনের দাপট দেখিয়ে তার বাবা ও স্বজনরা অবৈধভাবে নিজেদের দখলে রেখেছিলেন। প্রায় ১৫ বছর ধরে এই জমি মূল মালিকের বেদখলে ছিল। বাটোয়ারা মামলা করার দীর্ঘ ১৪ বছর পর আদালতের রায়ে আমিরুল ও তার ভাইবোনরা জমির দখল ফিরে পেলেন। যদিও জমিটি তাদের কেনা সম্পত্তি বলে দাবি করেছেন সুলতানা পারভীনের পরিবারের লোকজন।

আদালতের রায়ের তথ্য ও জমির প্রকৃত মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের হাফিজাবাদ মৌজার ছয়টি দাগে প্রায় ১১ বিঘা জমির ওয়ারিশ সূত্রে মালিক ওই এলাকার আমিরুল ইসলাম ও তার ভাইবোনরা। তারা তাদের দাদি রমজানী ওরফে রমজাদী বিবির ওয়ারিশ হিসেবে জমিটির মালিক। কিন্তু জমিটি জাল দলিল করে কুড়িগ্রামের সেই ডিসি সুলতানা পারভীনের বাবা মোহাম্মদ আলী, তার ভাই আবদুল জব্বার ও স্বজনরা দখল করে চাষাবাদ করছিলেন। জমির দখল ফিরে পেতে ২০০৬ সালে পঞ্চগড় আদালতে বাটোয়ারা মামলা করেন আমিরুল গং। চার বছর পর মামলার রায় পান তারা। কিন্তু এরপর অপর পক্ষ আদালতে বারবার আপিল করতে শুরু করে। এমনকি উচ্চ আদালতেও আপিল করে তারা। আদালত তাদের আপিল খারিজ করে দেয়। তারপরও তারা ওই জমি ভোগদখল করতে থাকে। গত ১২ মার্চ আদালত আমিরুলদের অনুকূলে রায় দেয় এবং বুধবার জমিটি আদালতের মাধ্যমে তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় পঞ্চগড় সদর থানার একদল পুলিশ ও স্থানীয় গ্রাম পুলিশরা উপস্থিত ছিলেন।

পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির তমিজ উদ্দিন বলেন, ‘গত ১২ মার্চ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের তেঁতুলিয়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক লিটন চন্দ্র রায় রেকর্ড মূলে বাদী আমিরুল ইসলামের অনুকূলে রায় দেন। সেই রায় অনুযায়ী আদালতের নির্দেশে আমরা বাদীকে জমি বুঝিয়ে দিয়েছি।’

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘ডিসি সুলতানার বাবা মোহাম্মদ আলী ও তাই ভাইসহ স্বজনরা আমাদের ১১ বিঘা জমির জাল দলিল করে দখল করে চাষাবাদ করে আসছিল। মোহাম্মদ আলীর এক মেয়ে ডিসি এবং এক ছেলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। এলাকায় সুলতানার যে ভাইয়েরা আছে তারা আমাদের প্রতিনিয়ত ভয়ভীতি দেখাত। এমনকি বিভিন্ন মামলা দিয়ে তারা আমাদের হয়রানি করেছে। প্রভাবশালী হওয়ায় আমরা তাদের ভয়ে আমাদের জমিতে যেতে পারিনি। আমরা আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। দীর্ঘদিন পরে হলেও আমরা আমাদের প্রাপ্ত জমির দখল বুঝে পেয়েছি।’

তবে সুলতানা পারভীনের ভাই বাবুল হোসেন বলেন, ‘যে ১১ বিঘার ওপর আদালত রায় দিয়েছে সেখানে আমাদের জমি অল্প। আর সে জমিও আমার বাবা আমিরুলের দাদির ভাই সলিম উদ্দিনের কাছ থেকে কিনে নিয়েছেন। আমরা আদালতে প্রয়োজনীয় কাগজ দেখাতে পারিনি বলে আদালতে তারা রায় পেয়েছে।’ সুলতানা পারভীন এক্ষেত্রে কোনো প্রভাব খাটাননি বলেও দাবি করেন বাবুল।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com