‘জানতাম বড় রান করবই’

0

‘কৃতিত্ব প্রাপ্য টিম ম্যানেজমেন্টের। কারণ, তারা সবসময় আস্থা রেখেছেন আমার ওপর। টেস্ট ম্যাচে ও নেটে ভালোই ব্যাট করেছিলাম। জানতাম, বড় রান আমার ব্যাট থেকে আসবেই।’ বুকের ওপর থেকে যেন পাথর সরে গেল। নিজের ছায়া হয়ে থাকা তামিম ইকবাল আলোয় ফিরলেন শতকের লণ্ঠন জ্বালিয়ে। তার রেকর্ডস্নাত সেঞ্চুরির সহায়তায় চার রানের রোমাঞ্চকর জয়ে ওয়ানডে সিরিজ নিজেদের করে নিল বাংলাদেশ।

মঙ্গলবার রাতে সিলেটে ম্যাচসেরা তামিম বলেন, ‘উইকেট সবমিলিয়ে ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো ছিল। অপর প্রান্তে মুশি (মুশফিক) ভালো ব্যাট করছিল। প্রথম ম্যাচে ভালো ব্যাট করেছে লিটন। শান্তকে (নাজমুল হোসেন) ঠিকঠাক মনে হচ্ছে। শিগগিরই সে বড় রান পাবে। আমরা ব্যাটিংটা ভালোই করছি। একসময় ম্যাচ ওরা নিজেদের দিকে টেনে নিয়েছিল। আমরা সেখান থেকে ম্যাচটা কেড়ে নিয়েছি ওদের কাছ থেকে।’

অধিনায়ক হিসেবে নিজের শেষ সিরিজ জিতে তৃপ্ত মাশরাফি মুর্তজা। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘জয় তো জয়ই। সেটি চার রানে জিতলেও। স্নায়ু ঠিক রেখে জিতেছি আমরা। এই জয় পরের ম্যাচে আমাদের আত্মবিশ্বাস জোগাবে।’

তামিম ইকবালকে নিয়ে অধিনায়কের অভিমত, ‘সে সবসময় আমাদের বিশেষ খেলোয়াড়। বড় রান করতে পেরে সে আবার খুশি। এটা দেখে ভালো লাগছে। অন্যদের ব্যাটিং আবর্তিত হয়েছে তামিমকে ঘিরেই। এটা দেখেও ভালো লাগছে।’

মাশরাফি যোগ করেন, ‘এই ম্যাচের পর সবাই জিজ্ঞেস করবে, বোলিং নিয়ে কী বলবেন? উইকেট খুবই ভালো ছিল। খানিকটা শিশির ছিল। যা বোলারদের কাজ কঠিন করে দেয়। ক্লোজ ম্যাচ জিতলে আপনার আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে যায়। আপনাকে এগিয়ে যাওয়ার সাহস জোগায়।’

জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক শন উইলিয়ামস আক্ষেপে পুড়েছেন একেবারে কাছে এসে ম্যাচ হেরে যাওয়ায়। ‘ছেলেরা জোর লড়াই করেছে। এটা আমাদের জন্য ইতিবাচক’, বলেছেন উইলিয়ামস।

দুঃসময়ের কালো মেঘ সরিয়ে নিজের ছায়া থেকে বেরিয়ে এলেন তামিম। স্বস্তি ফিরেছে টিম ম্যানেজন্টেও। আপাতত মুখ বন্ধ রাখতে হচ্ছে সমালোচকদের।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কাল ইনিংস শুরু করতে নেমে ৪৬তম ওভারে আউট হয়ে যখন ফিরছেন, তার নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে ১৫৮। ১৩৬ বলের ইনিংসে ২০ চারের সঙ্গে ছক্কা তিনটি। পেছনে পড়ে গেছে ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই বুলাওয়েতে করা ১৫৪ রান। এতদিন সেটাই ছিল ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। কাল নিজেকেই ছাড়িয়ে গেলেন তামিম।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওডিআইতে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান (শীর্ষ পাঁচ)

খেলোয়াড় ম্যাচ রান সর্বোচ্চ গড় ৫০/১০০

তামিম ইকবাল (বাংলাদেশ) ৪০ ১৫৫৬ ১৫৮ ৩৯.৮৯ ৯/২

ক্রিস গেইল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) ৩০ ১৫৪৯ ২১৫ ৬১.৯৬ ১১/৩

সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ) ৪৫ ১৪০৪ ১০৫* ৪০.১১ ৭/৩

শচীন টেন্ডুলকার (ভারত) ৩৪ ১৩৭৭ ১৪৬ ৪৯.১৭ ৫/৫

সৌরভ গাঙ্গুলী (ভারত) ৩৬ ১৩৬৭ ১৪৪ ৪২.৭১ ৭/৩

সংখ্যায়

১২

বাংলাদেশ এ নিয়ে নিজেদের শেষ ১৩ একদিনের ম্যাচের ১২টি জিতল প্রথমে ব্যাট করে ৩০০ কিংবা তার বেশি রান তুলে

১০০

বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে ১০০ জয়ের মাইলফলক স্পর্শ করলেন মুশফিকুর রহিম

১৫৮

তামিম ইকবালের ১৫৮ রানের ইনিংস ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর

৩২২

টানা দুই ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডেতে নিজেদের সর্বোচ্চ সংগ্রহের রেকর্ড নতুন করে লিখল বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচের ৩২১ ছাড়িয়ে কাল বাংলাদেশ তুলেছে ৩২২ রান

বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে সাত হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করলেন তামিম ইকবাল

স্কোর কার্ড

বাংলাদেশ

রান বল ৪ ৬

তামিম ক মুতোম্বোদজি ব মুম্বা ১৫৮ ১৩৬ ২০ ৩

লিটন রানআউট ৯ ১৪ ২ ০

নাজমুল রানআউট ৬ ১০ ১ ০

মুশফিক ক মুতোম্বোদজি ব মাধেভেরে ৫৫ ৫০ ৩ ০

মাহমুদউল্লাহ ক মাধেভেরে ব টিশুমা ৪১ ৫৭ ৩ ০

মিঠুন নটআউট ৩২ ১৮ ৩ ১

মিরাজ ব মুম্বা ৫ ৬ ০ ০

মাশরাফি ক রাজা ব তিরিপানো ১ ৪ ০ ০

তাইজুল ক মুতোম্বোদজি ব তিরিপানো ০ ১ ০ ০

শফিউল নটআউট ৫ ৫ ০ ০

অতিরিক্ত ১০

মোট (৮ উইকেটে, ৫০ ওভারে) ৩২২

উইকেট পতন : ১/৩৮, ২/৬৫, ৩/১৫২, ৪/২৫৮, ৫/২৯২, ৬/৩০৭, ৭/৩১০, ৮/৩১১।

বোলিং : মুম্বা ১০-০-৬৪-২, টিশুমা ৫-০-৩৫-১, তিরিপানো ৮-০-৫৫-২, মাধেভেরে ৭-০-৩৮-১, সিকান্দার রাজা ১০-০-৫৯-০, শন উইলিয়ামস ৭-০-৩৫-০, মুতোম্বোদজি ৩-০-৩৪-০।

জিম্বাবুয়ে

রান বল ৪ ৬

কামুনহুকামওয়ে ব তাইজুল ৫১ ৭০ ৫ ২

চাকাভা ক লিটন ব শফিউল ২ ৫ ০ ০

টেলর রানআউট ১১ ২১ ২ ০

শন উইলিয়ামস এলবিডব্লু ব মিরাজ ১৪ ২৪ ৩ ০

মাধেভেরে এলবিডব্লু ব তাইজুল ৫২ ৫৭ ৫ ০

রাজা ক মাহমুদউল্লাহ ব মাশরাফি ৬৬ ৫৭ ৫ ২

মুতুম্বামি এলবিডব্লু ব তাইজুল ১৯ ১৭ ৩ ০

মুতোম্বোদজি ক লিটন ব আল-আমিন ৩৪ ২১ ৫ ০

তিরিপানো নটআউট ৫৫ ২৮ ২ ৫

মুম্বা নটআউট ০ ০ ০ ০

অতিরিক্ত ১৪

মোট (৮ উইকেটে, ৫০ ওভারে) ৩১৮

উইকেট পতন : ১/১৫, ২/৪৪, ৩/৬৭, ৪/১০২, ৫/১৮৩, ৬/২১৩, ৭/২২৫, ৮/৩০৫।

বোলিং : মাশরাফি মুর্তজা ১০-০-৫২-১, শফিউল ইসলাম ৯-০-৭৬-১, মেহেদী হাসান মিরাজ ৭-০-২৫-১, আল-আমিন হোসেন ১০-০-৮৫-১, তাইজুল ইসলাম ১০-০-৫২-৩, মাহমুদউল্লাহ ৪-০-২২-০।

ফল : বাংলাদেশ ৪ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ : তামিম ইকবাল (বাংলাদেশ)।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com