ভারত ছাড়তে বলা সেই বাংলাদেশি ছাত্রীর পক্ষে দাঁড়ালেন অমর্ত্য সেন
বিতর্কিত ও ধর্মভিত্তিক নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে চলা প্রতিবাদের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আফসারা মিমকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
‘সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে’ অংশ নেয়ার অভিযোগে ১৫ দিনের মধ্যে ভারত ছাড়তে এরই মধ্যে একটি চিঠিও দেয়া হয়েছে তাকে।
তবে ভারতছাড়ার নোটিশের বিরুদ্ধে কলকাতার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ওই বাংলাদেশি ছাত্রীর পক্ষে নৈতিক ও আইনি সমর্থনের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
এবার মিমের পক্ষে দাঁড়ালেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
শনিবার শান্তিনিকেতনে এক আলোচনাসভায় বাংলাদেশি ছাত্রী আফসারা মিমকে ভারতছাড়ার নির্দেশের প্রসঙ্গ তুলেন এই অর্থনীতিবিদ।
অমর্ত্য সেন বলেন, মাত্র সাড়ে তিন মিনিট খবরের কাগজে এই বিষয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছি। তবে কাগজে যা পড়লাম, তিনি কোনো প্রতিবাদী মিছিলের ছবি ইন্টারনেটে দিয়েছিলেন। সে জন্য তাকে দেশছাড়ার নির্দেশ দেয়ার পক্ষে যুক্তি কতটা শক্তিশালী, সেটি বিচার করা কঠিন।
তিনি বলেন, এখনও অবধি যা দেখেছি, তাতে আমি খুঁজে পাইনি, কী কারণ থাকতে পারে, যার জন্য তাকে দেশ থেকে তাড়ানো হবে?
‘কোনোরকম কারণ নেই– এটি আমি বলছি না। কিন্তু সে কারণগুলো কী তা জানতে আমি উদগ্রীব’, বলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ।
দেশের গণতান্ত্রিক অবস্থা নিয়ে অমর্ত্য সেন বলেন, ভারতে গণতন্ত্র নিয়ে উদ্বেগের কারণ তো সত্যিই আছে। গণতন্ত্রে দুটো দিক থাকে। মানুষের খোলাখুলি আলোচনার সুযোগ থাকে। যেটিকে জন স্টুয়ার্ট মিল বলেছেন, ডেমোক্র্যাসি ইজ গভর্নমেন্ট বাই ডিসকাশন। এই আলোচনা যদি বন্ধ হয়, তাকে যদি রাজদ্রোহ বলে চাপা দেয়া হয়, তা হলে নিশ্চয়ই ডেমোক্র্যাসির অভাব হচ্ছে মনে করার কারণ থাকবে।
‘আমি বলছি না যে গণতন্ত্র যায় যায় করছে। বলছি না, গণতন্ত্রের পক্ষে যুদ্ধ করে জেতার সম্ভাবনা নেই। সম্ভাবনা খুবই আছে।’