থাইল্যান্ড, নেপাল, ভারত, ভুটান ও রাশিয়া থেকে তরুণীদের আনা হতো

0

এমপি হতে চেয়েছিলেন অপরাধ জগতের সম্রাজ্ঞী শামীমা নূর পাপিয়া। এজন্য কোটি কোটি টাকা খরচও করেছিলেন তিনি। এমনকি দলীয় পদ বাগাতেও ঢেলেছিলেন কাড়ি কাড়ি টাকা। আর এই টাকার পুরোটাই আয় করেছিলেন অবৈধ উপায়ে। যাদের পেছনে টাকা ব্যয় করেছিলেন তারাই আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে অপরাধ জগতের মাফিয়া বানিয়েছে পাপিয়া-সুমন দম্পতিকে। ফলে ধরাকে সরা জ্ঞান করতেন তারা। বড় বড় ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি- পেশার মানুষকে নানাভাবে ব্লাকমেইল করে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়েছিলেন। এমনকি অনেককে আটকে রেখে শারীরিক নিপীড়নও চালাতেন তাদের ওপর।

পুলিশি রিমান্ডে যুব মহিলা লীগের সদ্য বহিস্কৃত নেত্রী পাপিয়া এসব নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। এছাড়া তার ওপরওয়ালা, সহযোগী, যেখানে যেখানে আনাগোনা সেসবের বিস্তারিত তদন্ত শুরু  করেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। বর্তমানে তিন মামলায় ১৫ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন আলোচিত এই নারী।

নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। এ জন্য তিনি খরচ করেছিলেন ১০ কোটি টাকা। আর নরসিংদী যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ পেতেও তিন কোটি টাকা খরচ করেছিলেন।

সূত্র জানিয়েছে, ডিবিতে জিজ্ঞাসাবাদে পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন চৌধুরী অনেক তথ্য দিচ্ছেন। তাদের কখনও আলাদাভাবে, কখনও দু’জনকে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রিমান্ডে তাদের দুই সহযোগী সাব্বির ও তায়্যিবাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

পাপিয়া ও সুমন চৌধুরীর অপরাধ জগত সম্পর্কে তায়্যিবা ডিবিকে জানিয়েছেন, অনেক সময় চাহিদামতো থাইল্যান্ড, নেপাল, ভারত, ভুটান ও রাশিয়া থেকে মেয়েদের নিয়ে আসা হতো। পার্বত্য অঞ্চল থেকেও পাহাড়ি মেয়েদের নিয়ে আসতেন পাপিয়া।

এদিকে শামিমা নূর পাপিয়া ওয়েস্টিন হোটেলে অবস্থানকালে কারা কারা তার কাছে  যেতেন, তাদের নাম হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে চেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, হোটেলে অবস্থানের সময় পাপিয়া কার কার সাথে দেখা করেছেন বা তার কাছে কারা কারা আসতেন, সে ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সিসি ফুটেজসহ প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে। একই সাথে এই হোটেলে তিনি কীভাবে বিল দিতেন, তার ক্যাশ মেমোও চাওয়া হয়েছে।
গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, তদন্তের স্বার্থে  যেসব তথ্যের প্রয়োজন তা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এসব ব্যাপারে পুরো তথ্য সংগ্রহ করে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।

এদিকে রাজনীতিতে শামীমা নূর পাপিয়ার উত্থান এবং তাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার পেছনে নরসিংদী ও ঢাকার বর্তমান ও সাবেক তিন সংসদ সদস্যের নাম এসেছে। তাদের মধ্যে ঢাকার সাবেক এক এমপি’র সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার কথা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন পাপিয়া।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com