মোদিকে কোনোভাবেই বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়া হবে না: কাসেমী
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘খুনি’ আখ্যা দিয়ে তাকে বাংলাদেশে কোনোভাবেই ঢুকতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব এবং হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর সভাপতি আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী।
তিনি বলেছেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একজন খুনি। ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর মোদি সরকার নির্যাতন হত্যা চালাচ্ছে। যে সময়ে বাংলাদেশে সম্প্রীতি বিরাজ করছে, সেই সময় দেশে কোনোভাবে খুনি মোদিকে ঢুকতে দেয়া হবে না।’
ভারতে দিল্লিসহ বিভিন্ন রাজ্যে মুসলমানদের ওপর চালানো হামলা, নির্যাতন ও হত্যার প্রতিবাদে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ইসলামী দলগুলো। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, ‘দিল্লিতে পরিকল্পিতভাবে মুসলমানদের ওপর হত্যা, নির্যাতনের প্রতিবাদে আমরা এখানে সমবেত হয়েছি। শুধু তাই নয়, মসজিদ আল্লাহর ঘর, ভারতে মসজিদে হামলা হচ্ছে। মুসলমানদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। ভারতের মুসলমানদের নাগরিকত্ব বাতিলের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এ ভারতকে মুসলমানরাই স্বাধীন করেছে। আর আজকে সেই মুসলমানদের সঙ্গে মোদি সরকার নিপীড়ন নির্যাতনমূলক আচরণ করছে। অথচ তারা নিজেরাই ছিলেন ইংরেজদের দালাল। সেই দালাল গোষ্ঠীই আজকে মুসলমানদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে।’
হেফাজতে ইসলামের এ নেতা বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, অবিলম্বে মুসলমানদের ওপর নির্যাতন, হত্যা বন্ধ করা হোক। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থা, মানবাধিকার সংস্থাসমূহ এ হত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হোক। বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানাই, আমাদের বাংলাদেশ সম্প্রীতির দেশ, আমাদের দেশ শান্তির দেশ। এ দেশে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানসহ মুসলিম, অমুসলিমরা সবাই একসঙ্গে বসবাস করছে। আমরা অমুসলিমদের ওপর কখনো আক্রমণ করি না।’
হুঁশিয়ারি দিয়ে কাসেমী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে সম্প্রীতি দেখতে চাই। আমরা সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনে বিশ্বাসী না। কিন্তু আমাদের দেশে এই খুনি মোদিকে আসতে দেয়া হলে এ দেশের সম্প্রীতি-সুনাম নষ্ট হবে। তাই তাকে কোনোভাবে বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়া হবে না।’
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি অনুরোধ করব, অনতিবিলম্বে নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশে আসার দাওয়াত নাকচ করে দেন। তা যদি করতে ব্যর্থ হন, তাহলে এ দেশের জনগণ মেনে নেবে না। প্রয়োজনে বিমানবন্দর ঘেরাও করতে বাধ্য হবে। তবুও কোনো ধরনের ছাড় দেয়া হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, অনতিবিলম্বে মুসলমানদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করা হোক। আমি মুসলিম ভাইদের বলব, আমরা মুসলমানরা সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী, সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাসী না। তাই এ দেশে কোনো মুসলিম অমুসলিমের ওপর আঘাত করব না। আমরা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী, সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। সেটা যেন আমরা বহাল রাখতে পারি। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, আমরা এ দেশে খুনি মোদিকে আসতে দেব। কোনোভাবেই খুনি মোদি যেন দেশে ঢুকতে না পারে।’
বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্য ইসলামী দলগুলোর নেতৃস্থানীয় বক্তাদের কণ্ঠেও একই রকম বক্তব্য উঠে আসে। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে বিশাল মিছিল বের হয়। যা বাইতুল মোকাররম সংলগ্ন ও পল্টন এলাকার সড়ক প্রদক্ষিণ করে।