মাদকচক্র দমনের নামে মার্কিন সেনা উপস্থিতি মানবে না মেক্সিকো
মেক্সিকোতে মার্কিন সেনাবাহিনীকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবম। লাতিন আমেরিকার ড্রাগ কার্টেলদের প্রতিহত করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক এক নির্দেশের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শেইনবম বলেন, মেক্সিকোতে মার্কিন সেনাবাহিনীকে আসতে দেওয়া হবে না। সহযোগিতায় আমাদের আপত্তি নেই, কিন্তু বিদেশি সেনা আগ্রাসন মেনে নেওয়া হবে না। এটা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বিদেশের মাটিতে সেনাবাহিনী প্রেরণের একটি আদেশনামায় স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প। আদেশের বিস্তারিত না জানালেও হোয়াইট হাউজের কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাষ্ট্রীয় স্বার্থ রক্ষাই তাদের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ট্রাম্পের নির্দেশনা সাগর ও বিদেশি ভূখণ্ডে সরাসরি সামরিক অভিযানের আনুষ্ঠানিক ভিত্তি প্রদান করছে।
বছরের শুরুতে আটটি ড্রাগ কার্টেলকে সন্ত্রাসী সংগঠন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নির্বাহী আদেশে সই করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যার ছয়টি দলই মেক্সিকোভিত্তিক।
এদুটো মিলিয়েই মেক্সিকোতে মার্কিন সেনা উপস্থিতি নিয়ে নিজের স্পষ্ট অবস্থান জানিয়ে দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।
কার্টেল দমনের বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তের বিষয়ে মেক্সিকো সরকারকে ওয়াশিংটনের তরফ থেকে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল বলে জানান শেইনবম। তবে কোনও সামরিক বাহিনীর অংশগ্রহণের বরাবরই তিনি বিরোধী ছিলেন বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, সেনা প্রেরণের বিষয়টি কোনও চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এই কথা যতবার আলোচনায় এসেছে, আমরা সবসময় আপত্তি জানিয়ে এসেছি।
বছরের শুরুতে শেইনবম বলেছিলেন, কার্টেলকে সন্ত্রাসী সংগঠন তকমা দিয়ে তাদের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলার কোনও সুযোগ দেওয়া হবে না।
এর আগে, বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, সন্ত্রাসী তকমা দেওয়ার কারণে গোয়েন্দা সংস্থা ও প্রতিরক্ষা বিভাগের মাধ্যমে কার্টেলকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে তাদের সহায়ক হবে।
তিনি বলেন, তাদেরকে কেবল মাদক কারবারি দল নয়, বরং সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।
বিগত কয়েকমাসে, অবৈধ অভিবাসন ও মাদক প্রবাহ রোধে একসঙ্গে কাজ করেছে মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সীমান্তরক্ষা বিভাগ জানায়, জুন মাসে সীমান্ত অতিক্রমের সংখ্যা ছিল রেকর্ড সর্বনিম্ন। গত সপ্তাহে মেক্সিকোতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত রোনাল্ড জনসন জানান, সীমান্তে ফেন্টানিল জব্দের পরিমাণ অর্ধেকেরও বেশি কমেছে।