অবশেষে বড় সুখবর পেল আর্জেন্টিনার ফুটবলভক্তরা

0

অবশেষে বড় সুখবর পেল আর্জেন্টিনার ফুটবলভক্তরা। দেশটির ঘরোয়া লিগে দীর্ঘ ১২ বছর সফরকারী দলের সমর্থকদের গ্যালারিতে বসে খেলা দেখায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। গতকাল (বৃহস্পতিবার) সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আজেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) সভাপতি ক্লদিও তাপিয়া। একইসঙ্গে দিনটিকে তিনি আলবিসেলেস্তে ফুটবলের ঐতিহাসিক দিন বলেও উল্লেখ করেছেন।

অবশ্য পুরোপুরিভাবে নিষেধাজ্ঞা কাটাতে আগে পরীক্ষা (পাইলট টেস্ট) দিতে হবে সমর্থকদের। চলমান ঘরোয়া লিগের পরবর্তী রাউন্ডের ফিক্সচারে লুনাস ও রিভারপ্লেট ক্লাবের মাঠে অনুষ্ঠিত দুটি ম্যাচে দর্শকদের আচরণ যাচাই করা হবে। সমর্থকদের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার প্রাথমিক পদক্ষেপে বড় ভূমিকা রয়েছে বিশ্বকাপজয়ী তারকা আনহেল ডি মারিয়ার।

সম্প্রতি ইউরোপীয় অধ্যায় শেষ করে এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকা ছেড়ে শৈশবের ঠিকানা আর্জেন্টিনার রোজারিও সেন্ট্রালে ফিরে এসেছেন। তাকে কেন্দ্র করে নতুন করে উন্মাদনা দেখা দিয়েছে দর্শকদের মাঝে। আর সেটাই অ্যাওয়ে ম্যাচে দর্শকদের মাঠে বসে খেলা দেখার নিষেধাজ্ঞা উঠাতে প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে বলে জানান এএফএ সভাপতি ক্লদিও তাপিয়া। তিনি জানান, ‘এটি ঐতিহাসিক দিন, কারণ আজ (গতকাল) সফরকারী সমর্থকদের মাঠে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রতিপক্ষ দর্শকদের উপস্থিতি নিয়ে প্রত্যাশা পূরণ হবে আয়োজক ক্লাবেরও।’

উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে আর্জেন্টাইন ফুটবলের প্রধান আরও জানান, ‘ফুটবল সমর্থক ও সমাজ এটাই চেয়ে আসছে। এতে দুই ধরনের (প্রতিপক্ষ) সমর্থকদের উপস্থিতিতে ম্যাচ আয়োজনের উপলক্ষ্য রয়েছে, তাই আমরা সফরকারী সমর্থকদের মাঠে ফেরানোর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বুয়েন্স আয়ার্সের নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী হাভিয়ের আলোনসো। তিনি বলেন, ‘নির্দিষ্ট কারণে সফরকারী সমর্থকদের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল, আমরা চাই না আবারও সেই পরিস্থিতিতে ফিরে যেতে। আমরা সহিংসতার সংস্কৃতি দূর করতে চাই। ১০ বছরের ‍পুরোনো মাদকীয় গান শোনা কিংবা তাতে অনুপ্রাণিত হয়ে কারও মৃত্যু দেখার প্রয়োজন নেই। এটি হতে হবে পারিবারিক উদযাপনের, যেখানে থাকবে পতাকা ও বাদ্যযন্ত্র (ড্রামস)।’

নিষেধাজ্ঞার কারণ, কী ঘটেছিল ২০১৩ সালে?

এএফএ ২০১৩ সালে দুটি রক্তক্ষয়ী ঘটনার পর প্রথম বিভাগের ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় সফরকারী দলের সমর্থকদের মাঠে উপস্থিতি হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। দুটি ঘটনাতেই জড়িত ছিল দর্শকরা। লানুস ও এস্তুদিয়ান্তেস ক্লাবের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যুক্ত হয় পুলিশ। ওই সংঘর্ষে নিহত হন এক সমর্থক। আরেক ম্যাচে গুলিবিদ্ধ হয়ে দেশটির জনপ্রিয় ক্লাব বোকা জুনিয়র্সের দুই সমর্থক নিহত হন। দুটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেবল স্বাগতিক ক্লাবের দর্শকদের মাঠে গিয়ে খেলা দেখার নিয়ম চালু করে এএফএ।

সফরকারী দলের সমর্থকদের মাঠে হাজির হওয়ার নিষেধাজ্ঞা প্রথমে আরোপিত হয় বুয়েন্স আয়ার্সে অনুষ্ঠিত ফুটবল ম্যাচে। পরে ধীরে ধীরে তাদের অনুসরণ করে একই নীতিমালা বেধে দেয় অন্য প্রদেশগুলো। সমর্থকদের মাঝে প্রাণহানি ঘটানো ওই ঘটনাকে ‘বারাব্রাভাস’ নামে অভিহিত করা হয়। যার মাধ্যমে উগ্র ও আগ্রাসী সমর্থকদের স্টেডিয়াম এলাকায় সহিংসতায় জড়ানোকে নির্দেশ করে।

উল্লেখ্য, বুয়েন্স আয়ার্স শহর থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে চলতি মৌসুমে ম্যাচ রয়েছে ডি মারিয়ার দল রোজারিও সেন্ট্রালের। সেখানে সফরকারী ক্লাবটির সাড়ে ৬ হাজার সমর্থককে স্টেডিয়ামে যাওয়ার অনুমোদন দিয়েছে এএফএ। একইভাবে আরও একটি ম্যাচে সফরকারী সমর্থকরা মাঠে হাজির হবেন কড়া নিরাপত্তার বেষ্টনিতে। দুটি ম্যাচেই দর্শকদের আচরণ পর্যবেক্ষণ করা হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.