ইউক্রেনকে মার্কিন প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দেবে ন্যাটো: ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইউক্রেনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্যাট্রিয়টসহ উন্নত অস্ত্র পাঠাবে। এগুলো বিতরণ করবে ন্যাটো। নতুন এক নিরাপত্তা চুক্তির আওতায় এই সরঞ্জাম পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, আমরা প্যাট্রিয়ট পাঠাচ্ছি ন্যাটোতে, পরে সেগুলো ইউক্রেনকে দেওয়া হবে। এর সম্পূর্ণ ব্যয়ভার ন্যাটো বহন করবে।
এই ঘোষণার আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ট্রাম্পের সঙ্গে এক ইতিবাচক সংলাপের কথা জানিয়েছিলেন। জেলেনস্কি জানান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ১০টি প্যাট্রিয়ট চেয়েছেন। কারণ গত সপ্তাহে রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ভয়াবহভাবে বেড়েছে।
জেলেনস্কি রোমে এক অনুষ্ঠানে বলেন, জার্মানি দুটি প্যাট্রিয়ট ব্যাটারির জন্য অর্থ দিতে রাজি হয়েছে এবং নরওয়ে একটি দেবে। ইউরোপের আরও অংশীদার এগিয়ে আসতে চায়।
ইউক্রেনে অস্ত্র পৌঁছানো বিলম্বিত হওয়ায় সম্প্রতি কিয়েভ উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। গত সপ্তাহে প্যাট্রিয়ট ইন্টারসেপ্টর এবং নির্ভুল আর্টিলারি গোলাবারুদসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু অস্ত্রের চালান স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতর।
এর পর রেকর্ড সংখ্যক ড্রোন হামলার মুখে পড়ে ইউক্রেন। জেলেনস্কি বলেন, শুধু প্যাট্রিয়ট সিস্টেমই এখন আমাদের জীবন রক্ষার প্রধান ভরসা।
মঙ্গলবার রাতে ইউক্রেন একযোগে ৭২৮টি ড্রোন হামলার শিকার হয়। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির মতে, রাশিয়া এই সংখ্যা হাজারে পৌঁছাতে চায়।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত জুনে ইউক্রেনে তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় নিহত ২৩২ ও আহত হয়েছেন ১ হাজার৩০০ জনের বেশি।
ট্রাম্প বলেছেন, আমরা অস্ত্র পাঠাতে বাধ্য। ইউক্রেন এখন ভয়ানকভাবে আক্রান্ত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, জার্মানি ও স্পেনসহ যেসব মিত্রদেশের কাছে আগে থেকেই প্যাট্রিয়ট আছে, তাদেরকে আমরা উৎসাহিত করছি যেন তারা সেগুলো দ্রুত ইউক্রেনে পাঠায়। আমরা চাই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
রুবিও আরও বলেন, পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র আর্থিকভাবে সহযোগিতা করবে যাতে তারা এসব প্রতিস্থাপন করতে পারে।
ইতোমধ্যে ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলো প্রতিরক্ষা ব্যয়ে জিডিপির ২ শতাংশ বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন এই লক্ষ্য অর্জনে জোর দিয়েছিল।
তবে শান্তি আলোচনার অগ্রগতির অভাবে ক্ষুব্ধ ট্রাম্প। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাম্প্রতিক এক ফোনালাপের পর তিনি বলেন, পুতিন প্রথমে বন্ধুত্বপূর্ণ ভঙ্গি দেখালেও বাস্তবে তা অর্থহীন হয়ে পড়েছে।
ট্রাম্প বলেছেন, আগামী সোমবার রাশিয়া ইস্যুতে তিনি একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা’ দেবেন। যদিও কী বিষয়ে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এদিকে মালয়েশিয়ায় রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে আলোচনার পর রুবিও জানান, আমরা শান্তি আলোচনার অগ্রগতির অভাবে হতাশ। রাশিয়ার তরফে নমনীয়তার ঘাটতি রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা কিছু নতুন ধারণা বিনিময় করেছি, যা আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে জানাব।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে সর্বাত্মক আক্রমণ চালায়। যুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশের মধ্যে আলোচনার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনও কার্যকর সমাধান দেখা যাচ্ছে না।
সূত্র: বিবিসি