মাঠের ক্রিকেটে সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছে না বাংলাদেশ দলের

0

মাঠের ক্রিকেটে সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছে না বাংলাদেশ দলের। স্মরণকালের সবচেয়ে খারাপ সময় পাড় করছে টাইগাররা। এর মাঝে ধস নেমেছে র‍্যাঙ্কিংয়ে। এমনকি শঙ্কার মুখে ২০২৭ বিশ্বকাপ।

টেস্ট আর টি-টোয়েন্টিতে যেমন-তেমন, ওয়ানডেতে একটা সময় বাংলাদেশ হয়ে উঠেছিল সমীহ জাগানিয়া। বিশেষ করে ঘরের মাঠে হয়ে উঠেছিল অনেকটাই অপ্রতিরোধ্য। তবে সেই গল্প এখন পুরনো।

শেষ দু’বছরে প্রিয় ফরম্যাট ওয়ানডেতে সময়টা সুখকর যাচ্ছে না টাইগারদের। শেষ ছয় ম্যাচে হার ছয়টাতেই, শেষ ৩৪ ম্যাচে মাত্র ৯ জয়ের বিপরীতে হার ২৪ ম্যাচে! যার প্রভাব পড়েছে র‍্যাঙ্কিয়ে।

ভারত বিশ্বকাপের পর চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও শান্তদের পারফরম্যান্স ছিল সাদামাটা। এরপর সিরিজ হেরেছে নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তানের বিপক্ষে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে শেষ সিরিজে মেলে ধবল-ধোলাইয়ের তিক্ততা।

এমন পারফরম্যান্সের প্রভাব পড়েছে আইসিসির বাৎসরিক র‌্যাঙ্কিংয়ে। আইসিসির প্রকাশিত নতুন র‌্যাঙ্কিংয়ে ৪ রেটিং পয়েন্ট হারিয়েছে বাংলাদেশ। যার ফলে এক ধাপ পিছিয়ে গেছে তারা।

৭৬ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে বর্তমানে ১০ নম্বরে অবস্থান করছেন নাজমুল হোসেন শান্ত-লিটন দাসরা। বাংলাদেশের উপরে উঠে এসেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আফগানিস্তান তো আগে থেকেই আছে ৭ নম্বরে।

র‍্যাঙ্কিংয়ে এমন বেহাল দশা এর আগে গত দু’দশকে কখনো হয়নি বাংলাদেশের। এবারের আগে সবশেষ ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ ১০ নম্বরে ছিল ২০০৬ সালে।

তবে সেই বছরের ১৬ অক্টোবর প্রথমবার আইসিসি ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ের ৯ নম্বরে উঠেছিল বাংলাদেশ। ১৯ বছর পর আবার বাংলাদেশ আবার ফিরল পুরোনো অবস্থানে।

মাঝে ২০১৫ সালে বিশ্বকাপের স্মরণীয় পারফরম্যান্সের পর পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানা তিনটি সিরিজ জিতে বাংলাদেশ উঠে আসে ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ের সাতে।

দু’বছর পর ২০১৭ সালে মে মাসে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ওঠে ৬ নম্বরে। ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ে যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অবস্থান। এরপর ২০২২ সালে আবারো ছয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ।

এরপর সময়ের সাথে শুধু অবনমনই হয়েছে। শান্তদের ছাপিয়ে গেছে গত বিশ্বকাপে খেলতে না পারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আফগানিস্তানও। এমন পরিস্থিতিতে হুমকির মুখে ২০২৭ বিশ্বকাপে সরাসরি বাংলাদেশের অংশগ্রহণ।

ক্রিকেটের বাইবেল খ্যাত সাময়িকী উইজডেনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৭ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ওডিআই র‍্যাঙ্কিংয়ের সেরা আটে থাকা দলই খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকা মহাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বিশ্বকাপে।

অবশ্য তবে দক্ষিণ আফ্রিকা সেরা আটে থাকলে ৯ম স্থানে থাকা দলও বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে পারবে। তবে বাংলাদেশের অবস্থান ১০ নম্বরে হওয়া যত ভয়ের কারণ! কেননা ধীরে ধীরে কমে আসছে ওয়ানডে সংখ্যা।

এফটিপি বলছে, ২০২৭ সালের মার্চের আগে পর্যন্ত ২৯ ওয়ানডে খেলার সুযোগ পাবে টাইগাররা। যেখানে ৮টি ওয়ানডেতে প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ে। বাকি ২১ ম্যাচে প্রতিপক্ষ সব বড় বড় দল।

যেখানে আছে পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রতিপক্ষ বিবেচনায় সিরিজগুলো বাংলাদেশের জন্য খুব একটা সহজ হচ্ছে না।

দুর্বিপাকে ঘুরতে থাকা বাংলাদেশ এসব সিরিজে নিজেদের মেলে ধরতে না পারলে বেশ বড় রকমের বিপদই অপেক্ষা করছে। আশানুরূপ ফল না এলে খেলতে হতে পারে বিশ্বকাপের র‍্যাঙ্কিংয়ের পাশাপাশি হুমকির বড় কারণ বাংলাদেশ ক্রিকেটের পালাবদল। বিগত দেড় দশক ধরে দেশের ক্রিকেটকে বয়ে নেয়া মুখগুলো একে একে হাঁটছেন অবসরের পথে।

২০২৫ সালেই অবসরের ঘোষণা দিয়ে ফেলেছেন তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিম। এদের মধ্যে মুশফিক এখন কেবল টেস্টই খেলছেন। আর সাকিব আল হাসান থেকেও নেই। এমতাবস্থায় একটু বেশিই চাপে বাংলাদেশ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.