হাসিনা ঘনিষ্ট আরো এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ফ্ল্যাট নিয়েছেন টিউলিপ
যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে দেশটির ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে একটি ফ্ল্যাট দিয়েছিলেন আবদুল মোতালিফ নামের একজন আবাসন ব্যবসায়ী। তবে ওই ফ্ল্যাটের বিনিময়ে কোনো অর্থ পরিশোধ করতে হয়নি তাকে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ ওই ব্যবসায়ীর।
শুক্রবার রাতে সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এবার তার একদিন না যেতেই যুক্তরাজ্যভিত্তিক আরেক সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে,
টিউলিপ তার খালার রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত আরো একজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ফ্ল্যাট নিয়েছেন।
এতে বলা হয়েছে, ২০০৪ সালে অর্থপ্রদান না করেই কিংস ক্রসের কাছে দুই বেডরুমের অ্যাপার্টমেন্ট গ্রহণ করেছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক। আর্থিক অপরাধ ও দুর্নীতির জন্য এরইমধ্যে টিউলিপের নাম বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যে খবরের শিরোনাম।
তবে এই ফ্ল্যাটটি সরাসরি টিউলিপ সিদ্দিককে দেয়া হয়নি। এটি দেয়া হয়েছিল টিউলিপের ছোট বোন আজমিনা সিদ্দিক রুপন্তিকে। টিউলিপের ছোট বোন আজমিনার বয়স যখন ১৮ বছর এবং অক্সফোর্ডে পড়াশোনা শুরু করতে চলেছেন তখন উত্তর লন্ডনের হ্যাম্পস্টেডের ফিঞ্চলে রোডে আজমিনাকে ফ্ল্যাট উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন মঈন গনি নামের একজন বাংলাদেশি আইনজীবী। যিনি হাসিনার সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাথে মঈন গনির একটি ছবিও প্রকাশিত হয়েছে। মঈন গনি ২০০৯ সালে আজমিনার কাছে ফ্ল্যাটটি হস্তান্তর করেছিলেন।
লন্ডনের ভূমি রেজিস্ট্রি নথিতে বলা হয়েছে, আজমিনার কাছে ফ্ল্যাটের স্থানান্তরটি আর্থিক মূল্যে হয়েছে এমন রেকর্ড নেই ভূমি রেজিস্ট্রি নথিতে। তবে একসময় ঐ ফ্ল্যাটটিতে টিউলিপ সিদ্দিক বসবাস শুরু করেন।
টিউলিপ ঠিক কখন ফ্ল্যাটে এসেছিলেন তা স্পষ্ট নয়। তবে ২০১২ সালে ডিসেম্বরের পরে তিনি যখন ওয়ার্কিং মেনস কলেজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে নিয়োগে পেয়েছিলেন তখন কোম্পানি হাউসে তার ঠিকানা হিসেবে ঐ ফ্ল্যাটটির ঠিকানা তালিকাভুক্ত করেছিলেন।
এতে আরো বলা হয়, ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে ক্যামডেন আর্টস সেন্টারের দাতব্য প্রতিষ্ঠান এবং মার্চ ২০১৪-এ হ্যাম্পস্টেড ওয়েলস এবং ক্যাম্পডেন ট্রাস্ট, আরেকটি অলাভজনক ট্রাস্টি হওয়ার ক্ষেত্রেও এই ফ্ল্যাটের ঠিকানা ব্যবহার করেছিলেন টিউলিপ।
টিউলিপের স্বামী ক্রিশ্চিয়ান পার্সিও ২০১৬-এর শেষের দিকে এটিকে তার ঠিকানা হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছিলেন। সেই সময় পর্যন্ত সিদ্দিক হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্নের লেবার এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তবে আজমিনা ২০২১ সালে ৬৫০,০০০ পাউন্ডে পরে এ বাসস্থান বিক্রি করেন।
আজমিনার এই ফ্ল্যাটটির বিষয়ে টিউলিপ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে যে, তিনি একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তার বোনের সম্পত্তিতে বসবাস করেছিলেন।
সূত্র: যুগান্তর