ডাকাতি করে নিতে পারলে জনগণের ভোটের আর কি দরকার?
এদেশের জনগণের প্রতি আওয়ামী লীগের যে কোনো শ্রদ্ধা নেই তা আবারও পরিষ্কার হয়ে গেল। এবার জনগণের মতামত ও অধিকারকে সরাসরি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালেন বিনাভোটের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সরাসরিই বলে দিয়েছেন-নির্বাচনে জনগণের ভোট আর তাদের দরকার নাই।
শনিবার সন্ধ্যায় গণভবনে অনুষ্ঠিত মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভা শেষে শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণ এখন পর্যন্ত সরকারের প্রতি আস্থা রেখেছে। কে ভোট দিলো, কে দিলো না তা বিবেচনা করে না আওয়ামী লীগ।
দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলসহ সাধারণ মানুষ বিগত ১১ বছর ধরেই বলে আসছেন, এদেশের জনগণের মতামত ও অধিকারের প্রতি আওয়ামী লীগের কোনো শ্রদ্ধা নেই। তারা সব সময়ই জনমতকে উপেক্ষা করে যাচ্ছে। জনগণের ভোট ছাড়াই তারা বার বার জোর করে ক্ষমতা দখল করেছে।
বিগত নির্বাচনগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায়, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। জনগণ ভোট দিয়েছিল বিএনপি-জামায়াতকে। কিন্তু ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন ভোটের ফলাফল পাল্টে দিয়ে বিজয়ী করেছিল আওয়ামী লীগকে। আর এ কাজে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছিল প্রতিবেশি দেশ ভারত।
এরপর, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে তো জনগণ ভোট দেয়নি। শেখ হাসিনার ১৫৪ এমপি ছিল একেবারেই ভোট ছাড়া। তাদের আসনে নির্বাচনই হয়নি। আর বাকীরাও জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। নিজেদের মত করে ব্যালটে সিল মেরে তাদেরকে বিজয়ী ঘোষণা করেছিল শেখ হাসিনা। সারা বিশ্বই শেখ হাসিনার এই কুকর্ম দেখেছে।
এরপর, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনেতো ফজরের আগেই ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছিল। শেখ হাসিনার নেতাকর্মীরা পুলিশের সহযোগিতায় রাত ১২টার পর নৌকায় সিল মারা করে ফজরের আগেই বাক্স ভরে রাখে। সকাল ৮ টায় ভোটাররা কেন্দ্র গিয়ে দেখে তাদের ভোট দেয়া হয়ে গেছে।
এছাড়া, ভোটের একই দৃশ্য দেখা গেল ঢাকা দুই সিটি নির্বাচনেও। শেখ হাসিনার দলের নেতাকর্মীরা ছাড়া অন্য কেউ ভোট দিতে পারেনি।
শনিবার রাতে শেখ হাসিনা যথাযথই বলেছেন যে, কে ভোট দিলো, কে দিলো না তা বিবেচনা করে না আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনা সত্য কথাটাই প্রকাশ করেছেন। আওয়ামী লীগের এখন আর জনগণের ভোটের দরকার নাই। কারণ, নির্বাচনে কিভাবে যে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় আসা যায় সেই কৌশল জেনে গেছে আওয়ামী লীগ। এখন তাদের আর টেনশন নেই। আর যারা ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় আসতে পারে তাদেরতো আর জনগণের ভোটেরও দরকার নাই।
শেখ হাসিনার এই বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট হচ্ছে যে, আগামীতে যেসব নির্বাচন হবে সবগুলোতেই তারা ভোটডাকাতি করবে। শেখ হাসিনা মূলত এই কথার মাধ্যমে দলের প্রার্থীদেরকে ভোটডাকাতিরই ইঙ্গিত দিলেন।