ইরানে নারীরা নতুন নৈতিকতা আইন লঙ্ঘন করলে মৃত্যুদণ্ড

0

ইরানে নারীরা নতুন নৈতিকতা আইন লঙ্ঘন করলে মৃত্যুদণ্ড কিংবা সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ডের শাস্তি পেতে পারেন। আগামী সপ্তাহে কার্যকর হতে যাওয়া এই আইন ইরানি নারীদের স্বাধীনতার জন্য বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।

এ মাসের শুরুতে ইরানের কর্তৃপক্ষ নতুন আইন পাস করেছে। এতে ‘শালীনতা ও হিজাবের সংস্কৃতি’ বাস্তবায়নে কঠোর শাস্তির বিধান রেখেছে। এতে ‘অশালীন পোশাক, বেহায়াপনা বা খোলামেলা পোশাক পরিধান’- এর জন্য সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৫০০ পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা, বেত্রাঘাত এবং ৫ থেকে ১৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

নতুন আইনের ৩৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, যারা অশালীনতা, খোলামেলা বা খারাপ পোশাক আন্তর্জাতিক মাধ্যম বা নাগরিক সমাজ সংস্থার কাছে প্রচার করবে, তারা দশ বছর কারাদণ্ড এবং জরিমানার শাস্তি পেতে পারে।

আইনের ২৮৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যারা ‘পৃথিবীতে দুর্নীতি’ ছড়ানোর জন্য দায়ী বলে বিবেচিত হবে, তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে।

ব্রিটিশ মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, এই ধারা অনুযায়ী ইরানের বাইরে কোনও মাধ্যমে নিজের খোলামেলা ছবি পাঠানো বা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে অংশগ্রহণের জন্য নারীদের মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি হতে পারে।

এছাড়া, আইনটি এমন ব্যক্তিদের জন্য দায়মুক্তি রাখে যারা ‘ধর্মীয় দায়িত্ব’ পালনের অংশ হিসেবে নারীদের ওপর হিজাব বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নেবেন। বাধ্যতামূলক হিজাব অমান্যকারী নারীদের গ্রেফতার বা হয়রানির প্রচেষ্টা বন্ধে যারা হস্তক্ষেপ করবে, তাদেরও কারাদণ্ড বা জরিমানা হতে পারে।

ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, গণপরিবহনের চালক, সংবাদমাধ্যম, সম্প্রচারমাধ্যম এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যদি আইন লঙ্ঘনকারী নারীদের বিষয়ে জানাতে ব্যর্থ হয়, তবে তারাও শাস্তির আওতায় আসবে।

মানবাধিকার কর্মীদের প্রতিক্রিয়া

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মধ্যপ্রাচ্যের ডেপুটি ডিরেক্টর ডায়ানা এলতাহাওয়ি বলেন, এই লজ্জাজনক আইন নারীদের বিরুদ্ধে নিপীড়নের মাত্রা আরও বাড়াবে। নারীদের জীবনকে অসহনীয় করে তুলতে এই আইন একটি চূড়ান্ত অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

ইরানি সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও মানবাধিকার আইনজীবীরা এই আইন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন, এটি দেশটির নারীদের ওপর বিধিনিষেধ আরও কঠোর করার প্রচেষ্টা। মানবাধিকার আইনজীবী সাঈদ দেহঘান বলেন, আইনের বেশিরভাগ ধারা ইরানের সংবিধানের মৌলিক নীতির পরিপন্থি। এই আইন নাগরিকদের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং তাদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করবে।

তিনি আরও বলেন, বাধ্যতামূলক হিজাবের বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ডের মতো শাস্তি প্রদান আইনের অপব্যবহার।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com