নিজের অধিকার নিজেদেরই প্রতিষ্ঠা করতে হবে: গয়েশ্বর
নিজের অধিকার নিজেদেরই প্রতিষ্ঠা করতে হবে জানিয়ে কোনো ভিনদেশি এসে আমার-আপনার অধিকার আদায় করে দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সমস্যা আমাদেরই সমাধান করতে হবে। বাইরে থেকে কেউ এসে সেটা করবে না। নিজের অধিকার নিজেদেরই প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ভারত আমাদের জন্য কিছু করবে না, করেও না।’
গতকাল শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘মানুষ হিসেবে মানুষকে ভালোবাসতে হবে। সম্প্রদায়ের প্রতি সম্প্রদায়ের টান থাকতে হবে। আমাদের সম্প্রদায়ের নেতারা সেটা রাখেন না। ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকারের ১৬ বছরে রাজপথে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ ক্যাডাররা আমাকে হামলা করে রক্তাক্ত করেছে, আমার বাড়িতে হামলা হয়েছে, আমার পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। কিন্তু দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের এত সংগঠন, এসব সংগঠনের নেতারা নিন্দা বা প্রতিবাদ অথবা সহানুভূতি-সমবেদনা জানিয়ে কোনো বিবৃতি দেননি। কারণ, আমি বিএনপির রাজনীতি করি। এই মানসিকতা থেকে আগে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ধর্ম একটা জীবন ব্যবস্থা। এর মধ্য দিয়ে মানুষ মানুষকে ভালোবাসতে শেখে। জন্মসূত্রে কোনো মানুষ ছোট না, আবার বড়ও না। আমরা মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ করতে চাই না। আমরা সবাই বাংলাদেশি। আমাদের বাংলাদেশ, আমাদের ঐতিহ্য- এটা আমাদের অর্জন। এটা আমাদেরকেই রক্ষা করতে হবে।’
মন্দিরে বসে রাজনীতির চর্চা না করার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নীতি-নির্ধারক বলেন, ‘ধর্ম যেমন রয়েছে, যার যার রাজনীতিও তেমন আছে। তবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি নয়। মসজিদ-মন্দিরে রাজনীতির চর্চা মঙ্গল বয়ে আনে না। সুতরাং মন্দির কিংবা মন্দির প্রাঙ্গণে রাজনীতি চর্চা কাম্য নয়।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো- মানুষের এই ভোটের অধিকারের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য আমরা দীর্ঘ সময় ধরে লড়াই-সংগ্রাম করছি। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের বিদায়ের পর দেশে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। জনগণের প্রত্যাশা, এ সরকার দ্রুত সময়ে একটি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। যে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি পার্লামেন্ট গঠিত হবে। নির্বাচিত সেই সরকার যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা লড়াই করছি, সে লড়াইয়ের সুফল প্রতিটি মানুষের দুয়ারে পৌঁছে দেবে।’
মতবিনিময় শেষে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন এবং আগত পূণ্যার্থীদের শুভেচ্ছা জানান। তিনি এর আগে ঢাকেশ্বরী পূজামণ্ডপে পৌঁছালে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর ও সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব, সাধারণ সম্পাদক তাপস চন্দ্র পালসহ নেতারা স্বাগত জানান।