বাংলাদেশ হলো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ স্থান: কর্নেল অলি

0

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ডক্টর কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বীর বিক্রম বলেছেন, গত ৫ আগস্ট থেকে অদ্যাবধি ভারতের বিভিন্ন মিডিয়ায় বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর জুলুম হচ্ছে, তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে হৈচৈ করছে এবং যে ধরনের সংবাদ প্রকাশ করেছে সেগুলো ভিত্তিহীন। তবে, কিছু কিছু জায়গায় ক্ষুব্ধ জনতা আওয়ামী জুলুমবাজ এবং গণহত্যাকারীদের উপর চড়াও হয়েছে। জনগণ ধর্মের বিবেচনায় কারও ক্ষতি সাধন করেনি। বরং গণহত্যাকারীর সহযোগীদের উপর আক্রমণ করেছে। এটা যুগে যুগে অনেক দেশে হয়েছে। আমি আবারও বলছি বাংলাদেশ হলো- সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ স্থান।

শনিবার (১৭ আগস্ট) সকালে রাজধানীর মগবাজারের এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

কর্নেল অলি বলেন, বিগত ১৫ বছর যাবৎ আওয়ামী সরকার কর্তৃক প্রত্যেক স্তরে কিছু কিছু সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যবহার করে বিনা ভোটে ক্ষমতা দখল, ব্যাংকের টাকা লুণ্ঠন, দুর্নীতি, টাকা পাচার, চাকরিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্য, বিরোধী দলগুলোর উপর অমানবিক অত্যাচার, নির্যাতন, গুম, খুন, চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি, জায়গা দখল, দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি, মানব অধিকার লঙ্ঘন, সব ক্ষেত্রে বিচারহীনতার পুঞ্জীভূত বেদনা সহ্য করে মানুষ নীরব ছিল।

তিনি বলেন, কিন্তু গত ৫ আগস্ট, ২০২৪ ছাত্র-জনতার চরম আত্মত্যাগের মাধ্যমে এ দেশের মানুষ আরেকবার দেশ স্বাধীন করেছে। এ ধরনের সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগ পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। আমাদের ছেলেমেয়েরা এ দেশের উপযুক্ত উত্তরসূরি। বর্তমান প্রজন্মকে নিয়ে আমরা গর্বিত।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এলডিপির মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী ড. রেদোয়ান আহমেদ, এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল আলম তালুকদার, ড. নেয়ামূল বশির, ড. আওরঙ্গজেব বেলাল, উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব বিল্লাল হোসেন মিয়াজি প্রমুখ।

এর আগে এলডিপির পক্ষ থেকে বিগত ৮ আগস্ট, ২০২৪ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে কিছু পরামর্শ আমরা দিয়েছিলাম, কিছু কিছু বাস্তবায়ন হয়েছে, অনেকগুলো এখনো হয়নি।

সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবিগুলো :

১. ২০০৯ সালের পর থেকে স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের আমলে গণহত্যাকারী, দেশের সম্পদ লুণ্ঠনকারী, দুর্নীতিবাজ নেতা, চেয়ারম্যান, মেম্বার, এমপি, সাবেক এমপি, সাবেক মন্ত্রীসহ সব অবৈধ সুবিধাভোগীদের গ্রেপ্তার করার পূর্ণ মাত্রায় কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে না কেন? অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করে তাদের ব্যাংক হিসাব ও সম্পদ বাজেয়াপ্ত করাও প্রয়োজন।

২. হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময় যে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল তাদের বিচারের জন্য কমিশন গঠন করা হোক। ৩. পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ অফিসারসহ অন্যদের হত্যার বিচারের জন্য কমিশন গঠন করা হোক। ৪. গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনাসহ দায়ী মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের পদক্ষেপ নেওয়া হোক। ৫. সাবেক প্রধান বিচারপতি খাইরুল হক ও বিচারপতি মানিক জনবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। এ দুজনের বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। ৬. ২০০৯ সালের পর থেকে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে যে সব রাজনৈতিক মিথ্যা মামলা বা গায়েবি মামলা হয়েছে তা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। ৭. পুলিশে অসংখ্য আওয়ামী ক্যাডার লুকিয়ে আছে। যে সব পুলিশ কর্মকর্তা ও মন্ত্রী গণহত্যার জন্য উসকানি দিয়েছে, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের কঠোর বিচারের আওতায় আনতে হবে। ৮. স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গ সংগঠনগুলো গণহত্যাকারী, দুর্নীতিগ্রস্ত, টাকা লুণ্ঠনকারী ও টাকা পাচারকারী সন্ত্রাসী সংগঠনে পরিণত হয়েছে। তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। এ ব্যাপারে আমরা বিগত ৮ আগস্ট সর্বপ্রথম দাবি জানাই।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এলডিপি এবং জনগণের পক্ষে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সুপারিশগুলো :

১. ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ খুবই জরুরি, ১৮ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ। বিভিন্ন দেশের সংবিধান পর্যালোচনা করে আমাদের প্রয়োজনে কয়েকটি প্রদেশ করতে হবে এবং ওই আলোকে নতুন সংবিধান তৈরি করতে হবে। তাহলে ঢাকা বসবাসের উপযুক্ত নগরী হবে। জনগণের সমস্যার লাঘব হবে। একজন ঝাড়ুদারের চাকরি হলেও ঢাকা থেকে অনুমোদন নিতে হয়। তাহলে নতুন বাংলাদেশ কীভাবে বিনির্মাণ করবে।

২. প্রত্যেক বিভাগে হাইকোর্ট স্থাপন করতে হবে।

৩. স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতকে গুরুত্ব দিয়ে প্রত্যেক বিভাগে অন্তত ৩/৪টি আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল নির্মাণ করতে হবে। সেই সঙ্গে বিদেশ থেকে অভিজ্ঞ বাংলাদেশি ডাক্তারদের দেশে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে হবে।

৪. বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন, নির্বাচন কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সব কমিশনকে স্বাধীন এবং রাজনীতিমুক্ত রাখতে হবে। একইসঙ্গে তাদের দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

৫. সব স্তরে পদায়নে রাজনীতিমুক্ত রাখার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের আমলে যারা তাঁবেদারী করেছে তাদের প্রমোশন দিয়েছে। আশাকরি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তা শুধরানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। আগামীতে যেন কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা কোনো দলের সেবাদাস না হয় বা দলের সদস্য না হয়, তা নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশের মাটিতে আর স্বৈরশাসক, দুর্নীতিবাজ, টাকা পাচারকারী, লুটেরাদের স্থান হবে না।

৬. খুনি, লুটেরা ব্যবসায়ীরা রাতারাতি রং পরিবর্তন করছেন। সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ প্রাপ্ত, সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পোস্টিং করে দেওয়াটা শুধু সমাধান নয়। ভুলবশত কোনো বদলি বা পদায়ন হয়ে থাকলে তা পুনরায় শুধরে নিয়ে তদন্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। যে সব কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছে, অবসর দেওয়া হয়েছে বা বরখাস্ত করা হয়েছে, তাদের বিগত দিনের অপকর্ম এবং দুর্নীতির তদন্ত করতে হবে। তাদের নিকট থেকে জনতার টাকা উদ্ধার করে সরকারী কোষাগারে জমা করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ গণপূর্ত ও রাজউকের কথা বলা যায়।

৭. দুর্নীতিমুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, জবাবদিহিমূলক এবং সুশাসন নিশ্চিত করার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ করা আমাদের সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য। নীতি ও নৈতিকতা তলানিতে ঠেকেছে। তা পুনরায় সমাজে ফিরিয়ে আনতে হবে। অন্যথায় নতুন বাংলাদেশ গঠন হবে না।

৮. নতুন প্রজন্মের আধুনিক চিন্তাধারা, টেকনোলজি ও পুরাতনদের অভিজ্ঞতার সমন্বয় ঘটিয়ে নতুন বাংলাদেশ গঠন করা একান্ত প্রয়োজন।

গুরুত্বপূর্ণ কিছু মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সুপারিশগুলো :

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় :

১. ১৯৯৬ সাল থেকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা কোটায় অসংখ্য আওয়ামী লীগের দলীয় ক্যাডারদের চাকরি প্রদানের অভিযোগ রয়েছে, বিষয়টি তদন্তের অনুরোধ জানাই। তবে, অহেতুক কোনো নিরপরাধ কর্মকর্তা/কর্মচারী যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

২. বিভিন্ন উপজেলা/পৌরসভা/সিটি করপোরেশন/জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বিরোধী দলের আন্দোলন ও কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় যারা অস্ত্র প্রদর্শন করেছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে এবং তাদের কাছে থাকা অস্ত্র-গুলি উদ্ধার করতে হবে।

৩. চাঁদাবাজরা জনগণের শত্রু তাদের চিহ্নিত করুন, গ্রেপ্তার করুন এবং কঠোর শাস্তির পদক্ষেপ নিন।

৪. উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত স্বৈরাচারী সরকারের নেতাদের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা/গ্রেপ্তার করতে হবে। চিরদিনের জন্য এই অমানুষদের শায়েস্তা করতে হবে।

৫. সব পুলিশ কর্মকর্তা অর্থাৎ থানার ইনচার্জ বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে পদায়ন করা হবে এবং তারাই নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে আইজি পদ পর্যন্ত প্রমোশন পেতে পারে, সে সুযোগ রাখতে হবে।

৬. কনস্টেবল পদের জন্য বিশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতা ঠিক করতে হবে, তারাই ক্রমান্বয়ে প্রমোশনের মাধ্যমে এসআই পর্যন্ত হতে পারবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক নির্ধারণ করা যেতে পারে।

৭. মাদক দ্রব্যের বিস্তার রোধ করতে হবে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ মদের বার, ক্যাসিনো ও ক্লাব সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন অনৈতিক কাজ হচ্ছে, যা ইসলাম ধর্ম পরিপন্থি। অনতিবিলম্বে এগুলো বন্ধ করে দিতে হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় : ১. স্বৈরাচারী, গণহত্যাকারী, গুম-খুন ও আয়নাঘরের কারিগর শেখ হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিলে স্বাভাবিকভাবে তাদের সঙ্গে সম্পর্কের চিড় ধরবে। তাকে যথা শিগগির ভারত থেকে এনে গণহত্যা, দুর্নীতি এবং দেশের সম্পদ লুণ্ঠন, বিডিআর হত্যা, হেফাজত ইসলামের হত্যাকাণ্ডের দায়ে বিচারের সম্মুখীন করতে হবে।

২. যে সব বাংলাদেশি হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূত প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের পক্ষ অবলম্বন করেছিল, তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে। মনে রাখবেন, অবসর নয়, বদলি নয়, সোজা বাড়ি।

আইন মন্ত্রণালয় : ১. ২০০৯ সালের ৬৩ নং ‘জাতির পিতার পরিবার-সদস্যগণের নিরাপত্তা আইন’-সহ অন্যান্য স্বেচ্ছাচারী আইন বাতিল করার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ২. রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য এবং জনগণের নিকট জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। ৩. একাধিক দ্রুত বিচার আদালত স্থাপন করে উপযুক্ত সাক্ষী-প্রমাণের ভিত্তিতে টাকা পাচারকারী, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা ও গণহত্যাকারীদের বিচার সম্পন্ন করতে হবে। 8৪. র‍্যাব ও পুলিশের ক্ষমতা প্রয়োগের সীমানা নির্ধারণ করতে হবে। মিথ্যা ও গায়েবি মামলা, বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার ইত্যাদি অসাংবিধানিক কার্যকলাপ বন্ধে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা এবং কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ৫. শুধু বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের নয়, সব সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব ও পরিবারের সদস্যদের দ্বৈত নাগরিকত্বের বিবরণ চাইতে হবে। দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দেশে বা বিদেশে অবৈধ সম্পদের অস্তিত্ব প্রমাণিত হলে তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে। ভবিষ্যতে ওই ধরনের ব্যক্তি বা তার পরিবারবর্গ কোনো ধরনের সরকারি চাকরি ও ব্যাংক ঋণ পাওয়ার অযোগ্য বলে পরিগণিত হবে। ৬. ভবিষ্যতে সবপর্যায়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন করতে হবে। দুষ্কৃতকারী ও আইন লঙ্ঘনকারীদের জন্য কঠিন শাস্তির বিধান রাখতে হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয় : ১. আয়করের আওতা বৃদ্ধি করতে হবে। তবে, সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবীদের ব্যক্তি আয়করের ক্ষেত্রে ব্যাপক বৈষম্য রয়েছে। বিশেষ করে আয়কর আইন-২০২৩ এর মাধ্যমে বেসরকারি চাকরিজীবীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের উপর বৈষম্যমূলক কর আরোপ করা হয়েছে। এ ধরনের আইন বাতিল করে সব চাকরিজীবীদের জন্য একই ধরনের আয়কর আইন প্রণয়ন করতে হবে। ২. ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া বিভিন্ন দেশের অনেক নাগরিক বাংলাদেশে কর্মরত। রেমিট্যান্স হিসাবে পাওয়া আমাদের বৈদেশিক আয়ের সিংহভাগ তারাই নিয়ে যায়, এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নিতে হবে। ৩. অসাধু ব্যবসায়ী ও ব্যাংক লুণ্ঠনকারীদের মাধ্যমে পাচারকৃত অর্থের পরিমাণ প্রায় ৯৪ বিলিয়ন ডলার। এ অর্থ ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় : ১. এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা কমিটিতে প্রতিষ্ঠাতা ও অংশীজনদের বিতাড়িত করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে আওয়ামী লীগের দলীয় ক্যাডারদের পদায়ন করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে এ সব কমিটি সংশোধনের ব্যবস্থা নেওয়া হোক। (ক) স্কুলগুলোর সভাপতি পদের জন্য ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রি পাস বাধ্যতামূলক করতে হবে। (খ) কলেজগুলোর সভাপতি পদের জন্য- মাস্টার্স ডিগ্রি পাস বাধ্যতামূলক করতে হবে। ২. প্রাইমারি স্কুল, হাইস্কুল এবং কলেজগুলোর পাঠ্য পুস্তকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ইসলাম ধর্ম ও রাষ্ট্রীয় স্বার্থ পরিপন্থি বিষয়গুলো বাদ দিয়ে যুগোপযোগী করতে হবে। ৩. এই মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সব প্রতিষ্ঠান থেকে রাজনৈতিক ক্যাডারদের বরখাস্ত করে তাদের দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের তদন্ত করে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় : ১. অবস্থার উন্নতি হলে পর্যায়ক্রমে প্রত্যেক সিটি করপোরেশন/উপজেলা/ পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদগুলোর নির্বাচন পুনরায় ব্যবস্থা করতে হবে।

পরিশেষে সেনাবাহিনীকে বলতে চাই, আওয়ামী স্বৈরাচারী, গণহত্যাকারী, টাকা লুণ্ঠনকারী, দুর্নীতিবাজ সাবেক মন্ত্রী, এমপি বা নেতা যারা বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছে বা লুকিয়ে আছে তাদের আয়না ঘরে রেখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেন এবং আইএসপিআরের মাধ্যমে সংবাদপত্রে খবরগুলো প্রকাশ করুন। এতে আপনাদের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com