ঢাকাই সিনেমা কি কেবল ঈদকেন্দ্রিক হয়ে গেল?
দুই বছর আগে ‘পরাণ’ দিয়ে শুরু হয়েছিল আলোচনাটা। এরপর গত বছর ‘প্রিয়তমা’ ও ‘সুড়ঙ্গ’ মুক্তির পর আবারও জোরেশোরে শুরু হয় সেই আলোচনা—ঢাকাই সিনেমা কি কেবল ঈদকেন্দ্রিক হয়ে গেল? বছর ঘুরেছে, তবে চিত্রটা বদলায়নি। চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে ২৫টির বেশি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে কিন্তু আলোচনায় ছিল কেবল পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় মুক্তি পাওয়া কয়েকটি সিনেমা।
কয়েক বছর আগেও সিনেমা মুক্তির সংখ্যা কমছিল। চলতি বছরের প্রথম ভাগে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলা সিনেমা মুক্তি পেলেও গুণগত মানের বিচারে অবস্থা খুব একটা বদলায়নি।
সবচেয়ে হতাশার ব্যাপার হলো, গত ছয় মাসে মুক্তি পাওয়া সিনেমার বড় অংশ প্রেক্ষাগৃহে এসেছে তেমন কোনো প্রচার ছাড়াই। কেবল ঈদকেন্দ্রিক সিনেমাগুলোই কিছুটা পরিকল্পনামাফিক প্রচার চালিয়েছে।
ঈদে সিনেমা মুক্তি দিলে দর্শক পাওয়া যায়—মূলত এ ধারণা থেকেই প্রযোজকেরা নিজেদের সিনেমা মুক্তির জন্য বড় উৎসব বেছে নেন। যার সবচেয়ে বড় উদাহরণ—গত ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়েছিল ১১টি সিনেমা! এর মধ্যে ‘রাজকুমার’, ‘কাজলরেখা’, ‘ওমর’ ও ‘দেয়ালের দেশ’ ছাড়া কোনো সিনেমাই সেভাবে সাড়া ফেলতে পারেনি।
এর মধ্যে শরীফুল রাজ অভিনীত সিনেমাই ছিল তিনটি! বড় কোনো উৎসবে এক নায়কের তিনটি সিনেমা—এ নজির দুনিয়ার আর কোথাও আছে কি না, সন্দেহ। বিষয়টি নিয়ে অবশ্য প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজ নিজেই বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন।
গত ঈদুল ফিতরে ১১টি সিনেমা মুক্তি দেওয়ার ঘটনা থেকে এবার শিক্ষা নিয়েছেন প্রযোজকেরা, ঈদুল আজহায় তাই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে পাঁচটি সিনেমা।
অনুমিতভাবেই শাকিব খান অভিনীত, রায়হান রাফী পরিচালিত তুফান নিয়েই দর্শকের আগ্রহ ছিল বেশি, দেশের সবচেয়ে বেশি হলে মুক্তিও পেয়েছিল সিনেমাটি। গত বছর যেমন শাকিব খান অভিনীত ‘প্রিয়তমা’ আর আফরান নিশো অভিনীত ‘সুড়ঙ্গ’ একসঙ্গে মুক্তি পেয়েছিল। দুই তারকার ভক্তদের মধ্যে ‘ভার্চ্যুয়াল যুদ্ধ’ চললেও মোটাদাগে এই প্রতিযোগিতা বরং সিনেমার জন্যই সুফল বয়ে এনেছিল। কিন্তু এবার ‘তুফান’-এর সঙ্গে জোর টক্কর দেওয়ার মতো সিনেমা ছিল না।
ঈদ ছাড়া চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে যে সিনেমাগুলো মুক্তি পেয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আলোচিত হয়েছে শৈল্পিক ঘরানার কয়েকটি সিনেমা। এর মধ্যে নূরুল আলম আতিকের ‘পেয়ারার সুবাস’ ও ধ্রুব হাসানের ‘ফাতিমা’ উল্লেখযোগ্য। দুই সিনেমাই বিদেশি বিভিন্ন উৎসবে পুরস্কৃত হয়েছে; তবে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পর খুব বেশি দর্শক পায়নি।