ব্যাংকিং খাতের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে ঋণখেলাপিরা

0

সরকার আগামী অর্থবছর শেষে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামাতে চাইলেও তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বাজেটে নেই। মূল্যস্ফীতি কমাতে সবার আগে বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। ডলারের দর স্থিতিশীল করতে হবে। গতকাল ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত বাজেট আলোচনায় অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা এমন মত দেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এবারের বাজেট গতানুগতিক। বাজেটের স্লোগানে সুখ ও সমৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। তবে গরিবদের সুখী হওয়ার মতো কিছু নেই বাজেটে। এ বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রিজার্ভের পতন ঠেকানো এবং জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। এতে বেসরকারি খাতের ঋণ পেতে বাধার মুখে পড়তে হবে।

সাবেক গভর্নর বলেন, প্রত্যক্ষ কর না বাড়িয়ে বাজেটে ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। একটি রুটি কিনলে অতি দরিদ্রকে যে ভ্যাট দিতে হবে, অনেক ধনী ব্যক্তিকেও একই ভ্যাট দিতে হবে। তিনি বলেন, সরকারের ব্যয় যুক্তিসংগত করতে হবে। কালো টাকা তৈরির সর্বোত্তম উপায় হলো প্রকল্প। সুতরাং, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাদ দিতে হবে। আর্থিক খাত সংস্কারে জোর দিতে হবে।

মূল প্রবন্ধে গবেষণা সংস্থা সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এসেছে। তিন বেলা থেকে এখন অনেকে দুই বেলা খাচ্ছেন। মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে হলে বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক উৎকর্ষের অভাবে ব্যাংকিং খাতে সমস্যা। বাজেটে এ খাতের সংস্কারের পদক্ষেপ নেই। যারা ঋণখেলাপি, তারাই ব্যাংকিং খাতের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। ঋণখেলাপি হওয়া এখন প্রবণতায় পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো দরকার ছিল। সর্বোচ্চ স্তরের কর ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। আবার বিনা প্রশ্নে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে সৎ করদাতারা নিরুৎসাহিত হবেন। তারাও মনে করবেন, কিছুদিন অপেক্ষা করলে ১৫ শতাংশ হারে কর দিতে পারবেন। সামাজিক নিরাপত্তায় পেনশন, সঞ্চয়পত্রের সুদসহ সব মিলিয়ে বাজেটের ১৭ শতাংশ ব্যয় দেখানো হয়েছে। তবে প্রকৃতপক্ষে ব্যয় ৯ শতাংশ, যা বাড়ানো দরকার ছিল।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.