১৮ বছর বয়সে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত রাইসিকে বিয়ে করেছিলেন জামিলেহ আলামলহোদা

0

রানের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল শহর মাশহাদে ১৯৬৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন জামিলেহ আলামলহোদা। একই শহরে জন্মগ্রহণ করেন তার স্বামী রাইসিও। জামিলেহ শহীদ বেহেশতি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার দর্শনে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।

জামিলেহ আলামলহোদা ১৮ বছর বয়সে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বিয়ে করেছিলেন।

এই দম্পতির দুটি কন্যাসন্তান আছে। তাদের দুই মেয়ে সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য জানা যায় না।পুরো পরিবার সম্পর্কে কঠোর গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়।

২০০১ সালে জামিলেহ শহীদ বেহেশতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্ব ও শিক্ষাগত উন্নয়ন বিভাগের অনুষদের সদস্য হন।

তিনি সমাজে নারীদের ভূমিকা সম্পর্কে তার স্পষ্টবাদী দৃষ্টিভঙ্গির জন্য বিশ্বজুড়ে একজন বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব।
২০২৩ সালের জুন মাসে ভেনিজুয়েলার রাষ্ট্রীয় টিভির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, স্বাধীনতার নামে নারীরা কর্মক্ষেত্রসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।

দেশটির টেলিসুর টিভি চ্যানেলে তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেছিলেন, ‘নারী অধিকার সংস্থাগুলো পারিবারিক সহিংসতার ঘটনাগুলোর ওপর খুব বেশি আলোকপাত করে যেখানে পরিবারের বাইরে সংঘটিত সহিংসতা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’

কেন আমাকে পুরুষদের মতো হতে হবে? কেন আমরা পড়াশোনা করব, কাজ করব বা পুরুষের মতো বাঁচব? এটা এক ধরনের সহিংসতা।’ ইরান ইন্টারন্যাশনালের বরাত দিয়ে ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

ইরানের প্রেসিডেন্টের স্ত্রী দেশটির পার্লামেন্টে একটি বিতর্কিত বিল পাস করার পর বলেছিলেন, যেসব নারী ইরানের আইন অনুযায়ী হিজাব পরে চলাচল করবে না, তাদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। তার এসব মন্তব্য গত বছর হিজাববিরোধী আন্দোলনের আগুন আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল।

ইরানে নারী ও মেয়েদের কঠোর পোশাক আইন ভঙ্গ করলে তাদের জেল ও জরিমানা করার বিলটি পাস হয়।

এই আইন কেউ না মেনে নিলে ১০ দিন থেকে দুই মাসের মধ্যে জেল বা পাঁচ হাজার থেকে পাঁচ লাখ রিয়াল জরিমানা হতে পারে। জামিলেহ আলামলহোদা কর্মক্ষেত্রের পোশাক কোডের সঙ্গে এই আইনের তুলনা করে বলেন, ‘সর্বত্র আপনার পোশাক কোড রয়েছে, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্কুলেও।’

তিনি বলেন, ‘আমি আপনাকে বলতে চাই, হিজাবের একটি ঐতিহ্য ছিল, এটির একটি ধর্মীয় বাধ্যতামূলক ঐতিহ্য ছিল এবং এটি ব্যাপকভাবে গৃহীত। এখন কয়েক বছর ধরে এটি একটি আইনে পরিণত হয়েছে। আইন ভঙ্গ করা মানে আইনকে পদদলিত করা। অন্য দেশগুলোর মতো আইন ভাঙার জন্য শাস্তিও পাবে।’

এবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, যে নারীরা হিজাব পরতে পছন্দ করেন না, তাদের ব্যাপারে তিনি কী মনে করেন? প্রশ্নের জবাবে জামিলাহ উত্তর দিয়েছিলেন, ‘হিজাব না পরাটা নারীদের জন্য অসম্মানের।’

তিনি বলেন, ‘যেকোনো দেশে এটা স্বাভাবিক। পোশাক কোড সম্পর্কে মতামত এবং দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য থাকতে পারে। এটি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি, তারা কীভাবে তাদের জীবনযাপন এবং তাদের সামাজিক অধিকার বেছে নিচ্ছে।’

২০২৩ সালের নভেম্বরে তিনি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর স্ত্রী ব্রিগেটের কাছে চিঠি লিখে আরও বিতর্কিত হয়েছিলেন। চিঠিতে শব্দ চয়নের জন্য এই বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। চিঠিতে তিনি ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতে যুদ্ধবিরতি চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

জামিলেহ লিখেছেন, ‘প্রিয় মিসেস ম্যাক্রোঁ, অনুগ্রহ করে একজন সদয় এবং আত্মত্যাগী নারী হিসেবে (যিনি ফ্রান্সের নারী, মা ও কন্যাদের প্রতিনিধিত্ব করেন) আপনার স্বামীকে বলুন যেন অসহায় ফিলিস্তিনি শিশু ও নারীদের হত্যার সহযোগী না হন। আমি আপনার মানবিক প্রচেষ্টার জন্য ঈশ্বরের কাছ থেকে পুরস্কার প্রার্থনা করছি।’

জামিলেহ মনে করেছিলেন, ব্রিজিত ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ইসরায়েলে সফর করেছেন দেশটির সরকারের প্রতি সমর্থন জানাতে।

সূত্র: ডেইলি মেইল

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com