ব্যবসায়ীদের হাতে রাজনীতির অধিকাংশ স্থান চলে গেছে: সেলিমা

0

বাংলাদেশের রাজনীতির অধিকাংশ স্থান ব্যবসায়ীদের হাতে চলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান।

সেমিনারে সেলিমা রহমান বলেন, আমাদের ভোট বর্জনের আহ্বানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও সমর্থন দিয়েছিল। কিন্তু আমরা আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে পারিনি।

তিনি আরও বলেন, ৬৯’র গণঅভ্যুথানের সময়ের সেই ছাত্র ও সুশীলসমাজ আর নেই, যারা লড়াই করেছেন দেশের জন্য ও মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য। তখনকার যে সুশীলসমাজ ছিল, সেই মধ্যবিত্ত সুশীলসমাজ, তারা ছিল বিবেকবান এবং সত্য কথা যারা লিখতো, তাদের লেখা পড়ে তখনকার ছাত্রসমাজ গণআন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। সেই সুশীলসমাজ এখন আর নেই। আজকে ছাত্রসমাজে দেখা যাচ্ছে হেলমেট বাহিনী, দুর্নীতি এবং নানারকম কর্মপরিধি। আজকে সুশীলসমাজ দ্বিধাবিভক্ত। সত্যিকার যে মধ্যবিত্ত সুশীলসমাজ ছিল, বাংলাদেশে যে একটা মূল্যবোধ ছিল, সেই মূল্যবোধ ও সমাজ ব্যবস্থা আমরা হারিয়ে ফেলেছি। তবে এখনো কিছু লেখক আছেন, যারা এখনো সঠিক কথা লেখেন। এখনো তারা সমাজকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছেন।

রোববার (২৮ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ‘৬৯’র গণঅভ্যুত্থান এবং এখন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সেলিমা রহমান বলেন, আজকে ব্যবসায়ীদের হাতে রাজনীতির অধিকাংশ স্থান চলে গেছে। তারা তাদের মুনাফাভোগিতা উদ্ধার করছে এবং মানুষকে শোষণ করছে। কীভাবে মেহনতি মানুষকে পিষ্ট করে নিজের প্রতিপত্তি বাড়াবে, সে চেষ্টা করছে। বর্তমান সংসদের বড় একটি অংশ ব্যাবসায়ী। এই যে ব্যবসায়ীদের হাতে রাজনীতি চলে যাওয়া, রাজনীতিবিদদের হাতে রাজনীতি না থাকা, এটাও একটা বড় কারণ।

বিএনপির আন্দোলনে জনগণ সম্পৃক্ত হয়েছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, কিন্তু আমরা কোনো অভ্যুত্থান করতে পারিনি। নানারকম পরিবেশের কারণে সেটা আমরা করতে পারিনি। আমাদের সংবিধান ও আইনের সংকট ছিল। বর্তমান ক্ষমতাসীনরা ইচ্ছামতো সংবিধানকে তাদের মতো করে ছিঁড়ে টুকরো করছে, যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে পরিচালিত করছে, এরমধ্যে আমরা পড়ে গেছি। তারা তাদের সংবিধানের বাইরে আর কিছু হতে দেবে না।

বাংলাদেশে এখন আইনের শাসন বলতে আর কিছু নেই উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, সেটি এখন এ সরকারের হাতে বন্দি। আন্দোলনের মাধ্যমে এ সংকটগুলো আমরা দূর করতে পারিনি। বিশ্ব রাজনীতির যে খেলা সেটা আমাদের সাধারণ জনগণ বোঝেনি। আমরা তাদের বোঝাতে পারিনি, সেটা আমাদের ব্যর্থতা। আমরা জানতাম নির্বাচনটা হয়ে যাবে। আমাদের হাতে নির্বাচন প্রতিহত করার কোনো অস্ত্র ছিল না। আমাদের আন্দোলন ক্ষমতার লড়াই নয়। আমরা রাষ্ট্রকে সংস্কার করতে চেয়েছি। যেখানে সত্যিকার অর্থে মানুষের কল্যাণে রাজনীতি প্রতিষ্ঠা হবে। যেখানে মানুষের মৌলিক ও অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। আগামী দিনে আমাদের প্রধান টার্গেট হবে, এই ফ্যাসিষ্ট সরকারকে দূর করা।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com