কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা না করলে আমরা সরকারের সঙ্গে নেই: আল্লামা শফি

0

অবিলম্বে কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফি। অন্যথায় সরকারের সঙ্গে হেফাজতে ইসলাম থাকবে না বলেও হুশিয়ারি দিয়েছেন আল্লামা আহমদ শফি।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্ করে বলেছেন, ‘তুমি যদি মুসলমান হও, সত্যিকারের মুসলমান হও তবে কাদিয়ানীদের অতিসত্বর অমুসলিম ঘোষণা কর। না হলে এই দেশ কি হবে জানি না’।
শনিবার বিকালে শহরের মাসদাইর এলাকার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে আন্তর্জাতিক তাহাফ্ফু্জে খতমে নবুয়্যতের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি আয়োজিত এক মহা সমাবেশে আল্লামা শফি এ সব কথা বলেন।
এ দিকে শনিবার দুপুর আড়াইটার মধ্যে সমাবেশস্থল কানায় কানায় ভরে উঠলে নগরীর চাষাড়া পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তার ওপর কয়েক লাখ মুসল্লি এই সমাবেশে অংশ নেন।
বিকাল সাড়ে ৪টায় আল্লামা শফি মঞ্চে এসে উপবিষ্ট হন। তবে অতিরিক্ত মানুষের ভারের কারণে ৫টার দিকে আকস্মিকভাবে সমাবেশের মূল মঞ্চ ভেঙ্গে পড়ে। তবে এ সময় মঞ্চে থাকা কেউই আহত হননি।
সমাবেশে আল্লামা শফি বলেন, নবী মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর শেষ নবী। কাদিয়ানীরা নবীকে (সা.) শেষ নবী বলে মানে না বলেই তারা কাফের। যারা কাদিয়ানীদের কাফের মানবে না, তারাও কফের।
কাদিয়ানীদের মুসলমানদের কবরস্থানে দাফন না করার দাবি জানিয়ে আল্লামা শফি বলেন, কাদিয়ানীদের সঙ্গে কোনো মুসলমান আত্মীয়তাও করবেন না। কাদিয়ানীরা এ দেশে থাকতে পারবে হিন্দু হয়ে, থাকতে পারবে অমুসলিম হয়ে। তবে মুসলমান হয়ে কাদিয়ানীরা বাংলাদেশে থাকতে পারবে না।
আল্লামা শফি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, আপনার লোকদের মাধ্যমে আমি আগেও বারবার জানিয়েছি যেন কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা করা হয়। কিন্তু আপনি এ ব্যাপারে কোনো কর্নপাত করছেন না। যদি কর্নপাত করেন তবে অনতিবিলম্বে অমুসলিম ঘোষণা করেন। ১ কোটি মানুষকে জিজ্ঞাসা করুন, সবাই একমত, কাদিয়ানীদের অমুসলমান ঘোষণা করা হোক। আমরা আপনার সঙ্গে থাকব, না হলে থাকব না।
সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব জুনায়েদ বাবু নগরী বলেন, কাদিয়ানীদের প্রধান গোলাম আহমদ কাদিয়ানী ছিলেন ইংরেজদের এজেন্ট। মুসলিম উম্মাহকে বিভক্তির জন্য তাকে নিয়োগ করা হয়েছিল। পৃথিবীর ৪০টি রাষ্ট্র কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা করেছে। ইরাকে অনুষ্ঠিত ও আইসির সম্মেলনেও কাদিয়ানীদের অমুসলিম ও কাফের ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশে সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে তাদের কাফের ঘোষণা করতে হবে। না হলে এই আন্দোলন আরও বেগবান হবে।
খতমে নবুয়্যতের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি মাওলানা আব্দুল কাদিরের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক ধর্মমন্ত্রী মুফতি ওয়াক্কাস, ভারতের দেওবন্ধ মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক আল্লামা কমর উদ্দিন, জমিয়তে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি জুনায়েদ আল হাবিব, ঢাকা মহানগর হেফাজতের আমীর নুর হোসাইন কাশেমী, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা অধ্যক্ষ ইসহাক, নারায়ণগঞ্জ হেফাজতের মহানগর আমীর মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তরা বলেন, দেশে রাজনৈতিক একাধিক দল রয়েছে। আছে বহু ধর্মের মানুষ। সবাই স্বাধীনভাবে আমাদের এ দেশে বসবাস করছে। আমরা চাই কাদিয়ানীদের মুসলিম নয় আহমদিয়া জামাত নামে স্বীকৃতি। এরপর তারা তাদের মতো করে চলাফেরা করুক আমাদের কোনো বাধা নেই। কিন্তু মুসলিম দাবি করতে পারবে না।
এর আগে সকাল থেকেই সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়। সকাল থেকেই মুসল্লিদের ঢল নামে। জোহর নামাজের পর থেকে মুসল্লিদের ঢল হাজার পেরিয়ে লাখে গিয়ে দাঁড়ায়, যা একপর্যায়ে জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
বিকাল ৪টায় মঞ্চে উপস্থিত হন আল্লামা শফি। বিকাল সাড়ে ৪টায় ওই ময়দানেই আছরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরুমাত্র মঞ্চের পেছনের অংশ ভেঙ্গে পড়ে। একই সময়ে মঞ্চের নিচের বাঁশ খুলে গেলে মঞ্চ নিচে নেমে যায়। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com