‘৭ই নভেম্বরের চেতনাই হচ্ছে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিশ্চিত করা, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা’
আজ ৭ই নভেম্বর। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে তৎকালীন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতা সংহত করে অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীলতার সূচনা করেন। তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে ঢাকা সেনানিবাসের বন্দিদশা থেকে সিপাহি-জনতা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুক্ত করে আনেন।
প্রিয় পাঠক সেই তৎকালীন সময়ে আমার জন্ম হয়নি তবে পরবর্তীকালীন সময়ে ইতিহাসবিদদের রচিত ইতিহাস থেকে জানতে পেরেছি যে, ৭৫-এর ৭ই নভেম্বর সৈনিক-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে আমাদের মাতৃভূমি প্রভাবমুক্ত হয়ে স্বাধীন অস্তিত্ব লাভ করে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত হয়। স্বাধীনতার চেতনায় আধিপত্যবাদী শক্তির নীলনকশা প্রতিহত করে এদেশের বীর সৈনিক ও জনতা। জনগণও নতুন প্রত্যয়ে জেগে ওঠে। এবং ৭ই নভেম্বর বিপ্লবের সফলতার সিঁড়ি বেয়েই জনগণ বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং অর্থনৈতিক মুক্তির পথসহ, আইনের শাসন, বাক, ব্যক্তি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরে পায়।
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, সেদিন দেশ, জনগণ, স্বাধিকারসহ স্বাধীনতার চেতনা বিরোধী সুগভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের বিরুদ্ধে ৭ই নভেম্বর সিপাহি-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল, এই বিপ্লবের মাধ্যমে জাতি পেয়েছিল যোগ্য নেতৃত্ব জিয়াউর রহমানকে, যিনি ৭১-এ জাতির চরম ক্রান্তিলগ্নে মহান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। সফল রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদী রাজনীতির উন্মেষ ঘটিয়ে জাতিকে উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির মহাসড়কে উঠিয়েছিলেন। আর সেজন্যই আমাদের জাতীয় জীবনে এই বিপ্লবের গুরুত্ব অপরিসীম।
প্রিয় পাঠক, জাতিকে উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির মহাসড়কে উঠিয়ে দেয়া জিয়াকে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে স্বাধীনতার শত্রুরা তাঁকে হত্যা করে। কারণ বিরোধীদের ধারণা ছিল, তার এই অকস্মাত মৃত্যু নিভিয়ে দেবে সবকিছু। কিন্তু অবাক পৃথিবী অবাক এক জিয়া লোকান্তরে লক্ষ জিয়া ঘরে ঘরে। জীবিত জিয়ার চেয়ে মৃত জিয়া দেখা দিলো অবশ্যম্ভাবী রাজনৈতিক আদর্শ হিসেবে। তাইতো আজ সারা বাংলার ধানের শীষে, জিয়া আছে মিলেমিশে।
পরিশেষে বলতে চাই, দেশ, রাজনীতি ও গণতন্ত্রকে সংকটে ফেলা, রাষ্ট্রের জনগণের মালিকানা কেড়ে নেয়া, স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার কেড়ে নেয়া, অবাধ, নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের পথ রুদ্ধ করা, এবং নির্বাচনী সকল বিধি ব্যবস্থা ধ্বংস করে রাতের আঁধারে নির্বাচিত হওয়া সরকারের বিরুদ্ধে আসুন দলমত নির্বিশেষে একটি জনবিস্ফোরণ গড়ে তুলি। কেননা আমি বিশ্বাস করি জনগণের জনবিস্ফোরণেই ভেসে যাবে অবৈধ ক্ষমতার চেতনা।
আর আমাদের মধ্যে জাগ্রত করতে হবে ৭ই নভেম্বরের চেতনা। কেননা ৭ই নভেম্বরের চেতনাই হচ্ছে, বহুদলীয় গণতন্ত্র নিশ্চিত করা। স্বাধীনতার সুফল তথা অর্থনৈতিক মুক্তি, শান্তি-শৃঙ্খলা, সাম্য, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা।
আর সেই চেতনায় আমি অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে সকল ভাই-বোন শুভাকাঙ্ক্ষী ও শুভানুধ্যায়ীদের জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। এবং সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করি।
ডালিয়া লাকুরিয়া
প্রচার-সম্পাদক
যুক্তরাজ্য, বিএনপি।