সরকার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে জনগণের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে

0

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো: নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, বর্তমান সরকার রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে জনগণের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে। দেশের আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত পুলিশ প্রশাসনকে দলীয় লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত করেছে। বিচারকদের বিচার কাজে স্বাধীনতা রাখেনি। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ আজ একটি অবরুদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের যাত্রাবাড়ী পশ্চিম অঞ্চলের উদ্যোগে শুক্রবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে আয়োজিত অগ্রসর কর্মী শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

কর্মী শিক্ষাশিবিরে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরী আমির মো: আবদুল জব্বার, কেন্দ্রিয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, যাত্রাবাড়ী পশ্চিম জোনের সম্মানিত পরিচালক মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ড. মোবারক হোসাইনের সভাপতিত্বে কর্মী শিক্ষাশিবিরে এ জোনের সকল থানা আমির ও সেক্রেটারিরা উপস্থিত ছিলেন।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আজ সারাদেশে জামায়াতে ইসলামীর অফিসগুলো জোরপূর্বক বন্ধ করে রাখা হয়েছে। জাতীয় শীর্ষ নেতাদেরকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে শহীদ করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর প্রত্যেক নেতাকর্মীর নামে অনেক মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দিয়ে, গ্রেফতার করে, জুলুম-নির্যাতন ও হয়রানি করার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে চরমভাবে ব্যাহত করা হয়েছে।

সমাজের নম্র ও ভদ্র মানুষ হিসেবে পরিচিত এসব ব্যক্তিদেরকে নিজ ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি, কর্মক্ষেত্রসহ পদে পদে নিষ্ঠুর অমানবিক নির্যাতন করে তাদেরকে চরম আর্থিক ক্ষতির মধ্যে ফেলে দেয়া হয়েছে। তবুও ইসলামের সুমহান আদর্শের দাওয়াত প্রদান ও মানবতার সেবা থেকে জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিচ্যূত করা সম্ভব হয়নি।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা চরম বিপর্যস্ত। এখানে গণতান্ত্রিক যত প্রতিষ্ঠান আছে, সবগুলোকেই ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। জনগণের কথা বলার অধিকার হরণ করা হয়েছে। সকল রাজনৈতিক মতপ্রকাশের অধিকার খর্ব করা হয়েছে। দেশে মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার আজ ভূলুণ্ঠিত। জনগণের পছন্দের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার যে নির্বাচনের ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানকার কমিশনারসহ সব পূর্ণরূপে দলীয়করণ করা হয়েছে। তাই জনগণের মুক্তির জন্য, নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য এবং দেশ ও জাতির বৃহৎ স্বার্থে যেকোনো পরিস্থিতিতে জামায়াতের দায়িত্বশীলদের অগ্রণী ভূমিকায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের দিকে তাকালে দেখা যাচ্ছে, বিশ্ব মোড়লরা ইসলামী আদর্শ ও কোরআনের বিধান মোতাবেক দেশ পরিচালনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। গোটা দুনিয়ায় কোথাও ইসলামী আদর্শের উত্থান হোক, এটা এসব ক্ষমতাধর রাষ্ট্র চাই না। অন্যদিকে ইসলামী অনুশাসনের ভিত্তিতে বিশ্বের কোনো দেশে সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক, এটা বিশ্ব মোড়লরা হতে দেবে না। সেখানে নানাভাবে পরিকল্পনা করে সত্যিকার দেশপ্রেমিক সরকারকে বিপদে ফেলা এবং ইসলামী আদর্শের সংগঠন বা ব্যক্তিদের টার্গেট করে নিয়ন্ত্রণ করার বিভিন্ন ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। এরপরও আমরা থেমে যেতে পারি না এবং থামতে চাইও না। এজন্য জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের রাজধানীর প্রত্যেক মহল্লায় মানুষের ঘরে ঘরে ইসলামের সুমহান আদর্শের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। মানবতার সেবা ও ব্যাপকভাবে কল্যাণকর সামাজিক কার্যক্রমের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে জামায়াতের পতাকাতলে সম্পৃক্ত করে গণভিত্তি অর্জন করতে হবে।

মো: আব্দুল জব্বার বলেন, আল্লাহর গোলাম হিসেবে আমাদেরকে কুরআন ভালোভাবে জানতে হবে। তা সমাজ ও রাষ্ট্রে বাস্তবায়ন করার জন্য প্রচেষ্টা চালাতে হবে। আম্বিয়ায়ে কেরাম আলাইহিস সালাম যে আদর্শ পৃথিবীতে কায়েম করার জন্য সংগ্রাম করেছিলেন, বাংলাদেশের বুকে ওই একই আদর্শ প্রতিষ্ঠার কাজ জামায়াতে ইসলামী করে যাচ্ছে। আদর্শবাদী দলের পতাকাবাহী হওয়ার কারণে জামায়াতের দায়িত্বশীলদের একটি আদর্শবাদী দলের পতনের কারণ সম্পর্কে নিবিড় জ্ঞান রাখতে হবে এবং তার প্রতিকারের জন্য কাজ করতে হবে।

আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ জামায়াতের অসংখ্য নেতাকর্মী কারাগারে বন্দী রয়েছেন। তবুও কারো সাথে আপোষ করেননি। শত জুলুম ও অত্যাচারের মাঝেও আমাদেরকে দৃঢ়ভাবে দ্বীনের এ মহান কাজকে আঞ্জাম দিতে হবে।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, লক্ষ্যহীন জীবন নিয়ে আমাদের মুক্তি মিলবে না। বরং তা দিয়ে সোজা জাহান্নাম অবধারিত হয়ে যাবে। হজ্বে গিয়ে পাথর ছুঁড়ে আমরা শয়তানকে পরাজিত করতে চাই। অথচ আমার আপনার মনের কোণে যে শয়তান বদ্ধমূল হয়ে বসে আছে, তাকে একটি বারের জন্যও পাথর মারার পরিকল্পনা কেন আমরা করছি না। আমরা অশ্লীলতার কাছে হার মানব, সুদের কাছে হার মানব, সামান্য ঘুষের কাছে হার মানব, এসব মানবরচিত সব মতবাদের কাছে হার মানব, এরপরও কিভাবে আমরা দাবি করতে পারি, আমি মুসলমান বা ঈমানদার। ফিরে আসুন ঈমানের পথে, কল্যাণের পথে। তবেই মিলবে মুক্তির শেষ ঠিকানা প্রিয় জান্নাত।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com