আমদানি বন্ধের অজুহাতে দাম বাড়ছে পেঁয়াজের

0

দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় বাড়তে শুরু করেছে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম। গত দু’দিনের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম কেজিতে তিন থেকে চার টাকা করে বেড়েছে। রমজান মাস শুরু হলে আরো দাম বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা।

সরকার কৃষকদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ করে। ফলে বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে বন্দরের মোকাম ও বাংলাহিলি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার যে পেঁয়াজ প্রকারভেদে ২২ থেকে ২৪ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছিল, শুক্রবার ওই পেঁয়াজ ২৬ থেকে ২৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে আসন্ন রমজানে আরো দাম বাড়তে পারে।

শুক্রবার সকালে বাংলাহিলি বাজারে কথা হয় ক্রেতা নুর ইসলামের সাথে।

তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, বাজারে এলে মাথা ঠিক থাকে না। দামের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয় না। যে যার মতো দাম বাড়িয়ে দেয়। আর আমাদের কিনতে কষ্ট হয়। রমজানে পেঁয়াজসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম কোন পর্যায়ে যাবে, এখন থেকে বলা মুশকিল।

আরেক ক্রেতা শামসুল আলম জানান, গত বুধবার পেঁয়াজ কিনেছি ২২ টাকায়। আজ শুক্রবার সকালে এসে একই পেঁয়াজ ২৬ টাকায় কিনতে হলো। এখনই বাজারে মনিটরিং করা দরকার।

বাজারের খুচরা বিক্রেতা ময়নুল হোসেন জানান, হিলি বন্দর দিয়ে ভারতে থেকে পেঁয়াজ আসছে না। শুনেছি, গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কেজিতে তিন থেকে চার টাকা করে বেড়েছে। রমজানে আরো দাম বাড়বে, এটাই এখন স্বাভাবিক নিয়ম হয়ে গেছে।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি ও রফতানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো: মোস্তাফিজুর রহমান জানান, প্রতি রমজানে দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ ঠিক রাখতে ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেন। এবারো ওই ধারা অব্যাহত রেখেছিলেন ব্যবসায়ীরা। সরকার গত ১৫ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানিতে অনুমতি (আইপি) দিয়েছিল। এরপর ১৬ মার্চ থেকে নতুন করে আইপি ইস্যু না করায় বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে।

বন্দরের প্রসিদ্ধ পেঁয়াজ আমদানিকারক ও সংগঠনটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: শহীদুল ইসলাম বলেন, এবার রমজানকে সামনে রেখে আমরা আগে থেকেই পেঁয়াজের আমদানি শুরু করি, যেন রমজানে দাম ও সরবরাহ স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকে। বাজারে যেন কোনো অস্থিরতা সৃষ্টি না হয়। কিন্তু সরকার পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ করে দেয়ায় দাম বাড়ছে। রমজানে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে, সেজন্য আমদানির অনুমতি দিতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

তিনি আরো জানান, হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীদের ভারতে ৮-১০ হাজার টন পেঁয়াজের এলসি করা আছে। এই পেঁয়াজ দেশে আমদানির অনুমতি দেয়া না হলে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব।

এদিকে হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধকেন্দ্রের উপ-সহকারী সংগনিরোধ কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, কৃষকদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে অনুমতি (আইপি) দেয়া বন্ধ রেখেছে। ১৫ মার্চ পর্যন্ত আইপি দেয়া ছিল। এখন দেশে পেঁয়াজের ভরা মৌসুম। তাই নতুন করে আইপি ইস্যু না করায় বৃহস্পতিবার থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে।

সূত্র : ইউএনবি

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com