আফগানিস্তানে তালেবানের বিরুদ্ধে রাজপথে ছাত্রীরা
আফগানিস্তানে নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনায় বাদ সাধে তালেবানরা। মঙ্গলবার দেশটিতে নিষিদ্ধ করা হয় নারী শিক্ষা।
পরদিনই তালেবানদের কড়া পাহারায় বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় শত শত নারী শিক্ষার্থীকে। ক্ষমতায় আসার পর নারীদের অধিকার ও স্বাধীনতা হরণে এটি তালেবানের সর্বশেষ পদক্ষেপ। নারীরা তা খুব সহজে মেনে নেয়নি।
বৃহস্পতিবার দেশটির রাজধানী কাবুলে বিক্ষোভ করে নারীরা। প্রায় ৫০ জন নারী জড়ো হয় কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে। এ সময় তারা ‘শিক্ষা আমাদের অধিকার’ বলে স্লোগান দিতে থাকে।
এর আগে মঙ্গলবার নানহারহার বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা পরীক্ষা বর্জন করে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায়।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, ‘বিশ্ববিদ্যালয় খোলা উচিত, শিক্ষা আমাদের অধিকার’ ব্যানার হাতে তালেবানদের সামনে দাঁড়ানোর দুঃসাহসই দেখিয়েছেন আফগান নারীরা। শিক্ষার্থীসহ উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৫০ জন নারী। কূটনীতিকরা মনে করছেন, নারী শিক্ষার ওপর বিধিনিষেধের তালেবান-নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি অর্জনের পথে বাধা। যে নিষেধাজ্ঞা অর্থনীতিকে বাধাগ্রস্ত করছে তা তুলে নেওয়ার পথকে আরও জটিল করছে। আগের দিন ছাত্রীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে পূর্ব আফগানিস্তানের নানগারহার মেডিকেলের ছাত্ররা তাদের নারী সহপাঠীদের বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে পরীক্ষা বর্জন করে। প্রতিবাদ জানায়, কান্দাহারের ছাত্ররাও। ২৫ বছর বয়সি জিয়া বলেন, ‘নারী শিক্ষার্থীরা এসে পরীক্ষায় না বসতে আহ্বান করেছিল। তখন পুরুষ শিক্ষার্থীরা সাহস দেখিয়ে পরীক্ষার স্থান ত্যাগ করে।’ তালেবানের এমন সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দার ঝড় উঠেছে। এ সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র।
আফগানিস্তানের নারীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান ও কাতার। এ ছাড়া এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বৃহস্পতিবার তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘নারী শিক্ষা নিষিদ্ধ করা ইসলামসম্মত কিংবা মানবিক কোনো কাজ নয়। আমরা এ সিদ্ধান্ত সঠিক বলে মনে করি না। ইনশাআল্লাহ, তালেবান এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেবে।’ গত বছর ক্ষমতা দখলে নেওয়ার পর তালেবান কঠোর ইসলামি আইন ব্যাপকভাবে বাস্তবায়ন করেছে। নিষিদ্ধ করেছে মেয়েদের মাধ্যমিক শিক্ষাও। বিধিনিষেধের কারণে চাকরি করতে পারছেন না আফগান নারীরা।