১০০ বছরের ‘মাস্টারপ্ল্যান’ নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা পোষণ

0

বসবাস অযোগ্য ঢাকাকে বাসযোগ্য ও তিলোত্তমা হিসেবে গড়ে তুলতে ১০০ বছরের ‘মাস্টারপ্ল্যান’ নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বিএনপির মেয়রপ্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন। বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও অবিভক্ত ঢাকার সর্বশেষ মেয়র সাদেক হোসেন খোকার বড় ছেলে তিনি। পেশায় প্রকৌশলী, সিটি ডেভেলপমেন্টের (নগর উন্নয়ন) ওপর গবেষণাও করেছেন।

নির্বাচিত হলে ঢাকা মহানগর কীভাবে গড়ে তুলবেন তা নিয়ে নিজ ভাবনার কথা জানান । রাজনীতিতে একেবারেই তরুণ এ জনপ্রতিনিধির অনুপ্রেরণা বাবা সাদেক হোসেন খোকার বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন। বাবার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক জনদুর্ভোগ লাঘবে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা ব্যক্ত করেন। বলেন, মেয়র নির্বাচিত হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মশক নিধন, যানজট নিরসন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ব্যবস্থা নেবেন।

নির্ভয়ে ঢাকা দক্ষিণের জনগণকে ভোট দিতে আসার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার, ফলাফল মেনে নেয়া এবং জনগণ কেন তাকে নির্বাচিত করবেন- এসব বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন তিনি।

নির্বাচনের এ মুহূর্তে সম্পদের বিবরণী জমা না দেয়ার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলার বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন, নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে কি-না?

ইশরাক হোসেন : সরকার সব জায়গায় বিচার ব্যবস্থাকে ব্যবহার করছে। রাষ্ট্রের অন্য যন্ত্রগুলোও তারা এখানে কাজে লাগাচ্ছে। আমার পক্ষে ব্যাপক গণজোয়ার দেখে এমন একটি কাজ (মামলা) করেছে তারা। তবে জনগণ বোকা নয়। তারা সহজেই বিষয়টি অনুধাবন করতে পারেন।

Israk-khoka.jpg

খুবই মামুলি একটা বিষয় তারা যেভাবে মিডিয়ায় হাইলাইট করছে, এখানে ধর্ষণ, হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক ডাকাতি, অর্থপাচার, শেয়ারবাজার লুট- এগুলো নিয়ে তো আমরা মিডিয়ায় তেমন কিছু দেখছি না। আমার সম্পদের তথ্য জমা দেয়া হয়নি, সেই মামলা নিয়ে এত কিছু করা হচ্ছে! এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি বলতে চাই, জনগণ এগুলো বোঝে। সরকার এসব যত করবে ততই আমার জনসমর্থন বাড়বে।

রাজনীতিতে একেবারেই নতুন, জনগণ কেন আপনাকে ভোট দেবে?

ইশরাক হোসেন : শুধু আপনি নন, এ প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছি বারবার। যে কথাটি বলতে চাই, আমি ঢাকার সন্তান। এ শহরের আলো-বাতাসে বড় হয়েছি। ঢাকার অলি-গলিতে আমার অগাধ বিচরণ। নগরীর সব সমস্যা আমার জানা। এ শহরের সমস্যাগুলোর মধ্যেই আমার বেড়ে ওঠা। যেগুলো পরবর্তীতে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।

দ্বিতীয়ত, দেশের ৮০ ভাগ মানুষ এ সরকারের বিপক্ষে। তারা পরিবর্তন চান। ভোট দেয়ার সুযোগ পেলে ধানের শীষে সিল মেরে তারা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করবে। আমার বাবা দীর্ঘদিন এ এলাকার সংসদ সদস্য ছিলেন এবং অবিভক্ত ঢাকার মেয়র ছিলেন। তিনি অনেক কাজ করেছেন। নগরীর উন্নয়নে তার ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।

বাবা যখন মেয়র ছিলেন তখন এবং পরবর্তী সময়ে তার কাছে নগরীর সমস্যাগুলো জানতে চাইতাম। মেয়র থাকা অবস্থায় নগর উন্নয়নে কোনো ধরনের বাধার সম্মুখীন হতেন- সেগুলো জানতে চাইতাম। আমি নিজেও একজন প্রকৌশলী। সিটি ডেভেলপমেন্টের (নগর উন্নয়ন) ওপর আমার নিজস্ব রিসার্চও (গবেষণা) রয়েছে। দেশের বাইরে পড়ালেখা করার সময় উন্নত বিশ্বের শহরগুলো দেখার সুয়োগ হয়েছে। দেখেছি, উন্নত দেশগুলো কীভাবে তাদের সিটির সমস্যা সমাধান করে, উন্নয়ন করে। সবকিছু মিলিয়ে মনে হয়েছে, ভোটাররা আমাকেই ভোট দেবেন। তরুণ ভোটাররাই আমার বড় শক্তি।

নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে আপনারা বারবার শঙ্কা প্রকাশ করছেন, এর কারণ কী?

ইশরাক হোসেন : দলীয় সরকারের অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ ক্ষমতাসীন দল ইতোমধ্যে সব রাষ্ট্রযন্ত্র দলীয় কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করছে। সব প্রতিষ্ঠানকে তারা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করেছে। আপনারা (সাংবাদিক) নিজেরাও জানেন, গত জাতীয় নির্বাচন কীভাবে হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বরের ভোট ২৯ তারিখ রাতেই হয়েছে। সংবিধানও কাঁটাছেড়া করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে। তারা এখন নির্বাচনে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, হয়রানি করা হচ্ছে। এভাবে কি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব?

মেয়র নির্বাচিত হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কোন কাজগুলো হাতে নেবেন?

ইশরাক হোসেন : মেয়র নির্বাচিত হলে আমার প্রথম কাজ হবে মশক নিধন। আপনারা জানেন, সামনে ডেঙ্গু বা মশা প্রজননের সিজন। প্রথম দিন থেকেই এর প্রতি গুরুত্ব দেব। আমরা চাইব না, আবার আগের মতো ডেঙ্গুর মহামারি হোক, মানুষের প্রাণহানি ঘটুক।

দ্বিতীয় কাজ হবে যানজট নিরসন। ঢাকার কী ভয়াবহ অবস্থা! যানজটের কারণে প্রতি বছর ৩৬ হাজার কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। লাখ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। নগরীর সব অংশীদারকে নিয়ে এসব সম্যসার সমাধান করব।

এরপর আসবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। বেহাল অবস্থায় আছে এটি। গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে উন্মুক্ত বর্জ্য ফেলে রাখা হচ্ছে। বৃষ্টির সময় সেগুলো পানির সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে যায়। এক কথায় বাসযোগ্য পরিবেশ থাকে না। আরেকটি হলো বায়ুদূষণ। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা প্রায়সই এক নম্বরে থাকে। এক থেকে সাত নম্বরের মধ্যে তো সব সময় থাকে।

জলাবদ্ধতাও নগরীর সমস্যাগুলোর অন্যতম। এর প্রতিও বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে। সামান্য বৃষ্টিতেই শহর ডুবে যায়। বিশেষ করে পুরান ঢাকার অনেক এলাকা রয়েছে, যেগুলো ওয়াসার ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার বাইরে। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই এলাকাগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। ওই এলাকাগুলো কার্যকর ব্যবস্থাপনার মধ্যে আনা হবে।

বিগত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপির পোলিং এজেন্টদের খুঁজে পাওয়া ছিল দুষ্কর। এবার কি আপনারা এর সমাধান করতে পারবেন?

ইশরাক হোসেন : দেখুন, বিগত নির্বাচনগুলোতে পুলিশি অত্যাচার চালানো হয়েছে। আমরা কাদের এজেন্ট নিয়োগ দেব, দলীয় কর্মীদের তো। গত একাদশ সংসদ নির্বাচনে ঢাকায় প্রায় ১০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে মাঠশূন্য করা হলো। এজেন্ট কাদের করব? এ নির্বাচনে যদি তেমন কিছু না হয় তাহলে আমরা পোলিং এজেন্ট দিতে পারব।

Israk-khoka.jpg

নির্বাচনে ইভিএমের বিপক্ষে বিএনপি। কিন্তু ভোটগ্রহণ হবে ইভিএমে। এরপরও আপনারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, কেন?

ইশরাক হোসেন : আমরা জানি যে, ইভিএমে বিশেষ উপায়ে ফলাফল পাল্টে দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। ইভিএম মেনে নিয়েছি বিষয়টি এমন নয়, তা বাতিলের দাবি আমরা অব্যাহত রেখেছি। পাশাপাশি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়ও থাকছি। আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।

নগরীর সর্বত্র আওয়ামীপ্রার্থীদের পোস্টার কিন্তু বিএনপিপ্রার্থীর পোস্টার তেমন চোখে পড়ছে না…

ইশরাক হোসেন : এটা সবারই জানা। বিভিন্ন স্থানে আমাদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। যারা পোস্টার লাগাতে যাচ্ছে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। তাদের মারধর করা হচ্ছে। পোস্টার লাগানোর সময় ধানমন্ডি থেকে চারজনকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ছাড়িয়ে আনতে হয়েছে। আমরা পোস্টার লাগানোর চেষ্টা করছি। তারা যেহেতু ক্ষমতায়, ফলে শক্তি প্রয়োগ করে তা ছিঁড়ে ফেলছে। আমি মনে করি, এতে জনগণের মতমত তো ছিঁড়ে ফেলা যাবে না। তারা আমাদের সঙ্গে আছেন।

দিন দিন নগরী অনিরাপদ হয়ে উঠছে নারী ও শিশুদের জন্য। এটা নিয়ে আপনার কোনো বিশেষ পরিকল্পনা আছে কি-না?

ইশরাক হোসেন : নারী ও শিশুদের জন্য সবচেয়ে অনিরাপদ শহরের তালিকায় ঢাকা এখন এক নম্বরে। আপনারাও বিষয়টি জেনে থাকতে পারেন। এ বিষয়ে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে কিছু প্রস্তাবনা থাকবে। সেখানে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।

আপনার প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থীকে কীভাবে দেখছেন?

ইশরাক হোসেন : আমি আমার প্রতিপক্ষকে নিয়ে কিছু বলতে চাই না। জনগণই সব বিচার করবে। আমার বিচারও জনগণ করবে। জনগণ সুষ্ঠু ভোট দিতে পারলে তারা তাদের রায় দেবে। আর বিগত এক দশকের নির্বাচনগুলোতে কী হয়েছে সেটা আপনারা জানেন। তেমন নির্বাচন হলে ভোটের ফলাফল কী হবে সেটাও জানেন, জনগণও জানে।

ভোটে জিতলে কেমন নগর গড়তে চান?

ইশরাক হোসেন : মেয়র হলে প্রথমে ঢাকা-কে বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে চাই। এজন্য নগরবাসীর দ্বারে দ্বারে গিয়ে তাদের মতামত নেব। ঢাকার প্রধান সমস্যা হচ্ছে যানজট, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জলাবদ্ধতা, বায়ুদূষণ। যানজটে কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার কারণে বছরে প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে। এগুলো প্রথমে সমাধান করব। এছাড়া ফুটপাত দখলমুক্ত, চলাচলের ভোগান্তি কমাতে নতুন নতুন বাস স্টপেজ তৈরি করব। ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট, ফ্লাইওভার, ইউলুপসহ পাতাল রেল ও মেট্রোরেলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করব।

জনগুরুত্বপূর্ণ এসব কাজের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের উন্নয়নে কাজ করব। ঢাকা-কে নিয়ে ১০০ বছরের ‘মাস্টার প্ল্যান’ করার ইচ্ছা আছে। এ পরিকল্পনা করা হবে নগর পরিকল্পনাবিদ, স্থপতি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে। রাজধানীবাসীর ভোগান্তি লাঘবে ওয়ান স্টপ সার্ভিসসহ ২৪ ঘণ্টা সার্ভিস দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে নাগরিকরা সবকিছু পাবে। এছাড়া নারী ও শিশুদের জন্য আলাদা কিছু পরিকল্পনা আছে, যেগুলো নির্বাচনী ইশতেহারে আপনারা পাবেন।

ঢাকা মহানগরের যথাযথ উন্নয়নে সিটি গভর্নমেন্ট পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হবে। আপনারা দেখেছেন, ঢাকা শহরে জলাবদ্ধতা হলে সিটি করপোরেশন ও ওয়াসার মধ্যে একধরনের কাদা ছোড়াছুড়ি হয়। আমি এ জলাবদ্ধতা নিরসনে বর্ষার জন্য বসে থাকব না। বছরের শুরুতেই এ নিয়ে কাজ করব। ফায়ার সার্ভিস এখন সিটি করপোরেশনের আওতায় নেই। মেয়র হলে এটিকে সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত করব। কারণ ঢাকা সিটির কোথাও আগুন লাগলে মানুষের আশা থাকে যে, মেয়র কিছু করবেন।

গত নির্বাচনে আপনারা সেনাবাহিনী চেয়েছিলেন। এবার ইভিএম সেনাবাহিনীর হাতে থাকছে। এরপরও ইভিএম নিয়ে আপত্তি, কারণ কী?

ইশরাক হোসেন : আমরা সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নির্বাচনের দাবি করে আসছি। ইভিএম রক্ষণাবেক্ষণে সেনাবাহিনীর নিয়োগ করা দুজন আইটি স্পেশালিস্ট থাকবেন। তারা কিন্তু অস্ত্রধারী হবেন না। বুথের বাইরেও তাদের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না। তাহলে আমরা কীভাবে নিশ্চিত হব যে, কারচুপি হচ্ছে না। আমরা পুরো নির্বাচন ব্যবস্থা সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে চাই।

নির্বাচনের ফলাফল যদি বিপক্ষে যায় সেক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ নেবেন, অনিয়ম হলে আইনি প্রক্রিয়ায় যাবেন কি-না?

ইশরাক হোসেন : সবকিছুই দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হবে। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অবিভক্ত ঢাকার সর্বশেষ মেয়র ছিলেন আপনার বাবা। তার কোন বিষয়গুলো বেশি অনুপ্রাণিত করে আপনাকে? জীবদ্দশায় তিনি কোনো দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন কি-না?

ইশরাক হোসেন : বাবার মৃত্যুর পর মানুষ বলতেন, উনি তাদের সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে, দিন-রাত যেকোনো সময় পাশে দাঁড়াতেন। এই জিনিসটা আমাকে বেশি অনুপ্রাণিত করে। আমিও তার ওই আদর্শ অনুসরণ করি। বাবা মূল যে সমস্যাটার মুখোমুখি হতেন সেটা হলো সমন্বয়হীনতা। এখানে সেবাদানের একাধিক সংস্থা রয়েছে। প্রায় ৩২টি সংস্থা স্বাধীনভাবে কাজ করছে। উনি মেট্রোপলিটন গভর্নমেন্টের পক্ষে ছিলেন এবং এর পক্ষে জনমত গড়ে তুলেছিলেন। আমিও চাই নগর সরকার গড়ে তুলতে।

রাজনীতিতে একেবারেই নতুন। কোন যোগ্যতায় নগরবাসী আপনাকে মেয়র হিসেবে বেছে নেবেন?

ইশরাক হোসেন : এ শহর আমার, এর অলিগলিতে আমার অবাধ বিচরণ। আলাদা একটা মায়া আছে এ শহরের প্রতি। তেমনি ঢাকাবাসীরও মায়া আছে এ শহরের প্রতি, তারা আজ এক হয়েছে আমার পক্ষে। এছাড়া আমার বাবা মেয়র থাকা অবস্থায় সবসময় তার কাছে নগরের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়ে জানতে চেয়েছি। সেগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে একটি পরিপূর্ণ নগর গড়তে চাই। আমার বিশ্বাস জনগণ দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তবে আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। ১৩ বছর ধরে হারানো ভোটাধিকার ফিরে পেতেই তারা ধানের শীষের প্রার্থীকে জয়ী করবেন।

নির্বাচনে ঢাকাবাসীর প্রতি আপনার আহ্বান কী হবে?

ইশরাক হোসেন : এখন যারা দায়িত্বে আছেন তারা কেউ নির্বাচিত নন। ফলে তাদের জবাবদিহিতাও নেই। জনগণের অধিকার বা নগরবাসীর যে সুযোগ-সুবিধা, সে বিষয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। আমি নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানাব, ১ ফেব্রুয়ারি সব ভয়ভীতি উপেক্ষা করে আপনারা অবশ্যই ভোট দিতে ভোটকেন্দ্রে যাবেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.