জনভীতি রোগে ভুগছে সরকার, মানুষ দেখলেই এখন ভয় পায়: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার জনভীতি রোগে ভোগে। মানুষ দেখলেই ভয় পায়। নির্বাচনগুলো সেভাবেই করে যাতে দলগুলোকে বাদ দিয়ে করা যায়। সেই পদ্ধতিতেই নির্বাচন করে। অসুখটাই তাই, রোগটাই তাই। তারা ভয় পাচ্ছে এভাবে যদি জনগণ জেগে ওঠে তাহলে উত্তাল সৃষ্টি হবে, আর হবেই। তখন তাদের অত্যন্ত ধিকৃত অবস্থায় চলে যেতে হবে।
গতকাল (২১ অক্টোবর) শুক্রবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, কি কারণে জনগণকে বাধা দিয়ে খুলনার সমাবেশকে বন্ধ করতে চাচ্ছে সরকার। তার একটাই কারণ, সমাবশে মানুষ যদি বাড়তে থাকে তাদের ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব হবে না। জনগণের উত্তাল তরঙ্গে তাদের ভেসে যেতে হবে।
খুলনায় বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার একটি সন্ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আন্দোলন করছি। এরই অংশ হিসেবে শনিবার খুলনায় আমাদের সমাবেশ। এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার একটি সন্ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করছে খুলনায়। পথে পথে আমাদের নেতাকর্মীদের, সাধারণ মানুষদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, খুলনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য চন্দ্র রায় যে বাড়িতে অবস্থান করেছিলেন বৃহস্পতিবার রাতে সেই বাসায় পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে সেখান থেকে ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি জানতে পেরেছি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সড়কে যাকে-যেখানে পাওয়া যাবে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। বৃহস্পতিবার তারা (আওয়ামী লীগ) লাঠিসোঁটা রামদা নিয়ে শোডাউন করেছে। মোটরসাইকেল নিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে।
সন্ত্রাস সৃষ্টির ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দাবি করেন মির্জা ফখরুল। একই সঙ্গে খুলনায় সমাবেশে যাতে বাধার সৃষ্টি করা না হয় সে আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, খুলনায় যদি কোনো সমস্যার সৃষ্টি হয় এর দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। এতে প্রমাণিত হবে এ সরকার গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে না। আমাদের সমাবেশ তারা করতে দিতে চায় না।
খুলনা সমাবেশকে কেন্দ্র করে সব গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দাবি করে ফখরুল বলেন, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করা হচ্ছে। এখানে প্রমাণিত হয়েছে সরকার চায় না একটি গণতান্ত্রিক উপায়ে মানুষ তাদের কথা, বক্তব্য, প্রতিবাদ প্রকাশ করুক। একটি সংঘাতের দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য সচেষ্টভাবে তারা চেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, আপনারা অমর্ত্য সেনের বইটি পড়েছেন। সেখানে ৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ নিয়ে তিনি লিখেছেন। ৭৪ সালের দুর্ভিক্ষটি ছিল মানবসৃষ্ট। অর্থাৎ সে সময় যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতার কারণে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। আজকে সেই একই কারণে বাংলাদেশের ঘটনা ঘটছে। এ কথাগুলো আমরা বারবার বলে আসছি। বাংলাদেশের কৃষকদের প্রত্যেক জনকে একটি করে সোনার মেডেল দেওয়া উচিত। কারণ তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে আমরা কোনোরকমে খেয়ে বেঁচে আছি। এরা দুর্নীতির জন্য ব্যবস্থাগুলো করছে। মুখে বলে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ আর লাখ লাখ টন বিদেশ থেকে আমদানি করছে। এদের পুরো লক্ষ্যটি হচ্ছে লুট করা, চুরি করা। দুর্ভিক্ষের আগাম পদধ্বনি শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। এখন প্রধানমন্ত্রী নিজেই এ কথা বলছেন। অর্থাৎ তাদের এই যে ব্যর্থতা এটা এখান থেকেই বোঝা যায়।