রাশিয়া এবং চীনের সঙ্গে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে যুক্তরাষ্ট্র
সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বলেছেন, “আমরা রাশিয়া এবং চীনের সঙ্গে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছি। এই পরিস্থিতি আংশিকভাবে আমরা নিজেরাই তৈরি করেছি, এমনকি কীভাবে এটি শেষ হবে বা পরবর্তীতে কী হতে চলেছে, সে সম্পর্কে কোনো ধারণা ছাড়াই।”
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, প্রথাগত কূটনীতি বর্জন করেছে ওয়াশিংটন; সেইসঙ্গে যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে বিশ্ব আজ ইউক্রেন এবং তাইওয়ান যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
রাশিয়ার সঙ্গে বিরোধের অবসানে ইউক্রেনকে নিজেদের কিছু অঞ্চল ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে এর আগেও বিতর্কের সম্মুখীন হয়েছেন সাবেক এই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
শনিবার (১৩ আগস্ট) প্রকাশিত সাক্ষাত্কারে কিসিঞ্জার আরও বলেন, “আমরা রাশিয়া এবং চীনের সঙ্গে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছি। এই পরিস্থিতি আংশিকভাবে আমরা নিজেইরাই তৈরি করেছি, এমনকি কীভাবে এটি শেষ হবে বা পরবর্তীতে কী হতে চলেছে, সে সম্পর্কে কোনো ধারণা ছাড়াই।”
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন হেনরি কিসিঞ্জার। ১৯৭০’র দশকে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে বিখ্যাত পিংপং কূটনীতির উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। এর সূত্র ধরেই ১৯৭২ সালে প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে চীন সফর করেছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন। কিসিঞ্জারের কূটনীতির লক্ষ্য ছিল বিশ্বরাজনীতিতে সমাজতন্ত্রের প্রভাব ঠেকিয়ে বেইজিংকে মস্কো থেকে দূরে সরিয়ে রাখা, যাতে বিশ্বরাজনীতিতে শক্তিসাম্য বজায় থাকে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময়ে এসে চীন এবং রাশিয়া নিজেদের বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করেছে। সেইসঙ্গে, নিক্সন-কিসিঞ্জারের সময় থেকে তাইওয়ানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে অস্পষ্ট নীতিতে চলতো, সেই নীতিও ভঙ্গ করেছে বাইডেন প্রশাসন। মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর তারই প্রমাণ দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এমন নীতি চীনকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। চীন-মার্কিন সম্পর্ককের উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
কিসিঞ্জারের মতে, যুক্তরাষ্ট্র এখন আর রাশিয়া কিংবা চীনের বিরুদ্ধে, অন্যের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে নেই; যেমনটি ছিল সত্তরের দশকে।
“এখন যেটি করা যেতে পারে তা হলো, উত্তেজনাকে আর না বাড়িয়ে বিকল্প পথ তৈরি করা”, বলেন কিসিঞ্জার।