৯ মাসে সরকারের পুঞ্জীভূত ঋণ বেড়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা
বিদয়ী অর্থবছরের (২০২১-২০২২) প্রথম ৯ মাসে সরকারের পুঞ্জীভূত ঋণ বেড়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা। বর্তমানে সরকারের ঋণের স্থিতি রয়েছে ১২ লাখ ৪৯ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা। এই ঋণের মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের স্থিতি হচ্ছে ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা (এটি মোট পুঞ্জীভূত ঋণের ৬২%) এবং বৈদেশিক ঋণের স্থিতি হচ্ছে ৪ লাখ ৭১ হাজার ৯০৩ কোটি টাকা (এটি মোট পুঞ্জীভূত ঋণের ৩৮%)।
সরকারের অর্থ বিভাগের করা এক নিজস্ব বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়েছে, সমাপ্ত অর্থবছরের(২০২১-২০২২) প্রথম ৯ মাসে (গত মার্চ) সরকারের মোট ঋণস্থিতি (অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক) দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৪৯ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা। এটি মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি)-এর ৩১ দশমিক ৪২ শতাংশ। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছর শেষে বা ২০২১ সালের জুন শেষে সরকারের পুঞ্জীভূত ঋণস্থিতি ছিল ১১ লাখ ৪২ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা। এটি ছিল জিডিপির ৩২ দশমিক ৩৮ শতাংশ। সে হিসাবে ৯ মাসের ব্যবধানে সরকারের ঋণস্থিতি বেড়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা। তবে টাকার অঙ্কে ঋণস্থিতি বাড়লেও জিডিপির অনুপাতে ঋণস্থিতি কমেছে প্রায় ১ শতাংশ। কারণ এবার নতুন ভিত্তি বছর হিসেবে জিডিপির আকার অনেকখানি বেড়েছে বলে এ ঋণের স্থিতি কমে গেছে।
অর্থ বিভাগ সূত্রমতে, করোনাজনিত কারণে সরকারের ঋণ বেড়ে যাওয়ায় সার্বিক ঋণস্থিতি বেড়েছে। তবে এটি এখনো ঝুঁকিসীমার অনেক নিচে রয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর ‘টেকসই ঋণ কাঠামো’ (ডেট সাসটেইনেবল ফ্রেমওয়ার্ক-ডিএসএফ)-এর মানদণ্ড অনুযায়ী, জিডিপির ৫৫ শতাংশ ঋণকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
অর্থ বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সরকারের মোট পুঞ্জীভূত ঋণের মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের স্থিতি হচ্ছে ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা (এটি মোট পুঞ্জীভূত ঋণের ৬২%) এবং বৈদেশিক ঋণের স্থিতি হচ্ছে ৪ লাখ ৭১ হাজার ৯০৩ কোটি টাকা (এটি মোট পুঞ্জীভূত ঋণের ৩৮%)।
গত ২০২০-২১ অর্থবছর শেষে অর্থাৎ ২০২১ সালের জুন শেষে সরকারের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের পুঞ্জীভূত স্থিতি ছিল ৭ লাখ ২২ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা এবং ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা।
সরকারের অভ্যন্তরীণ ঋণস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে গৃহীত ঋণের তুলনায় ব্যাংক-বহির্ভূত খাত থেকে সরকার অধিক পরিমাণ ঋণ নিয়েছে। ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে গৃহীত সরকারের পুঞ্জীভূত ঋণের পরিমাণ ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা এবং ব্যাংক-বহির্ভূত খাত থেকে গৃহীত ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ১২ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সঞ্চয়পত্র খাত থেকে গৃহীত পুঞ্জীভূত ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৩ লাখ ৬২ হাজার ১৬০ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগ বলছে, সঞ্চয়পত্র খাতে চলমান সংস্কার কার্যক্রম এ খাতে সরকারের ঋণ নির্ভরতা কমিয়ে আনবে। একইভাবে অভ্যন্তরীণ ফিন্যান্সিয়াল মাকের্টেরও সংস্কার প্রয়োজন।