স্বপ্নবাজ মা-মেয়ে একসঙ্গে বসেছেন এইচএসসি পরীক্ষায়
লেখাপড়া করার অদম্য ইচ্ছে ছিল কিন্তু পরিবারের চাপে অল্প বয়সেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন মারুফা আক্তার(৩৬)। ২০০৩ সালে দেওয়ার কথা ছিল এসএসসি পরীক্ষা। বিয়ে হয়ে যাওয়ায় সেবছর আর পরীক্ষা কেন্দ্রে বসতে পারেননি তিনি।
বুকের ভিতর লালিত স্বপ্ন আর এগেোয়নি। প্রচন্ড ইচ্ছা শক্তির ওপর ভর করে মারুফা নতুন করে শুরু করেন লেখাপড়া। নিজের মেয়ের সঙ্গে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হন। মেয়ের সাথেই একসঙ্গে পাশ করেন এসএসসি পরীক্ষা। এবার সেই মেয়ের সঙ্গেই এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনি।
স্বপ্নবাজ এই মায়ের বাড়ি নীলফামারী ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানী গ্রামে। শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারী মহিলা মহাবিদ্যালয় থেকে চলতি বছর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ‘ডিমলা টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউট’ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি।
আর তার মেয়ে শাহী সিদ্দিকা (১৮) একই প্রতিষ্ঠান থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ডিমলা সরকারী মহিলা মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
মারুফা আক্তারের স্বামী পেশায় একজন ব্যবসায়ী। মারুফা আক্তারের চার সন্তানের মধ্যে দুই ছেলে আর দুই মেয়ে।
মারুফা আক্তারের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘ছোট বেলায় থেকে আমি পড়াশুনায় মনযোগী ছিলাম। কিন্তু বিয়ের কারণে লেখা-পড়া চালিয়ে যেতে পারিনি। বিয়ের ১৭ বছরে পরে স্বামীর অনুপ্রেরনায় এসএসসি দেই এবছর এইচএসসি পরীক্ষা দেব। এসএসসিতে মেয়ের চেয়ে ফলাফল ভালো হয়েছে এবারও ভালো ফলাফল হবে আশা করি। উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফলাফল আসলে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য চেষ্টা করবো।’
মারুফা আক্তারের স্বামী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার জন্য একটু কষ্ট হলেও আমি তার ইচ্ছার মর্যাদা দিয়েছি। সে যতদূর পড়াশোনা করতে পারে, আমি চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করব।’