গাবতলীতে হামলা ঘটনার লিখিত অভিযোগ দিলেন তাবিথ
মিরপুরের গাবতলীতে নির্বাচনী প্রচার চালানোর সময় অতর্কিত হামলায় নেতা-কর্মী-সমর্থকদের আহত হওয়ার লিখিত অভিযোগ করেছেন বিএনপির মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল।
আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আতিকুল ইসলামের নেতাকর্মী সমর্থক ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সারওয়ার মাসুমের (ঠেলাগাড়ি প্রতীক) উপস্থিতে এ হামলা হয়েছে বলে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন তাবিথ।
ওই আক্রমণের সময় পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিষ্ক্রিয় ছিলেন বলেও অভিযোগ করেছেন ঢাকা উত্তরের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী।
মঙ্গলবার রাতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে এসব অভিযোগ করেন তিনি।
লিখিত অভিযোগে তাবিথ আউয়াল বলেন, ২১ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) সকাল ১০টা থেকে আমি সিটি করপোরেশন বিধিমালা ২০১৬ এর বিধান পালন করে নির্বাচনী প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা তথা কোটবাড়ি, বাজারপাড়া, হরিরামপুর, গোলারটেক জহুরাবাদ ইত্যাদি এলাকায় পথসভা ও গণসংযোগে যাই। এ সময় আমার সঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও স্থানীয় নেতা-কর্মী সমর্থক ছিলেন।
পথসভাটি পূর্বনির্ধারিত ছিল এবং এ বিষয়ে দারুসসালাম থানায় লিখিত অবহিত করা হয়েছিল জানিয়ে তাবিথ আউওয়াল অভিযোগ করেছেন, ওই গণসংযোগে প্রতিপক্ষ নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আতিকুল ইসলামের নেতাকর্মী সমর্থক ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সারওয়ার মাসুম উপস্থিতে অতর্কিতভাবে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ওপর এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা, স্থানীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের ওপর জঘন্যভাবে আক্রমণ করে।’
তিনি বলেন, এ ঘটনায় আমি ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও আমিসহ শারীরিক নির্যাতনে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আমার কর্মী-সমর্থকরা আহত হন। এ সময় পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও নিষ্ক্রিয় ছিলেন। তারা সক্রিয় থাকলে এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না। উচ্ছৃঙ্খল নেতা-কর্মী-সমর্থকদের শারীরিক নির্যাতন নিপীড়ন ও জঘন্য আক্রমণ সিটি করপোরেশনের বিধিমালা ২০১৬ এর বিধি-বিধান চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে বলে মনে করি।
তিনি চিঠিতে যোগ করেন, এমতাবস্থায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য এহেন ন্যক্কারজনক ঘৃণ্যতম আক্রমণের ঘটনা এবং নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাশেম বলেন, আমরা রাত ৮টা ২৫ মিনিটে তার অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
তাবিথ আউয়াল পথসভার বিষয়টি আগেই সংশ্লিষ্ট থানাকে জানিয়েছিলেন বলেও জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাশেম।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার মিরপুরের গাবতলীতে নির্বাচনী প্রচার চালানোর সময় তাবিথ আউয়ালের ওপর হামলা হয়। হামলায় তিনি আহত হন।
হামলার পরপরই রাস্তায় দাঁড়িয়ে তাবিথ অভিযোগ করেন, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মুজিব সারোয়ারের (ঠেলাগাড়ি প্রতীক) নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে।
তাবিথের বক্তব্য শেষ হতে না হতেই আবার ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে তাদের ওপর হামলা করে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন ব্যক্তি।
ঘটনাস্থলে থাকা বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমাদের ওপর দুই দফা হামলা হয়েছে। আমাদের প্রার্থীসহ ১০ থেকে ১২ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে মিরপুর ৯নং ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী সাইদুল ইসলাম সাইদুল যুগান্তরকে বলেন, রড-বাঁশ দিয়ে আমাদের গণসংযোগে স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায়।
‘এ সময় তাবিথ আউয়ালকে ঘুষি দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়া হয়। এ ছাড়া আমাকে রড দিয়ে মারধর করা হয়।’
হামলায় তিনি ও তাবিথসহ ৭০-৮০ বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থক আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন সাইদুল।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মিরপুর ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুজিব সরোয়ার মাসুমের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এর আগে ১২ জানুয়ারি মিরপুর-১ নম্বরের উত্তর বিশিলে শাহআলী মাজারের সামনে পুলিশের সামনেই তাবিথ আউয়ালের প্রচার মিছিলে হামলা হয়।
ওই হামলার জন্য আওয়ামী লীগকর্মীদের দায়ী করে তাবিথ বলেন, শাহআলী মাজারের সামনে প্রচারের সময় জয়-বাংলা স্লোগান দিয়ে হামলা চালানো হয়। পুলিশের সামনেই আমাদের ওপর হামলা হয়েছে।