প্রেসব্রিফিং —
মঙ্গলবার, জানুয়ারি ২১, ২০২০, রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয়কার্যালয়ে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ প্রেসব্রিফিং এর বক্তব্য।
সুপ্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা,
আসসালামু আলাইকুম। সবাইকে জানাচ্ছি আমার আন্তরিক উষ্ণ শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা।
১৯ জানুয়ারী ছিল ক্ষনজন্মা মহাপুরুষ মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী দর্শণের প্রবক্তা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৪তম জন্মবার্ষিকী। তাঁর দূরদর্শিতা, দেশপ্রেম, সাহস, বীরত্ব, সততা, দক্ষতা, কর্মক্ষমতা, পরিকল্পনা, জনঘনিষ্ঠতা, ঔদার্য্য, আড়ম্বরহীনতা সবকিছুই কিংবদন্তী হয়ে আছে। হি ওয়াজ নট অনলি এ ভিশনারি লিডার, হি ওয়াজ এ ম্যান অব এ্যাকশন। এমন একজন রাষ্ট্রনায়ক যখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল দেশ ও জাতির জন্য তখনই ষড়যন্ত্রের হিং¯্র ছোবল তাঁকে ছিনিয়ে নিয়েছে।
তিনি আর কোনোদিন সশরীরে ফিরবেন না আমাদের মাঝে। তবে আমাদের পাথেয় হয়ে অমলিন রয়েছে তাঁর দিকনির্দেশনা, আদর্শ, কর্মসূচি ও তাঁর ব্যক্তিগত জীবনাচরণ। আমাদের রাষ্ট্রীয় স্বপ্নের অনন্য রূপকার জিয়াকে ঘিরে সারাদেশে মানুষের মধ্যে তাঁর প্রতি যে আবেগ-উচ্ছাস ও সেই সাথে অবৈধ সরকারের প্রতি তীব্র ক্ষোভ ও দ্রোহ পরিলক্ষিত হয়েছে তা অভাবনীয়। জিয়ার মাজারে মানুষের ঢল নেমেছিল। দীর্ঘ প্রায় দুই বছর যাবত শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার রোষে কারাবন্দী বিনা চিকিৎসায় পঙ্গু প্রায় জনতার প্রাণপ্রিয় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চান দেশের প্রতিটি মানুষ। জিয়া-জন্মবার্ষিকীতে প্রাণপ্রিয় নেতা দেশনায়ক তারেক রহমানের নামে মিথ্যা মামলা ও ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন নেতা-কর্মীরা। আমরা গুরুতর অসুস্থ দেশনেত্রীকে দ্রুত নি:শর্ত মুক্তির দাবী জানাচ্ছি। এই অনির্বাচিত নিশিরাতের সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ঘোষনা করুন। তা নাহলে রাজপথে জনবিস্ফোরণ রোধ করতে পারবেন না। তখন পালানোর পথও রুদ্ধ হয়ে যাবে।
সম্মানিত সাংবাদিক ভাই বোনেরা,
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সুযোগ্য উত্তরসুরী, বাংলাদেশের মানুষের আশা-আকাংখার মূর্ত প্রতীক দেশনায়ক তারেক রহমান রবিবার লন্ডনে শহীদ জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকীর জনাকীর্ণ আলোচনা সভায় মাতৃভূমির ভৌগোলিক স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ আন্দোলনে রাজপথে নেমে আসার যে ডাক দিয়েছেন তাতে দল মত নির্বিশেষে দেশপ্রেমিক প্রতিটি মানুষকে এক কাতারে এসে সাড়া দিতে ও সকলকে সক্রিয় শরিক হতে উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি। এই ভয়াবহ দু:সময়ে গোটা জাতির মুলমন্ত্র হোক ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’। সংশপ্তক আন্দোলনের মুল শ্লোগান হোক ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’। তারেক রহমান সাহেব ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ আন্দোলনের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, স্বাধীন দেশের নাগরিকরা নিজ দেশেই এখন যেন পরাধীন। শুধু পরাধীনই নয়, আরো উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, এখন ধীরে ধীরে দেশের ভৌগোলিক স্বাধীনতাও হুমকির মুখে ফেলে দেয়া হয়েছে।
প্রায় প্রতিদিন সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিকদের পাখির মতো গুলী করে হত্যা করা হচ্ছে, গত ২০ দিনে ১০ জন, এক বছরে ৫০ এর অধিক এবং গত দশ বছরে প্রায় ৩৫০ জন নিরীহ বাংলাদেশীকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে গুলি করে হত্যা করেছে বিএসএফ। নানা অজুহাতে ভারত থেকে পুশ ব্যাক চলছে, বাংলাদেশের প্রদিবাদ করার সাহস নেই। বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের নামোল্লেখ করে ভারত বিতর্কিত নাগরিকপঞ্জী আইন পাশ করার ফলে বাংলাদেশে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সুতরাং এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় ভেবে চুপ করে থাকার সুযোগ নেই। তারপরও ভয়াবহ বিপদের এই সত্য কথাটি বাংলাদেশের মেরুদন্ডহীন নিশিরাতের সরকার সাহস করে বলতে পারছেনা। প্রতিবাদ করতে পারছে না। বাংলাদেশ তিস্তা চুক্তি করতে ব্যর্থ হচ্ছে অথচ বছরের পর বছর ধরে ফেনী নদীর পানি নিচ্ছে ভারত। বাংলাদেশের নিজেদের অধিকারের পক্ষে কথা বলার সাহস নেই।
কারণ বাংলাদেশের নিশিরাতের সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতিতে বিশ^াসী। বিমানবন্দর তৈরির অজুহাতে বাংলাদেশের জমি দখল করতে চায় ভারত অথচ বাংলাদেশের কোনো প্রতিবাদ নেই। পররাষ্ট্রনীতি হওয়া উচিৎ পারস্পরিক স্বার্থ ও মর্যাদার ভিত্তিতে অথচ বাংলাদেশ নির্লজ্জভাবে চালু করেছে স্বামী-স্ত্রীর কূটনীতি। বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে প্রবাসী বাংলাদেশীরা নির্যাতিত হচ্ছে, লাঞ্ছিত হচ্ছে, সহায় সম্বলহীন অবস্থায় বিদেশ থেকে দেশে ফিরতে বাধ্য হচ্ছে, অথচ কিছুই করতে পারছেনা সরকার। পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে ভারত বাংলাদেশের কাছে প্রস্তাব করেছে, পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই একটি ‘বিশেষ পাশ ইস্যুর মাধ্যমে ৪৮ অথবা ৭২ ঘন্টার জন্য ভারতীয় নাগরিকদেরকে বাংলাদেশে প্রবেশের সুযোগ দেয়ার জন্য। এ ধরণের পরিকল্পনা হবে বাংলাদেশের চরম স্বার্থ বিরোধী এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি।
জনাব তারেক রহমান বলেছেন, ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ আন্দোলন শুধুমাত্র বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার আন্দোলন নয়, এই আন্দোলন মাতৃভূমির স্বাধীনতা রক্ষার আন্দোলন, জনগণের বাংলাদেশ জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার আন্দোলন। গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, বাক ও ব্যক্তিস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। এখনই বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে দলমত ভুলে সকলে না দাঁড়ালে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে দেশ। তখন আর কিছু করার থাকবে না।
দেশ, জাতি ও মাতৃভূমির স্বাধীনতা হরণের এই ক্রান্তিকালে দূর থেকে সমালোচনা পরিত্যাগ করে বিএনপির সাথে রাজপথের আন্দোলনে শরিক না হলে নিশিরাতের সরকারের দ্বারা আগামীতে সকলের জন্য ভয়াবহ ও করুণ পরিনতি অপেক্ষা করছে উল্লেখ করে দেশনায়ক তারেক রহমান যা বলেছেন তা প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছেন, দুর থেকে নিরাপদে বসে সমালোচনা করা যায়। যারা সমালোচনা করছেন আপনাদের যদি দেশের ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের এই ক্রান্তিকালে পাশে না পাই তবে সম্মানের সাথে জানাতে চাই কয়দিন পর আপনাদের কথা বলার অধিকারও থাকবে না। এখনো নিশিরাতের সরকারের জেল জুলুম হয়রানি উপেক্ষা করেও বিএনপি এবং বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাই দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে সক্রিয়। বিএনপির পাশে থেকে প্রত্যেকটি সচেতন মহল ও সমালোচকদেরকে আন্দোলনে রাজপথে থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। বিএনপিসহ বাংলাদেশের পক্ষের সকল শক্তিকে এই আন্দোলনর জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়ার উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি। সকলের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমেই সুসংহত হবে দেশের সার্বভৌমত্ব। মুক্ত হবেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। পুনরুদ্ধার হবে গণতন্ত্র। প্রতিষ্ঠিত হবে বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা। নিশ্চিত হবে গণমাধ্যম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা।
সুহৃদ সাংবাদিকবৃন্দ,
বাংলাদেশের প্রাণ দেশনেত্রীকে বিনা চিকিৎসায় কারারুদ্ধ রেখে শেখ হাসিনা যে হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন তা আজ আর দেশবাসীর জানতে বাকি নেই। তাঁর জামিনে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সরাসরি বাধা দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে দেশনায়ক তারেক রহমান বলেছেন, বেপরোয়া দুর্নীতি লুটপাট, অন্যায় অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিশিরাতের এই অবৈধ সরকার সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে কারাবন্দি করে রেখেছে। তাঁকে সুচিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। জামিন পাওয়া তাঁর আইনগত অধিকার। তাঁকে জামিন পর্যন্ত দেয়া হচ্ছেনা। বিচারকের আসনে বসে আওয়ামী লীগের কথা মতো যেসব বিচারকগণ নিরপরাধ মানুষের সাথে অন্যায় আচরণ করছেন তাও দেশবাসী দেখছে।
সচেতন বন্ধুরা,
আমরা অব্যহতভাবে বলে আসছি ডিজিটাল ডাকাতির এবং লুটপাটের অপর নাম ইভিএম। প্রতিবেশি ভারতের চেয়ে ১১ গুন বেশি টাকায় দুর্নীতির মাধ্যমে ইভিএম ক্রয় করে জনগণের উপর জোর করে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। ইভিএম ব্যবহারের মুল লক্ষ্য অর্থ লুটপাট এবং বর্তমান ভোট ডাকাত সরকারের লোকদেরকে জনপ্রতিনিধি বানানো। দেশনায়ক তারেক রহমান ইভিএম নিয়ে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেছেন, নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের ভোটে চুরির সহযোগী। নির্বাচন কমিশন জনগণের কাছে এখন একটি হাসি-তামাশার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তাদের কাজ হলো একদিকে রাতের অন্ধকারে ভোট ডাকাতি অন্যদিকে সারাবিশ্বে বাতিল হয়ে যাওয়া ভোট চুরির ডিজিটাল যন্ত্র ইভিএম কেনার নাম করে শত শত কোটি টাকা লুটপাট। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রতিটি শাসনামলেই আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতির অতীত-বর্তমানের প্রামান্য চিত্র তুলে ধরে বলেছেন,
স্বাধীনতার দেড় দুই বছরের মাথায় ৭৩ সালের নির্বাচনেও হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় ব্যালট বাক্স এনে তাদের দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করেছিল আওয়ামী লীগ। রেডিও টিভিতে ঘোষণা দিয়েও প্রার্থীর নির্বাচনী ফলাফল পাল্টে দিয়েছিলো আওয়ামী লীগ। কি কারণে স্বাধীনতার মাত্র দেড় বছরের মাথায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও আওয়ামী লীগকে ভোট চুরির আশ্রয় নিতে হয়েছে, এটি সবারই জিজ্ঞাসা। ৯৬, ২০০৮, ২০১৪ কিংবা ২০১৮ প্রতিটি নির্বাচনেই সেই ৭৩ সালের মতোই আওয়ামী লীগকে ভোট ডাকাতির আশ্রয় নিতে হয়েছে। ২০১৮ সালের পূর্ব পর্যন্ত এই সরকার ছিল অবৈধ সরকার। ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর রাত থেকে এই অবৈধ সরকারের নতুন খেতাব নিশিরাতের অবৈধ সরকার।
জাতীয় কিংবা স্থানীয় নির্বাচনে যেভাবে বিএনপিকে হারিয়ে দেয়া হচ্ছে, এটা আসলে বিএনপির-ই হার নয়, বরং দেশের মানুষকে হারিয়ে দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশকে হারিয়ে দেয়া হচ্ছে। কারণ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি হেরে গেলে সেটি হতো বিএনপির হার। বিএনপি কিংবা প্রতিপক্ষকে যেভাবে হারানো হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে সবাই রাজপথে না নামলে আগামী দিনগুলোতে নিরাপদ দূরত্বে থাকলেও কারো মুখ খোলার সুযোগ রাখবেনা নিশিরাতের এই অবৈধ সরকার।
বাংলাদেশের জন্ম ও বিকাশে স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের ভূমিকা উল্লেখ করে তারেক রহমান আরও বলেছেন, ৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিরোধী ষড়যন্ত্রের মোকাবেলায় ৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্ব, দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়া, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই জিয়াউর রহমান ছিলেন সফল ও সার্থক। তাই, যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকবেন জনগণের হৃদয়ে, মানুষের ভালোবাসায়। তারেক রহমান আরো বলেছেন, জিয়াউর রহমানের জন্য জনগণের ভালোবাসা আদায়ে আদালতের আশ্রয় নিতে হয়না, কাউকে কারাদন্ড দিতে হয়না, মানুষকে র্যাব-পুলিশের ভয় দেখাতে হয়না। কারণ, জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস ছিল জনগণ। “জনগণ যদি রাজনৈতিক দল হয়, তা’হলে আমি সেই দলে আছি” জিয়াউর রহমানের এই উক্তি উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের সেই রাজনৈতিক দলই হচ্ছে বিএনপি। তাই বছরের পর বছর ধরে প্রতিহিংসার রাজনীতি কিংবা মিথ্যাচার করেও জিয়াউর রহমান কিংবা তার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপিকে জনবিচ্ছিন্ন করা যায়নি। বরং জনগণ ভোটাধিকার পেলে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বিএনপি যায়।
বন্ধুরা,
নিশিরাতের সরকার তথাকথিত উন্নয়নের গণতন্ত্রের নামে সীমাহীন দুর্নীতি-লুটপাটের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছে। তারেক রহমান যথার্থই বলেছেন, অবৈধ সরকার দেশের সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। অথচ তারা কথায় কথায় বলছে, উন্নয়ন আগে গণতন্ত্র পরে। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, দেশে এখন কোন গণতন্ত্রই নাই। আর উন্নয়নের নামে চলছে দুর্নীতি। নিশিরাতের সরকার সব ক্ষেত্রেই ব্যর্থ। এমনকি তাদের প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় প্রমাণ করে, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগই সবচেয়ে বড় রাজাকারের দল।
সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি পরিশেষে আবারো বলবো বাংলাদেশের আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান সাহেব মাতৃভূমির ভৌগোলিক স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায় ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ আন্দোলনে রাজপথে নেমে আসার যে ডাক দিয়েছেন তাতে দল মত নির্বিশেষে দেশপ্রেমিক প্রতিটি মানুষ এক কাতারে এসে ঝাঁপিয়ে পড়–ন। সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে শরিক হউন। অন্যথায় চরমতম দুর্দিন আমাদের গোটা দেশ ও জাতির অস্তিত্ব তছনছ করে দিবে। চারদিক থেকে নিকষকালো আঁধার ঘনিয়ে আসছে।
সাংবাদিক বন্ধুগণ,
গতকাল চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে এরশাদ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা এবং ২৪ জনকে হত্যার ঘটনায় ৫ আসামীকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। আমাদের বক্তব্য হলো-এই মর্মান্তিক ঘটনাটি যখন সংঘটিত হয় তখন এরশাদ ক্ষমতায়, অথচ হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ছিল আওয়ামী লীগের বড় সহযোগী। কিন্তু এরশাদসহ সেই সময় ক্ষমতাসীনদের কারোরই এই মামলায় নাম ছিল না। ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারী ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে হামলায় কয়েকজনের প্রাণহানি এবং বেশ কিছু সংখ্যক মানুষের আহত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনায় গতকাল ১০ জনকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে। এই রক্তাক্ত ঘটনাটি ঘটেছে ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারী, আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকা অবস্থায়। এখন আমাদের বক্তব্য যে, ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপি আমলে সংঘটিত হওয়ার জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দকে আসামী করা হয়েছে, এটি যে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সেটি আবারও প্রমানিত হলো গতকালের আদালতের রায়ের মাধ্যমে। সুতরাং আওয়ামী লীগ তাদের রাজনৈতিক প্রয়োজনে যখন যা ইচ্ছে সেটি করতে পারে। সেখানে কোন বিবেক, নীতি-নৈতিকতার কোন ধার ধারে না। শুধু ম্যাকিয়াভেলির নীতিই তারা আতস্থ করেছে। ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলাটি যে একেবারেই প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য সেটি তাদের প্রতিটি ঘটনাতেই মিলে যায়। বিনাশ ও সংকীর্ণতার পথ অবলম্বন করে তারা ন্যায়বিচারকে বাংলাদেশ থেকে ঠেলে বিতাড়িত করেছে। অসহিষ্ণু ও নিপীড়ণের নির্মম আঘাতে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতেই তারা ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় নিজেদের লোককে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে বিএনপি নেতৃবৃন্দকে জড়ানো হয়েছে।
ধন্যবাদ সবাইকে। আল্লাহ হাফেজ।