বাংলাদেশে করোনার চতুর্থ ঢেউ আরো বিস্তৃতের আশঙ্কা

0

বাংলাদেশে এখন চলছে কারোনার চতুর্থ ঢেউ। আর সামনেই মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-আজহা। স্বাস্থ্য বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আসছে উৎসবে করোনা আরো বিস্তৃত হবে।

তাদের মতে, সবচেয়ে সঙ্কট তৈরি করছে বুস্টার ডোজ নেয়ায় মানুষের অনাগ্রহের বিষয়টি। আর করোনার নতুন উপধরন উদ্বেগ ছড়াচ্ছে। কারণ এখন এই উপধরনের দাপট চলছে বলে জানান তারা।

সরকারের হিসেব অনুযায়ী, গত ২০ জুন শনাক্তের হার শতকরা ১০ ভাগ ছাড়িয়ে গেছে। ওই দিন সারাদেশে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৮৭৩ জন। মারা গেছেন একজন। আক্রান্তের হার ছিল শতকরা ১০ দশমিক ৮৭ ভাগ। আক্রান্তের এই হারকে করোনার উচ্চমাত্রা বলা হয়। এরপর ১২ দিনের মাথায় গত ২ জুলাই মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১০৫ জন। মারা গেছেন ছয়জন। আক্রান্তের হার ১৩ দশমিক ২২ ভাগ। তার এক দিন আগে ১ জুলাই আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৮৯৭ জন। মারা গেছেন পাঁচজন। আক্রান্তের হার ১৫ দমমিক ৩১ ভাগ।

গত ১২ দিনে দেশে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৯ হাজার ৫৮৭ জন। আর মারা গেছেন ২৮ জন।

এ পর্যন্ত সারাদেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ লাখ ৭৬ হাজার ৭৮৭ জন। মারা গেছেন ১৯ হাজার ১৬০ জন।

আক্রান্ত ও মারা যাওয়ার এই হিসাব স্বাস্থ্য অধিদফতরের টেস্টের ভিত্তিতে করা হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা: কামরুল ইসলাম বলেন, করোনা আবার বিশ্বের ১১০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশে প্রথমে ঢাকা শহরে চতুর্থ ঢেউ শুরু হলেও এখন দেশের সব বিভাগ ও জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। এখন আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। তা না হলে সামনে কুরবানির সময়ে এটা আরো বেশি আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

তিনি আরো বলেন, সরকার মাস্ক আবার বাধ্যতামূলক করার কথা বলেছে। কিন্তু এটা মনিটরিং করা হচ্ছে না। গরুর হাট বসে গেছে কিন্তু সেখানে কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। আর ঈদযাত্রায় যদি স্বাস্থ্যবিধির প্রতি এই উদাসীনতা থাকে তাহলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে বাধ্য।

সবাইকে টিকা ও বুস্টার ডোজ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, টিকা ও বুস্টার ডোজ যারা নিয়েছেন তারাও আক্রান্ত হচ্ছেন। এর কারণ হলো টিকার কার্যকারিতা থাকে ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ চতুর্থ ডোজ শুরু করেছে। আরো কিছুটা দেখে আমাদের চতুর্থ ডোজের ব্যাপারে চিন্তা করা উচিত।

রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা: মোশতাক হোসেন জানান, আমরা আগেই দেখেছি টিকাকে চ্যালেঞ্জ করে করোনা মানুষকে সংক্রমিত করছে। এখন যারা আক্রান্ত হচ্ছেন ও মারা যাচ্ছেন তারা বিএ ফাইভ উপধরনে আক্রান্ত হচ্ছেন। এর ক্ষতি করার ক্ষমতা বেশি। আক্রান্তরা গত তিন সপ্তাহ আগে আক্রান্ত হয়েছেন। এখন তা প্রকাশ পাচ্ছে। গতকাল শনিবার সংক্রমণ কিছুটা কমলেও আমার ধারণা মৃত্যু হার আরো বেড়ে যাবে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন টেস্ট অনেক কম হচ্ছে। টেস্ট অনেক বাড়িয়ে দেয়া উচিত এবং বিনামূল্যে করা উচিত। তাহলে বাস্তব চিত্র যেমন বুঝা যাবে তেমনি পজিটিভ লোককে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। তবে সেজন্য সরকারকে গরিব মানুষের প্রতি আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। তা না হলে তারা টেস্ট করাবেন না। তারা দিন আনেন দিন খান। তাদের আক্রান্ত হয়ে ঘরে থাকতে হলে আয় বন্ধ হয়ে যাবে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com