‘মন ভালো নেই’ লেখার কারণ জানালেন সেই শিক্ষার্থী
উত্তরপত্রে ‘আজকে আমার মন ভালো নেই’—লেখার কারণ দর্শানো নোটিশের (শোকজ) জবাব দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সেই শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) নোটিশের জবাবে তিনি জানিয়েছেন, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থেকেই এমনটি করেছেন। এরমধ্যে বিষয়টি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় মানসিক ও পারিবারিকভাবে আরও বিপর্যস্ত অবস্থায় আছেন।
জবি প্রশাসনের শোকজের জবাবে ওই শিক্ষার্থী বলেন, করোনার মধ্যে দীর্ঘ সময় একা থাকাসহ নানা কারণে মানসিক চাপ ও প্রচণ্ড একাকীত্ব অনুভব করি। আমার পরিবার ও বন্ধুবান্ধবও বিভিন্ন সময়ে এই পরিবর্তনের বিষয়টি বলেছে।
তিনি বলেন, আমি পরীক্ষার হল থেকে কোনো বিশেষ কারণ বা সুনির্দিষ্ট কিছু চিন্তা করে অতিরিক্ত উত্তরপত্রটি নেইনি। উত্তরপত্রটি আমার কোনো পরীক্ষার সরাসরি অংশও ছিল না। গত ১২-১৫ মে আমার প্রথম মিডটার্মের যে কোনো একটা কোর্সের পরীক্ষা শেষে বের হওয়ার সময় উত্তরপত্রটি ক্লাসের একটি টেবিলের ওপরে পড়ে থাকতে দেখি। অপ্রয়োজনীয় ভেবে বাসায় নিয়ে আসি এটি। আমি আমার কোনো শিক্ষকের সই জালিয়াতি করিনি কিংবা জালিয়াতির কথা চিন্তা করেও সই করিনি। এর সঙ্গে আমার কোনো শিক্ষকের সইয়ের মিল নেই।
শুধুমাত্র নিছক মজার ছলে নিজের ফেসবুক আইডিতে ওই বাক্য লেখা উত্তরপত্রটি পোস্ট করেছিলেন বলে জানান তিনি।
ওই শিক্ষার্থী বলেন, পোস্ট করার কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার কাছে মনে হয়েছে বিষয়টি ঠিক হয়নি। তখনই ডিলিট করে দেই। কিন্তু বিষয়টা পরে আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। আসলে আমি কল্পনাতেও ভাবিনি যে এটা শেষ পর্যন্ত এত মারাত্মক আকার ধারণ করে আমার ব্যক্তিগত জীবনে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানে এভাবে প্রভাব ফেলবে।
একই সঙ্গে এই ভুলের জন্য অনুতপ্ত প্রকাশ করেছেন ওই শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনকানুন সম্পর্কে ধারণা কম থাকায় মানবিক দৃষ্টিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.মোস্তফা কামাল বলেন, ওই শিক্ষার্থীর ব্যাপারে তদন্ত চলছে। তারপর আলোচনার মাধ্যমে নেওয়া হবে সিদ্ধান্ত।
২৩ জুন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের ওই শিক্ষার্থীর লেখা ‘স্যার, আজকে আমার মন ভালো নেই’ উত্তরপত্রের প্রথম পৃষ্ঠার ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। যা পরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমালোচনা ও হাস্যরসের সৃষ্টি করে। এরপরই বিষয়টি নিয়ে তৎপর হয় জবি প্রশাসন।