এই সিদ্ধান্ত ইউরোপকে শক্তিশালী করার পথে বড় পদক্ষেপ: জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তার দেশকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) আনুষ্ঠানিক সদস্য প্রার্থী করা ইউরোপকে শক্তিশালী করার পথে এক বড় পদক্ষেপ। তিনি বলেন, এমন মুহূর্তে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যখন ইউরোপের স্বাধীনতা এবং ঐক্যের পরীক্ষা নিচ্ছে রাশিয়া।
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর চার মাস পূর্ণ হয়েছে শুক্রবার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের মাটিতে সবচেয়ে যুদ্ধ এই আগ্রাসন। এতে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু ছাড়াও লাখ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। বহু শহর পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তুপে। বিশ্বজুড়ে জ্বালানি ও খাদ্য সংকট শুরুর নেপথ্যেও রয়েছে এই যুদ্ধ।
কিয়েভ দখল করে দ্রুত বিজয় অর্জনে ব্যর্থ হয়ে রাশিয়া এখন পূর্ব ইউরোপের নিয়ন্ত্রণে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। সেখানে তীব্র লড়াই চললেও যুদ্ধ অবসানের কোনও ইঙ্গিত মিলছে না। ইউরোপের অন্য অংশে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আগ্রাসন শুরুর কয়েক দিনের মাথায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার আবেদন জানায় ইউক্রেন। বৃহস্পতিবার ইইউ নেতারা ব্রাসেলসে সমবেত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউক্রেনকে ইইউ সদস্য প্রার্থীর মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এরপরই প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ৩১ বছর আগে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ইউক্রেনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই সিদ্ধান্ত।
জেলেনস্কি বলেন, ‘তবে এই সিদ্ধান্ত শুধু ইউক্রেনের স্বার্থে নেওয়া হচ্ছে না। এটি ইউরোপকে শক্তিশালী করার জন্য সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ যা এখনই নেওয়া করা যেতে পারে, আমাদের সময়ে, এবং যখন রাশিয়ার যুদ্ধ আমাদের স্বাধীনতা এবং ঐক্য রক্ষা করার ক্ষমতা পরীক্ষা করছে’।
ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রধান চার্লস মাইকেল এই সিদ্ধান্তের পর এক টুইট বার্তায় লেখেন, ‘এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। যৌথভাবেই আমাদের ভবিষ্যত’।
কিয়েভ ইইউ সদস্য প্রার্থী হওয়ায় ক্ষুব্ধ হবে রাশিয়া। পশ্চিমাদের সঙ্গে ইউক্রেনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে আগে থেকেই উদ্বেগ জানিয়ে আসছে মস্কো।
নিজেদের সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে মস্কো। কিয়েভ এবং পশ্চিমারা বলছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উস্কানি ছাড়াই আগ্রাসন শুরু করেছেন।
ইইউ এর পূর্ণ সদস্য হতে এখনও ইউক্রেনকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। এতে কয়েক বছর পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। জেলেনস্কি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রাশিয়ার পরাজয় এবং পূর্ণ সদস্যপদ নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত বিশ্রাম নেবেন না তিনি।
এক ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা শত্রুকে পরাজিত করতে পারি, ইউক্রেন পুনর্গঠন করতে পারি, ইইউতে যোগ দিতে পারি এবং তারপরে আমরা বিশ্রাম নিতে পারি’।
সূত্র: রয়টার্স