প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফল ‘ড্র’ হলে কে যাবেন হোয়াইট হাউসে, কী বলছে নিয়ম?

0

২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন মঙ্গলবার। ভোটগ্রহণ শেষে বিশ্বের নজর থাকবে হোয়াইট হাউসের পরবর্তী বাসিন্দার দিকে। যদি কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ফলাফলে কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যবধান না থাকে এবং ভোটের সংখ্যা ২৬৯-এ আটকে যায়, তবে এমন পরিস্থিতি ‘ত্রিশঙ্কু’ অর্থাৎ অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে। এরকম হলে- প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রক্রিয়া আইনসভায় (নিম্নকক্ষ) চলে যাবে। নিম্নকক্ষ ভোটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করবে, আর ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবে সিনেট।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কে জয়ী হবেন, তা ভোটারদের সরাসরি ভোটে (পপুলার ভোট) নির্ধারিত হয় না। কেন্দ্রীয় পর্যায়ে (ফেডারেল) নির্বাচনি লড়াইয়ের বদলে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয় এক একটি প্রদেশের নির্বাচনি লড়াইয়ের মাধ্যমে। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি প্রদেশের একটিতে জয়ী হওয়ার অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রার্থী সেই প্রদেশের সব কটি ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ ভোট পেয়ে যাবেন। যেমন, টেক্সাসে ৪০ জন ইলেক্টর রয়েছেন। কমলা হ্যারিস বা ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি এই প্রদেশে বেশি পপুলার ভোট পাবেন, তিনিই প্রদেশের ৪০ জন ইলেক্টরকে জিতে নেবেন। ইলেক্টোরাল কলেজের মোট ভোটের সংখ্যা ৫৩৮। দুটি প্রদেশ বাদে বাকি সবগুলি রাজ্যের ইলেক্টোরাল ভোট যোগ করলে যে প্রার্থী ২৭০টি বা তারও বেশি ভোট পাবেন, তিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন।

অতীতে এমন নজির প্রায় না থাকলেও ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে দুই প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটই ২৬৯-এ এসে থামতে পারে। যদি কমলা উইসকনসিন, মিশিগান, পেনসিলভেনিয়ার মতো দোদুল্যমান প্রদেশ বা ‘সুইং স্টেটে’ জয়ী হন, আর ট্রাম্প জয়ী হন জর্জিয়া, অ্যারিজোনা, নেভাদা, নর্থ ক্যারোলাইনা এবং একটি ইলেক্টোরাল কলেজবিশিষ্ট নেব্রাসকায়, তবে দুজনেই ২৬৯-এ এসে থেমে যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বাইডেনের উত্তরসূরি বেছে নেওয়ার দায়িত্ব যাবে আইনসভার কাছে। আইনসভার নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টিটিভস ভোটের মাধ্যমে বেছে নেবে হবু প্রেসিডেন্টকে। আর হবু ভাইস প্রেসিডেন্টকে বেছে নেবে উচ্চকক্ষ সিনেট।

কীভাবে হবে এই ভোট?

‘ত্রিশঙ্কু’ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি প্রদেশের মধ্যে অন্তত ২৬টির সমর্থন আদায় করতে হবে ভাবী প্রেসিডেন্টকে। প্রতিটি প্রদেশ একটি করে ভোট দিতে পারবে। অর্থাৎ, ৫০টি ভোটের সিংহভাগ যিনি পাবেন, তিনিই প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হবেন। এই ভোটে অবশ্য একটি ‘অসাম্য’ রয়েছে বলে অনেকের অভিযোগ। কারণ, এ ক্ষেত্রে ক্যালিফর্নিয়ার মতো জনবহুল প্রদেশ আর উওমিংয়ের মতো কম জনসংখ্যার প্রদেশের ভোটাধিকার সমান। যে হেতু হাউস অব রিপ্রেজেন্টিটিভসে এখন রিপাবলিকানেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, তাই ‘টাইব্রেকার’ ভোটে অতিরিক্ত সুবিধা পেতে পারেন ট্রাম্প।

১৮০০ সালে দুই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী টমাস জেফারসন এবং জন অ্যাডামসের প্রতিদ্বন্দ্বিতা অমীমাংসিত রয়ে গিয়েছিল। তার পরেই এই বিষয়ে আইন আনার কথা ভাবা হয়। কিন্তু বর্তমানে এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে দু’পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছতে পারবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য অনেকেরই সন্দেহ রয়েছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com