ন্যাটোর ঐতিহাসিক মুহূর্ত নষ্ট করেছে তুরস্ক?
ফিনল্যান্ড ও সুইডেন যখন ইঙ্গিত দেয় তারা ন্যাটোয় যোগদানের কথা ভাবছে, তখন পশ্চিমা সামরিক জোটের ধারণা ছিল মস্কো এর কড়া প্রতিক্রিয়া জানাবে, জোটভুক্ত কেউ নয়।
গত শনিবার ন্যাটোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে যখন ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বিগত কয়েক দশকের মধ্যে ইউরোপীয় নিরাপত্তায় সবচেয়ে বড় বদল উদযাপন করতে বসেছিল তখন পরিবেশটাই পাল্টে দেন তুরস্কের অংশগ্রহণকারী।
সেই সন্ধ্যায় বার্লিনে উপস্থিত এক কূটনীতিক জানান, তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু ‘সংকট মুডে ছিলেন’। তার একদিন আগে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান যখন বলেন তিনি ফিনল্যান্ড কিংবা সুইডেন কারোর সদস্য পদেই সমর্থন দেবেন না তখন অন্য ন্যাটো সদস্যরা হতভম্ব হয়ে পড়ে।
কোন শর্তে তুরস্ক দেশ দুইটির জোট অন্তর্ভুক্তি অনুমোদন করবে তা কাভুসোগলু স্পষ্ট করেন। এছাড়া তিনি সুইডেনের অ্যান লিন্ডের প্রতি চড়া সুরে কথা বলেন। ন্যাটোর অন্তত তিন কূটনীতিক এই ঘটনাকে ‘বিব্রতকর’ কূটনৈতিক প্রটোকল ভঙ্গ বলেও আখ্যা দেন।
আরেক ন্যাটো কূটনীতিক বলেন, ‘আমাদের জন্য এটি ছিল এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, তবুও কাভুসোগলু বলেছিলেন যে তিনি লিন্ডের ‘নারীবাদী নীতি’তে বিরক্ত হয়েছেন, বেশি নাটক নিয়ে এসেছেন।’ তিনি মূলত বার্লিনে জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উত্তেজক পরিস্থিতির বর্ণনা করছিলেন। এসম পরিস্থিতি ঠাণ্ডা করতে অনেকেই নিরব থাকেন।
ওই কূটনীতিক বলেন, ‘আমরা বোঝার চেষ্টা করছিলাম আমাদের তুর্কি সহকর্মী কী চায় – আপনি জানেন, সত্যিই চেয়েছিলেন। এটা ছিল বিব্রতকর’।
কাছে আঙ্কারার মূল দাবি হচ্ছে নরডিক দেশ দুইটি তাদের এলাকায় কুর্দি সশস্ত্র গ্রুপগুলোর উপস্থিতি বন্ধ করুক এবং তুরস্কের কাছে অস্ত্র বিক্রির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করুক।
তুরস্কের এক কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে কাভুসোগলু সম্মানেই সঙ্গে তুরস্কের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। লিন্ডের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বেলন সেটা ছিল সুইডেনের নারীবাদী পররাষ্ট্র নীতির বিরোধিতা। ওই সূত্রটির বক্তব্য, ‘তার মন্তব্য সুইডেনের ন্যাটোয় যোগদান করতে চাওয়াকে সহায়তা করছে না, অন্যদিকে ফিনল্যান্ডের বিবৃতিগুলো সাবধানে তৈরি করা।’ তবে এই বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণে উদ্বুদ্ধ হয়ে উভয় দেশই বুধবার ন্যাটোতে যোগদানের আবেদন করেছে। রাশিয়া বলে আসছে ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর অন্যতম কারণ ছিল ন্যাটো সম্প্রসারণের ফলে তৈরি হওয়া হুমকি মোকাবিলা করা।
যদিও রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ বলেছেনফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের ন্যাটোয় যোগদান একটি “গুরুতর ভুল” যার “সুদূরপ্রসারী পরিণতি” রয়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ১৬ মে বলেছেন, তাদের ন্যাটোতে যোগদা রাশিয়ার জন্য কোনও সরাসরি হুমকি নয়।
সূত্র: রয়টার্স