‘আমরা ইভিএম এর ব্যবহার নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছি।
ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের সিদ্ধান্ত থেকে নির্বাচন কমিশনকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন, ঢাকা উত্তর সিটির বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। তিনি বলেন, ‘আমরা ইভিএম এর ব্যবহার নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছি। আমরা প্রযুক্তি বিরোধী নই, কিন্তু ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে এ প্রযুক্তি ব্যবহার নিয়ে আমাদের আশঙ্কা ও আপত্তি রয়েছে। কারণ, নির্বাচন কমিশন নিজেরাই স্বীকার করেছেন ইভিএম ব্যবহার করার মতো নিজস্ব লোকবল তাদের নেই, এ প্রযুক্তি ব্যবহার করতে তাদের লোক ধার করতে হচ্ছে। তাছাড়া ইভিএম ব্যবহার করতে দেশের মানুষ এখনো প্রস্তুত নয়।’ বৃহস্পতিবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পান্থপথ, পশ্চিম তেজতুরি পাড়া, ইন্দিরা রোডে নির্বাচনী গণসংযোগকালে এসব কথা বলেন তিনি।
ধানের শীষের প্রার্থী বলনে, ‘ঢাকা সিটির ৩০ লাখ ভোটার ইভিএম এর রপ্ত করতে পারে নি। তাছাড়া এটি একটি ত্রুটিপূর্ণ পদ্ধতি। ইভিএম দিয়ে ভোট চুরি করা যায়।
ইভিএম পদ্ধতি বাতিল করে ব্যালটেই ভোট দেওয়ার দাবি করছি। নির্বাচনে ইসির অংশীজন হচ্ছে রাজনৈতিক দল ও ভোটাররা। দেশের বেশিভাগ রাজনৈতিক দল ও ভোটাররা ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে, কিন্তু ইসি এখনো ইভিএম ব্যবহার না করার বিষয়ে আমাদের কিছুই জানায়নি। নির্বাচন কমিশনকে বলবো, দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ভোটারদের ইচ্ছার কথা বিবেচনায় এনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসুন।’ এর আগে সকালে বসুন্ধরা সিটির সামনে থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। সঙ্গে ছিলেন হাজার হাজার নেতাকর্মী ও স্থানীয় মানুষ।
এসময় মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল সাধারণ মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং নগর উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে ধানের শীর্ষ প্রতীকে ভোট চান। দুপুরের পর তিনি মনিপুড়ি পাড়া, আগারগাঁও, বেতার রোড, ৬০ ফিট রোড, দক্ষিন পীরেরবাগ, আমতলায় গণসংযোগ করেন। গণসংযোগের সময় বিএনপির মেয়র প্রার্থী বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ সকালে এক রকম আর বিকেলে আরেক রূপ ধারন করে। সকালে প্রচারণা চালাতে পারলেও বিকেলে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিল প্রার্থীসহ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়। গত ১৫ই জানুয়ারি বিকেলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীর প্রচারণায় হামলা চালিয়ে ১২জনকে আহত করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ধানের শীষের গণজোয়ার দেখে ভীত হয়ে হামলা ও হুমকি দিচ্ছে। যেন ভোটাররা ৩০ তারিখ কেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রয়োগ করতে না পারে।
তিনি আরো বলেন, সরকার পূজার দিন নির্বাচন দিয়ে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দিয়েছে। তাই তাদের উচিৎ ওইদিন ধানের শীষে ভোট দিয়ে তাদের ক্ষোভকে প্রশমিত করা।
তার গণসংযোগে জনতার ঢল নেমেছে। প্রচার মিছিলে অংশ নিয়েছেন অনেক সাধারণ মানুষ। দেখা গেছে অনেক বৃদ্ধকে। তাবিথ আউয়াল রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা উৎসুক জনতার সঙ্গে হাত মেলান। কুশল বিনিময় করে ভোট প্রার্থনা করেন। বয়োজ্যেষ্ঠরা তার মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। পথে পথে রিক্সাযাত্রী, দোকানি, পথচারীদের ভালোবাসয় সিক্ত হন তিনি। তার প্রচারণায় মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বাড়ছে। নেতা-কর্মীরা খালেদা জিয়ার মুক্তির স্লোগান এবং ধানের শীষের পক্ষে ভোট চায়। সকালে গণসংযোগের শুরুতে বিভিন্ন রংয়ে সেজে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সমর্থকরা। তাদের হাতে ছিল খালেদা জিয়ার মুক্তির প্ল্যাকার্ড। গণসংযোগ শেষ করার প্রাক্কালে তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘গণসংযোগে প্রতিটি এলাকায় আমি জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। জনগণও ৩০ তারিখ ধানের শীষে ভোট দিয়ে তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চায়। আমিও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি- পার্ক, খেলার মাঠ যেগুলো দখল হয়ে গেছে, সেগুলো বেখল করবো। ডেঙ্গু মশার বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেব।’
গণসংযোগে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, নিপুন রায় চৌধুরী, ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তরের সহ সভাপতি বজলুল বাসিদ আঞ্জু, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা সুলতানা আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, সিনিয়র সহ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সহ-সভাপতি গোলাম সরোয়ার, কমিশনার প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেনসহ বিএনপি ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।