আঘাত করলে চীনকে ছেড়ে দেবে না ভারত: কঠোর হুঁশিয়ারি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর
যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে চীনের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। লাদাখ সীমান্ত নিয়ে বিবাদের আবহে বেইজিংকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি জানান, ভারতকে আঘাত করলে ভারতও ছেড়ে কথা বলবে না। সানফ্রানসিস্কোর মাটিতে দাঁড়িয়ে রাজনাথ বার্তা দিলেন যুক্তরাষ্ট্রকেও।
সম্প্রতি ওয়াশিংটনে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যে ‘টু প্লাস টু’ বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন রাজনাথ। গিয়েছিলেন হাওয়াইয়ে আমেরিকা ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের সদর দফতরেও। এর পরে সানফ্রানসিস্কোতে ভারতীয় কনসুলেটের একটি অনুষ্ঠানে যান তিনি। ওই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই লাদাখ সীমান্তে ভারত-চীন বিবাদের প্রসঙ্গ তুললেন রাজনাথ। কথা প্রসঙ্গে ভারতীয় সেনার সাহসিকতার প্রভূত প্রশংসাও করলেন তিনি। বললেন, ‘ভারতীয় সেনারা কী করেছিল, সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছিল, তা প্রকাশ্যে বলতে পারব না। তবে নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, চীনকে আমরা এই বার্তা দিতে সক্ষম হয়েছি যে, ভারত ছেড়ে কথা বলবে না। ভারতের ক্ষতি করলে ভারত তার মোকাবিলা করবে।’
গত ২০২০ সালে সীমান্ত বিবাদের আবহে পূর্ব লাদাখের গলওয়ানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়েছিল ভারত ও চীন সেনা। ওই সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়েছিল। তবে কত জন চীন সেনার প্রাণ গিয়েছিল, তা এখনো সরকারিভাবে প্রকাশ করেনি বেইজিং। তারপর থেকে সীমান্তে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে অন্তত ১৫ বার সামরিক আলোচনা হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। প্যাংগং হ্রদ এবং গোগরা এলাকা থেকে সেনা পেছানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেইজিং ও নয়াদিল্লি। কিন্তু তার পরেও সীমান্তে চাপা উত্তেজনা রয়ে গিয়েছে। রাজনাথ আরো বলেন, ‘ভারতের ভাবমূর্তি অনেক বদলে গিয়েছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্বের প্রথম তিন অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশের মধ্যে একটি হয়ে উঠবে ভারত।’
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের আবহে সম্প্রতি ভারতের সাথে আমেরিকার সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। সম্প্রতি মস্কোর সাথে নয়াদিল্লির তেলের চুক্তি নিয়েও ক্ষোভপ্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন। এই আবহে আমেরিকার সাথে ‘টু প্লাস টু’ বৈঠকে অংশ নিয়েছেন রাজনাথ ও দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
ভারতীয় কনসুলেটের অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে প্রচ্ছন্ন বার্তা দিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বললেন, ‘ভারতের সাথে কোনো দেশের সম্পর্ক ভাল হলে তার অর্থ এই নয় যে, অন্য দেশের সাথে সম্পর্কে অবনতি হবে। ভারত কখনোই এই ধরনের কূটনীতিতে বিশ্বাস করে না।’
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা