জনগণকে নিয়ে ভোটের দিন যথাযথভাবে প্রতিবাদ করতে হবে, যাতে কোনো চোরা ভোট এবার না পড়ে।
সুষ্ঠু ভোট নিয়ে আবারও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান এমন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না, যেটা দেখে জনগণ আশ্বস্ত হবেন যে তাঁরা নিজেদের ভোট নিজেরা দিতে পারবেন।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও তেজগাঁও এলাকায় জনসংযোগকালে তাবিথ আউয়াল সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি আশঙ্কা করছি, এই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না এবং সুষ্ঠু না হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন নিজেই উদ্যোগী ভূমিকা পালন করছে। অনেক বিতর্কিত কথাবার্তা বলছেন।’
তাবিথ আউয়াল জানান, বিএনপিসমর্থিত প্রার্থীদের নানা রকম হুমকি দেওয়া হচ্ছে, কাউন্সিলর প্রার্থীদের আটক করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, অনেক প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা হয়েছে, মাইক ভেঙে ফেলা হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।
তাবিথ বলেন, ‘আমি মেয়র প্রার্থী, আমার গণসংযোগের সময় প্রতিপক্ষ মিছিল নিয়ে, স্লোগান দিয়ে, ইটপাটকেল ছুড়ে আমাদের থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি জানতে চাই, আমাদের যে ম্যাজিস্ট্রেটরা আছেন নির্বাচন কমিশনের, তাঁরা কোথায় আছেন?’
তাবিথ আউয়াল সকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতাকে নিয়ে রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। সেখান থেকে বিজয় সরণির কলমিলতা বাজারের উত্তর পাশ হয়ে তেজকুনিপাড়া, রেলওয়ে মার্কেট, বিজ্ঞান কলেজ ও গির্জার পাশ হয়ে কারওয়ান বাজার এলাকায় গণসংযোগ করেন।
এ সময় তাবিথ আউয়ালকে ঘিরে শত শত নেতা-কর্মী খালেদা জিয়া ও ধানের শীষের স্লোগান দেন। কারওয়ান বাজারের চারপাশ ঘুরে তিনি তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডে যান। সেখানে তিনি শ্রমিকদের কাছে ভোট চান।
বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়ন কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘আমরা একটা নেক উদ্দেশ্য নিয়ে গণতন্ত্র রক্ষা করার জন্য, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে পাওয়ার জন্য এবং সরকার ও সব সরকারি সংস্থাকে জবাবদিহির মধ্যে রাখার আন্দোলন করছি। এ আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে আপনারা অবশ্যই আমাকে এবং ধানের সব প্রার্থীকে ৩০ জানুয়ারি জয়যুক্ত করবেন।’
সেখানে তাবিথ আউয়াল জানান, এবার ভোটের দিনের ব্যাপারে তারা সতর্ক রয়েছেন। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ভোটের দিনের বড় ভিকটিম হলাম আমি। ২০১৫ সালে প্রচারণা শেষে ভোটের দিন একটা পাল্টা চিত্র দেখেছিলাম। এবার আমাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে যে, কোনো ভোট যেন ৩০ তারিখের (জানুয়ারি) এক মুহূর্তও আগে দেওয়া না হয়। ২৯ তারিখ রাতে যেন কোনো ভোট না পড়ে। জনগণকে নিয়ে ভোটের দিন যথাযথভাবে প্রতিবাদ করতে হবে, যাতে কোনো চোরা ভোট এবার না পড়ে। জনগণ নিজের ভোট নিজে দেবে, জনশক্তিতে আমরা বিজয়ী হব।’
বিএনপির প্রার্থীদের এজেন্টরা কেন্দ্রে যেতে পারেন না, এবার কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘আমাদের এজেন্টরা অবশ্যই কেন্দ্রে যাবেন। তবে তাঁদের যদি ধাক্কা মেরে বের করে দেওয়া হয় বা আগের দিন রাতে নির্বাচন কমিশন এজেন্টদের তালিকা ফাঁস করে পুলিশের মামলা বা হামলা জড়িয়ে দেয়, তো কী করা যাবে। আশা করব, নির্বাচন কমিশন যেন এবার তা না করেন।’
বিএনপির প্রার্থীর সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, সাইফুল আলম, আবদুল কাদের ভূঁইয়া প্রমুখ।