গণমাধ্যমকর্মী চাকরির শর্তাবলি আইনে সাংবাদিক পরিচয় মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সাংবাদিক নেতাদের একাংশ।
তারা বলছেন, আইনটিতে কোথাও সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় নেই। সাংবাদিকদের মানসম্মান খর্ব করা ও লাঞ্ছিত করার চেষ্টা হচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, আইসিটি অ্যাক্ট, গণমাধ্যম সুরক্ষা আইন করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের নিয়ন্ত্রণ ও বশীভূতকরণের এসব আইন সাংবাদিকেরা মেনে নিতে পারে না। এ ধরনের আইনের অধীনে সাংবাদিকেরা চলতে পারে না।
বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে’র একাংশের যৌথ আয়োজনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের মান-মর্যাদা ও স্বার্থবিরোধী ‘গণমাধ্যমকর্মী চাকরির শর্তাবলি’ আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, আইনটি অনেক দিন হয়ে গেলো। কিন্তু কোনো প্রতিবাদ দেখি না। একটি অংশের প্রতিবাদ আশাও করি না। ২০১৭ সালে আইনটির খসড়া করা হয়, তখনো এটি নিয়ে তারা কথা বলেনি, সমর্থন করেছে। আইনটিতে ইউনিয়ন করার অধিকারও হনন করা হয়েছে। সাংবাদিকবিরোধী আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি কবি হাসান হাবিব বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনার নামে প্রহসন করা হয়েছে এ আইনের মাধ্যমে। আমরা এ আইন বাতিল চাই।
আইনটিতে সাংবাদিক পরিচয় মুছে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, এ অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, আমাদের যে শেষ পরিচয় ছিল ‘সাংবাদিক’, সেটাও মুছে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। আমাদের গণমাধ্যমকর্মী বানিয়ে দিয়েছে।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ গণমাধ্যমবিরোধী কাজ করেছে, এখনো তা চলছে। দেশে বেশকিছু গণমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে বর্তমান সরকার। যে আইনটি করা হয়েছে সেখানে কোথাও আমাদের সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় নেই।
বিএফইউজে সভাপতি এম আব্দুল্লাহ বলেন, সাংবাদিকদের যেন চাকরিচ্যুত করা যায়, কণ্ঠরোধ করা যায় সে কারণেই এ আইন করেছে সরকার। সংযোজন বা সংশোধন নয়, আমরা এ আইন বাতিল চাই।
বিএফইউজে মহাসচিব নুরুল আমিন রুকন বলেন, রাজপথে আমরা আবার দাঁড়িয়েছি আমাদের পেশা খর্ব করার প্রতিবাদে। গণমাধ্যমকর্মী আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের মানসম্মান খর্ব করা হয়েছে। আমাদের লাঞ্ছিত করার চেষ্টা হচ্ছে। আমাদের কর্মঘণ্টাকে বাড়িয়ে দিয়ে লাগাম টানার চেষ্টা করা হয়েছে। সাংবাদিক সমাজ কোনো অন্যায় মেনে নেয় না। আমরা এ আইন পাস হতে দেবো না। পাস হলে আন্দোলনের মাধ্যমে তা বাতিল করতে বাধ্য করাবো।
বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ফুরকান, যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান সাজু, জাহাঙ্গীর আলম ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেন প্রমুখ।