ঢাকা-টরন্টো ফ্লাইট চালু করা হয়েছে ‘বেগমপাড়ায়’ অর্থ পাচারের জন্য: মির্জা ফখরুল

0

ঢাকা থেকে টরেন্টো সরাসরি ফ্লাইট চালু করা হয়েছে বেগমপাড়ায় বস্তা ও ট্রাংকে করে অর্থ পাচারের জন্য বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (২৮ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে আব্দুস সালাম হ‌লে  এ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ(এ্যাব) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভর্তুকি দিয়ে চালু করা এই ফ্লাইটের একটা ট্রায়াল ফ্লাইট করা হয়েছে, শিগগরিই সেটা নিয়মিত চালু হবে। বিমানের যারা কর্মকর্তা আছেন তারা বলছেন, ‘এই ফ্লাইট কেন চালু করা হলো আমরা সেটা জানিনা। এটা কোনোভাবেই ভায়াবল ফ্লাইট নয়’। এটা করা হয়েছে একটা কারণে। বেগম পাড়াতে যারা যাতায়াত করেন তাদের  সুবিধার জন্য। অথবা সরাসরি স্যুটকেসে ও ট্রাংকে ভরে টাকা পাচারের জন্য।

সংসদে জনগণের দুর্ভোগ, সরকারের দূর্ণীতি নিয়ে কোন প্রশ্ন ওঠেনা। কারণ এই সংসদে জনগণের কোন প্রতিনিধিত্ব নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন,’আমরা খুব ভয়াবহ একটা অবস্থার মধ্যে আছি। যে পরিমাণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দুর্নীতি করা হচ্ছে সেটার সঠিক পরিসংখ্যান আৎকে ওঠার মতো। একটা দেশ, যে দেশের মানুষ এত কষ্ট করে, দিনরাত পরিশ্রম করে তারা উপার্জন করছে এবং দেশটা গড়ছে সেই দেশের শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, যে এসবের কোনো জবাবদিহিতা নেই। সংসদে এসব নিয়ে কোন প্রশ্ন ওঠেনা। কারণ এই সংসদে জনগণের প্রতিনিধিত্ব নেই।

সম্প্রতি পুলিশের এক অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন,’তাদের নেত্রী নাকি? এক নম্বর মুক্তিযোদ্ধা।’ এমন মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। ডিএমপি কমিশনারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগই শেষ নয়। এ ধরনের মন্তব্যের জন্য আপনাদের হিসাব দিতে হবে। কি করে একজন পুলিশ কমিশনার এ ধরনের কথা বলেছেন সেটা শুনে আমরা বিস্মিত হয়েছি। সরকারি কর্মকর্তা হয়ে তারা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক, অশালীন এবং শিষ্টাচারবহির্ভূত কথা বলতে পারেন সেটা আমরা চিন্তাও করতে পারছিনা। সরকারকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে আওয়ামী লীগ! সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে যাদের রাজনৈতিক কথাবার্তা বলা কন্ডাক্টের বাইরে, সেখানে তারা তিন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও স্বাধীনতার ঘোষকের স্ত্রী এবং যিনি চল্লিশ বছর ধরে রাজনীতি করছেন। গণতন্ত্রের জন্য গৃহবন্দি হয়ে আছেন তার সম্পর্কে অশালীন উক্তি করতে পারেন এটা আমরা ভাবতেও পারি না।

ডিএমপি কমিশনারের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে ফখরুল বলেন, এ ধরনের দায়িত্বশীল উচ্চ শিক্ষিত মানুষের মুখ থেকে যখন এমন কথাবার্তা আসে তখন এই জাতি এবং সরকার সম্পর্কে এবং তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে আমাদের একটা ধারণা তৈরি হয়। আপনারা মনে করবেন না যে আওয়ামী লীগই শেষ। অবশ্যই পরিবর্তন হবে। সেই পরিবর্তনে এই জবাবদিহিতাগুলো আপনাদের করতে হবে।

সরকারি কর্মকর্তাদের এমন আচরণেই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর লজ্জাজনক নিষেধাজ্ঞা আসে উল্লেখ করে মহাসচিব আরও বলেন, সরকারের বেআইনি হুকুম তালিম করতে গিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানকে আপনারা নিষেধাজ্ঞার আওতায় নিয়ে এসেছেন। বাংলাদেশের জনগণ এটাতে লজ্জিত হয়েছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জা। আমাদের একটা প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সেটাও মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে।

এ্যাবের আয়োজনে আওয়ামিলীগ সরকারের অপশাসন,দূর্নীতি ও দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি শীর্ষক আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন প্রকৌশলী আ ন হ আখতার হোসাইন পিইঞ্জ। বিষয় বস্তুর ওপর মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সহসভাপতি প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল ইসলাম রিজু।

এছাড়াও পেশাজীবীদের এই সংগঠনে বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা বক্তব্য প্রদান করেন। অন্যান্য বক্তারা বলেন, আমাদেরও লজ্জা হয়, আমরা কেন আন্দোলন-সংগ্রাম করে কেন আমাদের নেতৃকে মুক্ত করতে পারছি না। আমরা শুধু একজন রেফারির বাশির অপেক্ষায় আছি। তিনি বাশি দেবেন আর আমরা আন্দোলন করে আমাদের নেতৃকে বের করে নিয়ে আসব। তারপর নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে একটি নির্বাচনে ব্যবস্থা করব। এই নির্বাচনে যেই ক্ষমতায় আসুক আমরা তা মাথা পেতে নেব।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com