ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্য মাস্তানদের মতো: রিজভী

0

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্য পারা-মহল্লার মাস্তানদের মতো বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

ডিএমপি কমিশনারের কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘শুনেছি যে ওনার (ডিএমপি কমিশনার) এক্সটেনশন হয়েছে। আবার পরবর্তীতে এক্সটেনশন নেয়ার জন্যই কি? শেখ হাসিনাকে খুশি করার জন্য একথা গুলো বলেছেন? আমলাদেরকে বলা হয় একটি রাষ্ট্রের স্টীল ফ্রেম। সেই স্টীল ফ্রেম আজকে দেখছি একেবারে গদগদ হয়ে গুনগান করছেন একটি অবৈধ সরকারের। আর সেটি করতে গিয়ে সভ্যতা, সুরুচি সমস্ত কিছুকে জলাঞ্জলি দিয়ে বখাটে মাস্তানরা যেভাবে কথা বলে, সেভাবেই পুলিশের একজন বড় কর্মকর্তার মুখ থেকে যদি এমন কথা বের হয়। তাহলে এটা কত বড় নেক্কারজনক হতে পারে।

রবিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘একটি রাষ্ট্রের চরিত্র কেমন, তার চেহারা কেমন? এটা যদি আপনারা বুঝতে চান। তাহলে দেখতে হবে ওই রাষ্ট্রের কর্মরত অফিসাররা কেমন? তাদের বৈশিষ্ট কেমন? এটা দেখলেই রাষ্ট্রের চরিত্রটা বোঝা যায়। আজকে দেখুন বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের কথাবার্তা। তাদের আচার-আচরণেই বুঝতে পারবেন এই রাষ্ট্র কি ভয়ঙ্কর রাষ্ট্র!

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘দেশের সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সরকারের একজন কর্মকর্তা যে কথা বলেছেন, গতকাল এটা আমার কাছে মনে হয়েছে। এই রাষ্ট্র আর রাষ্ট্র নেই। এই রাষ্ট্র ধ্বংস হয়ে গেছে। যেখানে তার নিরপেক্ষ থাকার কথা, চুপচাপ থাকার কথা।

রিজভী বলেন, ‘যিনি স্বাধীনতার ঘোষকের সহধর্মীনি। যিনি এ দেশের বরেণ্য মুক্তিযোদ্ধা সেক্টর কমান্ডারের সহধর্মীনি। সেই নেত্রী সম্পর্কে যে অশ্লীল, অসভ্য কথাবার্তা বলেছেন ডিএমপি কমিশনার। আমার কাছে মনে হয়েছে, শেখ হাসিনা তিনি যেমন তার বিরোধী শক্তিকে আক্রমন করতে কোন ধরনের সভ্যতার যে পরিসীমা সেটা যেমন মানেন না। ঠিক একই ভাষায় কথা বলেছেন ডিএমপি কমিশনার। এটা হাছান মাহমুদ, ওবায়দুল কাদের বললে এক কথা ছিল। এই কমিশনার তো বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়েও চাকরি করেছেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন যা করছে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রশংসনীয়। গুম, খুনের শিকার পরিবারের সদস্যদেরকে সহায়তা করছে। গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করছে। এর নেতৃত্বে রয়েছেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। যিনি তার পিতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মানবিক কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে তার নির্দেশে মহামারি করোনাকালে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন যা করেছে তা দৃষ্টান্তমূলক। আসলে রাজনীতি হওয়া উচিত মানবকল্যাণে। সেটাই করে যাচ্ছে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন।

বিগত আন্দোলন সংগ্রামে গুম, খুনের শিকার পরিবারের সদস্যদের বাৎসরিক শিক্ষা বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ)।

সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। জেডআরএফ‘র রিহ্যাবিলিটেশন কমিটির সদস্য সচিব ডা. পারভেজ রেজা কাকনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রিহ্যাবিলিটেশন কমিটির আহ্বায়ক ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ প্রমুখ।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেডআরএফ‘র কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম, সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী, অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, কৃষিবিদ শফিউল আলম দিদার, একেএম জহিরুল ইসলাম, শামীমা রহিম, বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব, শফিকুল ইসলাম, আসিফ হোসেন রচি প্রমুখ।

প্রসঙ্গ, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবির বিষয়ে ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেছেন ‘একটি পার্টির ( বিএনপি) খুব সিনিয়র এক নেতা বলা শুরু করেছেন, তাদের নেত্রী নাকি এক নম্বর মুক্তিযোদ্ধা। এর চেয়ে হাস্যকর…। যাকে তার স্বামী পরিত্যক্ত করে বলেছিলেন, পাকিস্তানের ওখানে কী করছ…। আর এখন সে নাকি বড় মুক্তিযোদ্ধা। আর না বলি।’ এসব কথা উল্লেখ করেন তিনি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com