দেশে গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্রকে পুরোপুরি সমাহিত করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, আজ ক্ষমতা থেকে নেমে আসুন লেভেল প্লেয়িং তৈরি করুন। একটা নিরপেক্ষ সরকার বসিয়ে দেন। নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নির্বাচন করুক। সেই নির্বাচনে যদি আপনারা জিতেন মাথা পেতে নেব। কিন্তু আপনারা জানেন সেটা কোনোদিন হবে না। সেজন্য কৌশল করে বিভিন্নভাবে মানুষকে বোকা বানিয়ে আপনারা একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করছেন। এটা কখনই জনগণ মেনে নেবে না।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, নির্বাচন দিচ্ছেন, নির্বাচন নির্বাচন খেলা করছেন আমরা জানি। তারপরও আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি। কেন যাচ্ছি খুব পরিষ্কার করে বলেছি, গণতন্ত্রের মুক্তি ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির সংগ্রামের আন্দোলনের হাতিয়ার হিসেবে আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্রকে পুরোপুরি সমাহিত করা হয়েছে। আজ আপনারা উৎসব পালন করছেন, খুব ভালো কথা। কিন্তু দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে উৎসব পালন করছেন। এ উৎসবে দেশের মানুষের হৃদয় কতটা থাকবে সেটাই দেখার বিষয়। দেশের মানুষকে অস্বস্তিতে রেখে এ উৎসব কতটুকু ফলপ্রসূ হবে সেটা ভেবে দেখতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ওবায়দুল কাদের মন্ত্রী, অত্যন্ত প্রভাবশালী মানুষ, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামও করেছেন অনেকদিন। অথচ তিনি বলেছেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এমন কোনো অসুস্থ নন যে তাকে চিকিৎসার জন্য বাইরে পাঠাতে হবে।’ এই অন্যায়, এই ধরনের কথা আপনার কাছ থেকে আশা করি না। সত্যিকার একজন রাজনৈতিক নেত্রী দেশের মানুষ যাকে ভালোবাসে তার চিকিৎসার জন্য আপনারা সঠিক কথা বলুন। এখন আর আদালতের কোর্টে বল নেই, বল আপনাদের কোর্টে। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের যে কোনো অবনতির দায়-দায়িত্ব সব আপনাদের। খালেদা জিয়ার যদি কোনো ক্ষতি হয় তাহলে সম্পূর্ণভাবে আপনাদেরই দায়ী থাকতে হবে।
খালেদা জিয়া কেন জামিন পাবেন না প্রশ্ন করে তিনি বলেন, যে মামলায় যে কোনো মানুষ জামিন পায়, উনি কেন জামিন পাবেন না। যদি ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, মহিউদ্দিন খান আলমগীর, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া জামিন পায় তাহলে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া কেন জামিন পাবেন না? কারণ দেশনেত্রী বাইরে থাকলে জনগণ আপনাদের মসনদ ভেঙে ফেলবে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় তাকে আটকে রেখেছেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বারবার বলছি, এখনও বলছি, সময় থাকতে দেয়ালের লিখন পড়ুন, মানুষের চোখের ভাষা দেখুন। মানুষের কথা বোঝার চেষ্টা করুন। এভাবে দখল করে, জোর করে দাবিয়ে রেখে, নির্যাতন-গুম করে চিরদিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। শেখ মুজিবুর রহমানের কথা আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই- দাবায়ে রাখতে পারবা না। বাংলার মানুষকে দাবায়ে রাখা যাবে না।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তাকে এই মুহূর্তে মুক্তি দিন। তার শরীর অত্যন্ত খারাপ। ডাক্তাররা বলেছেন, তার উচ্চতর সেন্টারে চিকিৎসা দরকার। বাংলাদেশে এমন কোনো সেন্টার নেই। তিনি বলেন, কোন ধরনের অমানবিকতা আপনারা দেখাচ্ছেন? এই নজির সৃষ্টি করবেন না।অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, রুহুল আমিন গাজী, এম আবদুল্লাহ, কাদের গনি চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম, ড্যাবের অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুস, রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, কৃষিবিদ হারুনুর রশীদ, শামীমুর রহমান শামীম প্রমুখ।