আমার মা-বোনেরা ধর্ষিত, নির্যাতিত হচ্ছে। কিন্তু এই সরকারের এমন দায়িত্বহীনতা কেন?
বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে ও সরকারকে ‘দায়বদ্ধতাহীন’ উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশে ধর্ষণ-নির্যাতনের তাণ্ডব চলবেই। কারণ তারা জনগণের দায়িত্ব নিতে রাজি না।’
তিনি বলেন, ‘আজ দেশের মানুষ মারা যাচ্ছে। আমার মা-বোনেরা ধর্ষিত, নির্যাতিত হচ্ছে। কিন্তু এই সরকারের এমন দায়িত্বহীনতা কেন? কারণ একটাই, এই সরকারের জনগণের কাছে কোনও দায়বদ্ধতা নাই, সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়।’
বুধবার (৮ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রীর ধর্ষণকারীর ফাঁসির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এই সরকার যদি আরও ক্ষমতায় থাকে এবং ধর্ষণ-নির্যাতনের তাণ্ডব যদি চলতেই থাকে তাহলে আগামীতে ধর্ষণ হলে সেই ধর্ষণের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলবে না। দেশে ধর্ষণের মামলা হচ্ছে । বছরের পর বছর তদন্ত চলছে। কিন্তু কোনও বিচার হচ্ছে না। বিচার হবে শুনতে শুনতে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছি, তারপরও বিচার পাচ্ছি না।’
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক সাগর-রুনিকে বাসায় ঢুকে হত্যা করা হয়েছে। এটার কোনও কূলকিনারা এখনও হয় নাই। অথচ বলা হয়, আমরা কি মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে পাহারা দেবো?’
নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘প্রতিবছর হত্যা-নির্যাতন-ধর্ষণ বাড়ছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত কেউই রেহাই পাচ্ছে না। নিরাপদ স্থানে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী ধর্ষিত হয় তখন অন্য মা-বাবাদের তো চিন্তা আসবেই। আর এ চিন্তা থেকে মুক্ত থাকতে নির্যাতন-ধর্ষণ থেকে বাঁচতেই তো আমাদের একজন সরকার দরকার। আর না হলে কীসের জন্য সরকার? আমি উপার্জন করি, আমি কর্ম করি, আমি খাই। আমার তো কোনও সরকার লাগে না। কিন্তু লাগে এ কারণে যে, যাতে আমি নিরাপদে চলাচল করতে পারি। নিরাপদে থাকতে পারি, আমার দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারি, দেশের অর্থনীতি, রাজনীতির উন্নতি করতে পারি। এ কারণেই আমাদের সরকার দরকার। কিন্তু আমার জীবনের নিরাপত্তায়ই যদি না থাকে তাহলে সরকারকে কি দরকার?’
তিনি বলেন, ‘আমি কাউকে উৎখাত করার কথা বলছি না। আমি বলছি যে গণতন্ত্রের জন্য, বৈষম্য দূর করার জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম দুর্ভাগ্য আমাদের, আমরা আজও সেটা অর্জন করতে পারিনি। আর সেটা তখনই সম্ভব যখন আমরা জনগণের নির্বাচিত সরকার পাবো।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ‘ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন’ মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রথমে বললেন যদি সবাই না চায় তাহলে ইভিএমে নির্বাচন হবে না। আর এখন বলছেন, নির্বাচন ইভিএমেই হবে। আগে ছাত্রলীগ করতেন, এখনও কি দলবাজি করছেন?’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি শ্যামা ওবায়েদের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সেকুলের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, কৃষক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার ও এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।